পরিবেশ দূষণ নিয়ে ইসলাম কী বলে?

প্রকাশিত: ০৪ মে, ২০২৫ ০৬:১১:৪৮

পরিবেশ দূষণ নিয়ে ইসলাম কী বলে?

প্রজন্মডেস্ক:  বিশ্ব পরিবেশ এখন চরম সংকটের মুখে। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সভ্যতার আড়ালে বেড়েই চলেছে পরিবেশ বিপর্যয়। আমাদের অসচেতনতা, অবিবেচক কর্মকাণ্ড এবং অতিমাত্রায় ভোগবাদী মনোভাবের ফলে দিন দিন বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ভূমিকম্প, ভূমিধস, খাদ্যসংকটসহ নানা সমস্যা। 

এই সংকট উত্তরণে কেবল আইন দিয়ে নয়, প্রয়োজন মূল্যবোধ ও নৈতিকতার ভিত্তিতে সচেতনতা। এ ক্ষেত্রেও ইসলাম দেয় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা ও কোরআন-হাদিসের বাণীতে রয়েছে পরিবেশ সুরক্ষার পরিপূর্ণ নির্দেশনা।

বৃক্ষরোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণে নবীজির উৎসাহ

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো বৃক্ষরোপণ।


রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন: যদি কোনো মুসলমান বৃক্ষরোপণ করে, তাহলে সেই বৃক্ষের ফল হতে যত কিছু খাওয়া হয়, তা তার জন্য সদকা গণ্য হয়। এমনকি পাখি, পশু, মানুষ—যেই খাক না কেন, সেই বৃক্ষ থেকে উপকৃত হলে তা তার জন্য সদকার সওয়াব হয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ১৫৫২)

পর্বতের গুরুত্ব ও পাহাড় কাটা নিয়ে সতর্কতা

বর্তমানে পাহাড় কেটে অবাধে নগরায়ণ ও স্থাপনা নির্মাণের কারণে ভূমিকম্প ও ভূমিধসের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। অথচ কুরআনে পাহাড়ের ভূমিকা নিয়ে আল্লাহ বলেন, 

আর তিনি পৃথিবীতে সুদৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, যাতে পৃথিবী তোমাদের নিয়ে কাঁপতে না পারে। (সুরা নাহল: ১৫)

অন্য আয়াতে আছে, আমি পৃথিবীতে স্থাপন করেছি সুদৃঢ় উচ্চ পর্বতমালা এবং তোমাদের দিয়েছি সুপেয় পানি। (সুরা মুরসালাত: ২৭)

শব্দদূষণ: এক নীরব ঘাতক

বর্তমান নগরজীবনের আরেকটি ভয়াবহ সমস্যা শব্দদূষণ। ৪৫ ডেসিবলের বেশি শব্দ শরীর ও মন দুটিরই ক্ষতি করে। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে শব্দের মাত্রা ৯০ ডেসিবল ছাড়িয়ে যায়। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, শিশুর বিকলাঙ্গ জন্ম এমনকি শ্রবণশক্তি নষ্ট হওয়ার মতো বিপদ ঘটছে।

কুরআনে হযরত লোকমান (আ.) তার পুত্রকে উপদেশ দিয়ে বলেন, তুমি চলাফেরায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করো। নিশ্চয়ই সবচেয়ে অপ্রীতিকর শব্দ হলো গাধার স্বর।(সুরা লোকমান: ১৯)

শব্দদূষণের বিরুদ্ধে ইসলামের অবস্থান

রাসূল (সা.) উচ্চস্বরে জিকির, তাকবির, এমনকি ওয়াজ-নসিহতের ক্ষেত্রেও কণ্ঠস্বর সংযত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন, রাসূল (সা.) বলেন, তোমরা তো এমন কাউকে ডাকছ না যিনি বধির কিংবা অনুপস্থিত। বরং ডাকছ এমন এক সত্তাকে যিনি সর্বশ্রোতা ও সবসময় তোমাদের নিকটবর্তী। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং -২৯৯২)

গান-বাজনা ও বিনোদনের নামে কোলাহল

আজকাল বিভিন্ন উৎসব বা অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গান-বাজনা শব্দদূষণের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। অথচ কুরআনে বলা হয়েছে, কিছু মানুষ আছে, যারা অবান্তর কথাবার্তা ক্রয় করে, যাতে তারা অজ্ঞতাবশত মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে। (সুরা লোকমান: ৬)

লেখক: উস্তাযুল হাদিস, জামিয়া মিফতাহুল উলূম, নেত্রকোনা।


প্রজন্মনিউজ/২৪জেএ

এ সম্পর্কিত খবর

নাটোর সদর -২ আসনে ৫ হাজারের অধিক মোটরসাইকেল নিয়ে জামায়াতের বিশাল মোটরসাইকেল শোডাউন

ডেমরায় জামায়াত মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনে সমাবেশ ও মিছিল

গত ১০ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী দৃশ্যমান কিছু করেনি জামায়াত : মির্জা ফখরুল

সাকিবকে ছাড়িয়ে দেশের সর্বাধিক টেস্ট উইকেট তাইজুলের

ভূমিকম্পে আহতদের পাশে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন

লেবাননে হামলায় ১৩ হামাস যোদ্ধা নিহত, দাবি ইসরাইলের

মাভাবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের নবীন উৎসব ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন

ইসির সংলাপ এখনও ডাক পায়নি জাপা ও ১৪ দল শরিকরা

ড. ইউনূস সরকারের অধীনে এবারের নির্বাচন হবে

ঢাকার যে আসন থেকে আজহারীকে মনোনয়ন দিল জামায়াত

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ