প্রকাশিত: ০৬ অগাস্ট, ২০২০ ১২:১৬:১০
সিফাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের চামড়া ব্যবসায়ীরা গত কয়েক বছর ধরে চামড়ার দাম না পেয়ে এবং বিভিন্ন ট্যানারিগুলোতে পুজিঁ আটকে যাওয়ায় অনেকে এখন নিঃস্ব। অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিলেও কয়েকজন তাদের পূঁজি উদ্ধারে অন্যের চামড়ার আড়তে এখন লেবারের কাজ করছে।
পাশাপাশি এবছর চামড়ার দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও সে মূল্যে নাটোরে চামড়া বিক্রি করতে না পারার অভিযোগ উঠেছে।আর করোনা এবং ব্যবসায়ীদের অনাগ্রহে এবছর অনেক চামড়া নষ্ট হতে বসেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে চামড়া ব্যবসায়ীরা এ ব্যাবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে জেলার সবচেয়ে চামড়ার বড় মোকাম শিবগঞ্জ উপজেলার সত্রাজিতপুর বাজারে।এখানকার অন্তত ৫০ জন চামড়ার ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলেও বর্তমানে এ পেশায় রয়েছেন মাত্র ৪ জন। বাকিদের সবাই পুজিঁ হারিয়ে কেউ কেউ অন্য ব্যবসা বেছে নিয়েছেন।আবার কেউ কেউ অন্যের আড়তে লেবারের কাজ করছেন এবং হারানো টাকা উদ্ধারের সপ্ন দেখছেন।
এমনই এক ব্যাক্তি ৪০ বছরের পুরানো চামড়া ব্যবসায়ী নিবারন রবিদাস। তার ব্যবসায়ীক জীবনে তিনি এক মৌসুমেই ১৩ লক্ষ্য টাকার চামড়া কেনাবেচা করেছেন। ১৭ সাল পর্যন্ত তিনি তার ব্যবসায়ীক জীবনে সব্বোর্চ লস খেয়েছেন ৯০ হাজার টাকা। ভালই চলছিল তার ব্যবসা।কিন্তু এরপর থেকেই তার পুজি ঢাকা ও নাটোরের ট্যানারী ও মোকামগুলোতে আটকে যেতে লাগল। বর্তমানে তার ৬ লক্ষ্য টাকা আটকে গিয়ে এবং ৩ বছরে ১০ লাখ টাকার লোকসানের কারনে এখন নিঃস্ব। পুজি হারিয়ে তিনি এখন সংসার চালাতে এবং হারানো পুজি উদ্ধার করতে কাজ করছেন তার ব্যবসায়ীক বন্ধুর চামড়ার আড়তে একজন লেবার হিসেবে। অনেকে আবার পুজিঁ হারিয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
নিবারন রবিদাস জানান, অনিল রবি দাশ,তৌফিক সহ আরও ৬ জন ব্যবসায়ী তার মত লেবারের কাজে জড়িত।তারা অন্যের আড়তে কাজ করার পাশাপাশি হারানো পুজিঁ যাতে তুলতে পারেন সেজন্য এ পেশা এখনও বাধ্য হয়ে ধরে রেখেছেন।
অধিকাংশরায় চামড়া না কেনায় তিনি এবছর গরু সবোর্চ্চ ৩শ টাকা দরে ২৬শ পিস এবং খাসি ৩৫ টাকা দরে ১২ হাজার পিস কিনেও সংশয়ে আছেন।
তিনি আরও জানান, দিনদিন চামড়া রক্ষনাবেক্ষণ খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে মোকাম গুলোতে টাকা বাকী পড়ে যাচ্ছে।পাশাপাশি সরকারের বেধে দেয়া রেটে ট্যানারীগুলো চামড়া না কেনায় জেলার সকল চামড়া ব্যবসায়ীরায় বিপাকে পড়েছে।
এদিকে জেলার সদর,শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুরে অনেক ব্যাক্তি চামড়ার মূল্য না পেয়ে এবং কোন ক্রেতা না পেয়ে কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেছে আবার অনেকে নদীতে ফেলে দিয়েছে।
গোমস্তাপুরের বোয়ালিয়া গ্রামের সামিউল জানান, তার বাড়ির গরু সহ ৩ টি পশুর চামড়া ঈদের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়িতে রেখেও কোন ক্রেতা না পেয়ে নদীতে ফেলে দিয়েছেন।
অন্যদিকে শিবগঞ্জের কাপড় ব্যবসায়ী রিপন আলী জানান, তিনিও ক্রেতা না পেয়ে সোমবার সকালে তার ও তার প্রতিবেশীর ৭টি চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলেন।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মঞ্জুর হোসেন ক্ষোভের সাথে প্রজন্মনিউজকে জানান, গত ৬ বছরে নাটোর ও ঢাকার ট্যানারীগুলোতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ীদের চামড়া বিক্রি বাবদ পাওনা প্রায় ২ কোটি টাকা।
এরা সিন্ডিকেট করে তাদের ব্যবসায়ীদের টাকা আটকে রেখে তাদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করছে। প্রতিবছরই তাদের পাওনা টাকা কিস্তি আকারে দেয়ার আশ্বাস দিলেও টাকা না দেয়ায় জেলার সব মিলিয়ে ২শতাধিক চামড়া ব্যবসায়ীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বিদেশে কাঁচা চামড়া রপ্তানীর মাধ্যমে চামড়ার মূল্য বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। অন্যথায় চামড়া ব্যবসায়ীরা তাদের এ ব্যবসা ছেড়ে দিলে কুরবানীর পশুর সকল চামড়া ক্রেতার অভাবে নষ্ট হবে আগামীতে।
প্রজন্মনিউজ২৪/জহুরুল
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের লক্ষ্য: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
দক্ষিণ লেবাননে ফসফরাস বোমা হামলার কারণ জানালো ইসরায়েল
ঈদের আমেজ কাটেনি বাজারে, ফাঁকা ঢাকাতেও দাপট গরু-খাসির
ভারতে লোক সভা নির্বাচন, ৩ দিন বন্ধ থাকছে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট
আমদানির অনুমতির পর চালের দাম বৃদ্ধি
পিরোজপুরে ভাসমান বাজারে প্রতি হাটে দেড় কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি
ভারতীয় রুপির দাম ইতিহাসের সর্বনিম্ম
ঈদের আগেই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করুন : ন্যাপ
শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টিনের দাম বৃদ্ধিতে