কবি আল মাহমুদের স্মরণে

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ০১:৫৩:৩৬ || পরিবর্তিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ০১:৫৩:৩৬

কবি আল মাহমুদের স্মরণে

নিউজ ডেস্ক: মানবতাবাদী ও বিশ্বাসী ক্ষণজন্মা কবি আল মাহমুদ। ১৯৩৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। লেখালেখি শুরু করেন ৫০'র দশকে। লেখালেখি শুরু করার পর তাকে পাঠকপ্রিয় একজন কবি হতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি।

কবি আল মাহমুদ। প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। তিনি একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

সরাসরি রাজনীতির সাথে যুক্ত না হলেও জীবনের শুরুর দিকে কবির লেখায় বামপন্থার প্রভাব ছিলো সুস্পষ্ট। জাসদের পত্রিকা দৈনিক গণকন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন এককালে। ১৯৭৪ সালে উক্ত পত্রিকার সম্পাদক থাকাবস্থাতেই তিনি গ্রেফতার হন।

এক সময় তিনি ধীরে ধীরে ইসলামের প্রতি অনুরাগী হন। আগের বামপন্থার প্রভাব থেকে তাঁর কবিতা, লেখালেখিও মুক্ত হয়। কবিকে যখন প্রশ্ন করা হলো যে, প্রাথমিক জীবনে কবি বামপন্থী চিন্তাধারার হলেও, সেখান থেকে সরে এসে কেন ইসলামী ভাবধারার দিকে ঝুঁকলেন? তখন তিনি তার জবাবে বলেন -"আমি যে পরিবারে জন্মেছি, সেই পরিবারের সবাই ছিলো খুবই ধর্মপ্রাণ লোক। তাদের মধ্যেই যে রয়েছে সত্যিকারের পথের ঠিকানা, কিভাবে যেনো এটা আমাকে দূর থেকে ইশারায় ডাকতো।"

সংক্ষিপ্ত জীবনী: কবির শিশুকাল কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাইস্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু হাইস্কুলের পড়াশোনা করেন। মূলত এই সময় থেকেই লেখালেখির শুরু। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৯৫৪ সালে সংবাদপত্রে লেখালেখির সূত্র ধরে ঢাকা আসেন। তখন থেকেই তাঁর কবিতা প্রকাশ পেতে থাকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। ঢাকায় এসে পত্রিকায় কাজ নেন মূলত তখন থেকেই সাহিত্যে পুরোদমে মনযোগী হন। কর্মজীবনে  তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রুফ রিডার, উপসম্পাদক ও সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। সর্বশেষ বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে ১৯৯৩ সালে অবসর নেন। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী সৈয়দা নাদিরা বেগম আর তাদের পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়েই সংসার।

প্রকাশিত গ্রন্থ : তাঁর কবিতা, গল্প, উপন্যাসসহ শ’খানেকের মতো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। লোক লোকান্তর, কালের কলস, আরব্য রজনীর রাজহাঁস, মিথ্যেবাদী রাখাল, আমি দূরগামী, বখতিয়ারের ঘোড়া ইত্যাদি তাঁর অন্যতম অমর সৃষ্টি। পাখির কাছে ফুলের কাছে একটি অসাধারণ শিশুতোষ গ্রন্থ। প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে কবির আত্মবিশ্বাস, কবির সৃজন বেদন, আল মাহমুদের প্রবন্ধ প্রভৃতি। ভ্রমণ গ্রন্থের মধ্যে কবিতার জন্য বহুদূর, কবিতার জন্য সাত সমুদ্র উল্লেখযোগ্য। তাঁর আত্মজীবনী “যেভাবে বেড়ে উঠি”একটি অমর রচনা। 

অর্জন: বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক,  হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, ফররুখ স্মৃতি পুরস্কার, সুফী মোতাহের হোসেন সাহিত্য স্বর্ণপদক, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক,অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, কিশোরকন্ঠ সাহিত্য পুরস্কার সহ আরো অনেক সম্মাননা পেয়েছেন তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনে।

কবির আকুতি ছিল, তিনি যেনো পবিত্র শুক্রবারে ইন্তেকাল করেন। 'স্মৃতির মেঘলাভোরে' কবিতায় কবি এভাবেই কবির আকুতি প্রকাশ  করে-

"কোনো এক ভোরবেলা, রাত্রি শেষে শুভ শুক্রবারে
মৃত্যুর ফেরেশতা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ
অপ্রস্তুত এলোমেলো এ গৃহের আলো অন্ধকারে
ভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।"

২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবারে ১১টা ৫ মিনিটে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মূত্যুর ফেরেশতা বাংলা সাহিত্যের এই ধ্রুবতারাকে নিয়ে যায়।

 (১১ই জুলাই ১৯৩৬ থেকে ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯)


প্রজন্মনিউজ২৪/উমায়ের

এ সম্পর্কিত খবর

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ

সরদার পাড়া দারুল কোরআন মডেল মাদ্রাসার পরিক্ষার ফল প্রকাশ

৭ দাবিতে কুবি’র তিন দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা

চলতি বছর পবিত্র হজ্জ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ

অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কৃষকের জনজীবন

টেকনাফে ১০ কৃষক অপহরণের ঘটনায় আসামি দেলু ডাকাত আটক।

পঞ্চগড়ে বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজ আদায়

বোরহানউদ্দিনে সাবেক সেনা কর্মকর্তার জানাযা ও দাফন সম্পন্ন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ