গল্প যদি সত্যি হতো

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ১১:৪৮:২৭ || পরিবর্তিত: ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ১১:৪৮:২৭

গল্প যদি সত্যি হতো

ফজরের নামাজ আদায় এবং কুরআন তিলাওয়াত করে বাসায় ফিরেছি। আমাকে দেখেই আম্মু সালাম দিয়েছেন, এবং ইশারা করে ওনার নিকট আমাকে ডেকেছেন। 

আল্লাহ পাকের দেওয়া সেরা নেয়ামতের মাঝে একটি নেয়ামত আমার আম্মু। তিনি হাসলে আমি ভালো থাকি। আর আম্মুর মন খারাপ মানেই আমার অন্তর বিষাদের আগুনে পুড়ে যাওয়ার মতো।

আম্মুর কাছে গিয়ে আম্মুর কপালে হাতে চুমু খেয়েছি।আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে কান্না করছে,আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি! জিগ্যেস করলাম কি হয়েছে তোমার? তোমাকে তো কখনো এমন করে কান্না করতে দেখিনি! 

আম্মু জিগ্যেস করল, তুমি আমাকে ভালবাসো? আমি বললাম নিশ্চয়ই, আল্লাহ ও রাসুল (সা:)এর পর তোমাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসি।আম্মু আমার হাত তাহার হাতের উপরে রাখলেন।এবার বলতে শুরু করেছেন, প্রিয় সন্তান তুমি যদি আমায় ভালবাসো, তাহলে আমার দেওয়া আজকের ওয়াদা তোমায় রক্ষা করতে হবে।

আমি বল্লাম ইনশা-আল্লাহ, আমি তোমাকে দেওয়া ওয়াদা রক্ষা করার পরিপূর্ণ চেষ্টা করব।আম্মু বলেন, গতকাল রাত্রে তোমার বোন, ইশার নামাজের পর মাসজিদে আকসার পাশে বসবাস করা নির্যাতিত মা-বোনদের কিছু ভিডিও দেখিয়েছে। ভিডিও গুলো দেখে আমি ঠিক থাকতে পাড়িনি।আমি কেমন জানি দুর্বল হয়ে গিয়েছি। ইচ্ছে করছিল তাদের কাছে তখনি চলে যাই, কিন্তু বার্দ্ধক্য আমায় দুর্বল করে দিয়েছে, নয়তো যতটা সম্ভব হেটে হলেও রওনা হতাম।

তবু যদি রবকে বলতে পারতাম,হে রব আমি চেষ্টা করেছি। যেহেতু আমি পারবো-না,আর তুমি আমার সন্তান। তাই-আমি তোমায় আদেশ দিচ্ছি, তুমি যদি আল্লাহকে ভয় করো-প্রিয় নাবী (সা:)কে ভালবাসো,আমাকে ভালবাসো,তাহলে আর দেরি নয়, তুমি প্রস্তুতি গ্রহন করো ময়দানের জন্য।

সেই ময়দানে যারা অসুস্থ, ওরা কেও তোমার মায়ের মতো-কেও তোমার বোনের মতো-কেও তোমার ভাইয়ের মতো-কেও তোমার বাবার মতো।

তোমাকে সামনে  এগিয়ে গিয়ে লড়াই করতে যেতে হবে।তুমি বীরের জাতি তুমি মুসলিম, তুমি কোথাও আবু বকর রা: হবে, কোথাও ওমর রা: মতো হবে আর কোথাও আলী, ওসমান রা: মতো হবে।

আম্মুর কথা শুনে আমি আর কাল বিলম্ব করিনি,আমি প্রস্তুতি গ্রহন করলাম। এবার আম্মুকে আদবের সাথে জিগ্যেস করলাম, আম্মু আমি বাহানা খুজতেছিনা,তোমাকে একটি কথা জানাতে চাই।

আমাদের দেশ থেকে ঐ দেশে যাওয়ার মতো, কাগজ পত্র এবং ময়দানে যাওয়ার, লড়াই করার আসবাব পত্র আমার কাছে নেই,তবে আমি ময়দানে যেতে প্রস্তুত ইনশা-আল্লাহ। আম্মু আমার কপালে চুমু খেয়ে বললেন, হে আমার প্রিয় সন্তান। 

যেই আল্লাহ, পূর্ব দিকে উদিত হওয়া সূর্য, পশ্চিমে অস্তমিত করতে পাড়েন,আমাবস্যায় হারিয়ে যাওয়া চন্দ্রকে, পুর্নিমায় রুপান্তরিত করতে পাড়েন।মৃত মানুষকে জীবিত করতে পাড়েন, আমাদের দেখা অদেখা সব কিছু সৃষ্টি করতে পাড়েন।সেই আল্লাহ তোমাকে ময়াদানের আসবাব সহো, তোমাকে সেখানে পৌঁছাতে-ও পাড়েন ইনশা-আল্লাহ। তুমি রবকে খুশি করার জন্য বের হয়ে যাও। 

আম্মু বলে দিলেন হয়তো গাজী হয়ে ফিরবে,নয়তো শাহাদাত বরন করে নিবে,কিন্তু কাপুরুষের মতো আমার কাছে ফিরে আসবেনা। আম্মু আমাকে দোয়া করে দিলেন,ইনশা-আল্লাহ বলে আমিও বের হয়ে গিয়েছি।

পথিমধ্যে কিছু সাথী পেয়ে গেলাম,আমরা হেটে হেটে এগিয়ে যাচ্ছি,যেখানে জরুরত প্রয়োজন সেখানে,তাবু ফেলি নামাজ আদায় করি,আর দোয়া করি,হে রব, আপনি আমাদের ময়দানে পৌঁছে দিন। 

একদি কান্না করে দোয়া করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ি,আর ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি আমরা ময়দানে,আলহামদুলিল্লাহ। 

লড়তে লড়তে আমাদের কিছু সাথী, শাহাদাতের মতো বড় অর্জনের মাধ্যমে জান্নাতের উড়ে বেড়ানো সবুজ পাখি হয়ে গিয়েছে। আর আমরা বাইতুল মুকাদ্দাসের পাশে অবস্থান কারি সবাইকে সাথে নিয়ে, লড়তে লড়তে একটা সময় জয়লাভ করি, আলহামদুলিল্লাহ। 

শুরু হলো শান্তির বাতাস, রবের দয়া ও করুনা।

লেখক, মোঃ মোস্তাফীজুর রহমান


প্রজন্মনিউজ২৪/এসআই

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ