ভেনামি চিংড়ি ব্যবসায় সফল হলেও বাড়েনি চাষ

প্রকাশিত: ১০ মার্চ, ২০২৪ ০৫:৪৩:৩০

ভেনামি চিংড়ি ব্যবসায় সফল হলেও বাড়েনি চাষ

খুলনা প্রতিনিধি: বাংলাদেশে ভেনামি চিংড়ির পরীক্ষামূলক চাষ সফল হওয়ার পর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উচ্চ উৎপাদনের সম্ভাবনাময় এই চিংড়ি চাষের অনুমতি দিয়েছিল সরকার। ফলে যে কেউ আবেদন করে চাষ করতে পারছেন। তবে ব্যবসায় সফল হলেও   এই জাতের চিংড়ি চাষ তেমন একটা বাড়েনি।

দেশে ভেনামির পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয় ২০১৯ সালে। চার বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ রফতানি আয় বাড়াতে খুলনা অঞ্চলে এই চিংড়ির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। চাষেও মিলেছে সফলতাও। কিন্তু বিদেশ থেকে খাদ্য, ওষুধ ও পোনা আমদানি এবং চাষের স্থানে জৈবনিরাপত্তা (বায়োসিকিউরিটি) নিশ্চিতের কড়াকড়ি থাকায় চাষ বাড়েনি। গত বছর খুলনায় আট জন চাষের অনুমোদন পেয়েছিলেন। এর মধ্যে চাষ করেছেন তিন জন। বাকি পাঁচ জন পোনা না পাওয়ায় চাষ করতে পারেননি।বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটে চিংড়ি রফতানি কমে গিয়েছিল। সেইসঙ্গে বাগদার উৎপাদন কমে যায়। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে ভেনামিতে আশার আলো দেখেন চিংড়ি ব্যবসায়ীরা। কারণ এই চিংড়ির উৎপাদন যেমন বেশি, এর পেছনে খরচও তেমনি কম। তাই সরকার পরীক্ষামূলকভাবে উচ্চ উৎপাদনশীল ভেনামি জাতের বিদেশি চিংড়ি চাষের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, যেটি এত দিন ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কায় নিষিদ্ধ ছিল। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ মৎস্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) অধীনে ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে পাইকগাছায় চাষ শুরু হয়। সে বছর দুটি প্রতিষ্ঠান চাষ করে সফলতা পায়। তার ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে আট প্রতিষ্ঠান অনুমতি পেয়ে চাষ করে সফলতা পায়।বাগদার চেয়ে ভেনামি উৎপাদন খরচ অর্ধেক।

চাষিরা বলছেন, ভেনামি চিংড়ি রোগ সহনীয় এবং উৎপাদন সন্তোষজনক। চাষে খরচ কম। কিন্তু এর খাদ্য, ওষুধ ও পোনা আমদানি করতে বেশি টাকা খরচ হয়। পাশাপাশি চাষের ক্ষেত্রে জৈবনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়। ফলে চাষে আগ্রহী হচ্ছি না আমরা। এজন্য চাষ বাড়ছে না।

রফতানিকারকরা বলছেন, বাগদা চিংড়ির (ব্ল্যাক টাইগার) চেয়ে ভেনামির উৎপাদন খরচ প্রায় অর্ধেক। এ কারণে বিদেশে প্রতিযোগিতার বাজারেও টিকে থাকা যাবে। অন্যান্য দেশ ভেনামি উৎপাদন ও রফতানি করে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। ১০ বছর আগে ভারত ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন শুরু করেছিল। এখন তারা ওই খাতে অনেক সফল। বাংলাদেশে চাষ বাড়লে এবং রফতানি ঠিকমতো হলে লাভ হবে।বিদেশ থেকে ভেনামি পোনা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এম ইউ সি ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শ্যামল দাস জানিয়েছেন, দেশে বাগদা চিংড়ির উৎপাদন কমে যাচ্ছে। যে কারণে প্রতি বছর চিংড়ি রফতানি কমছে। চিংড়ির অভাবে অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের ভেনামি চিংড়ি চাষ করা ছাড়া আমাদের সামনে কোনও বিকল্প নেই। এটি অনেক লাভজনক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, ‘ভেনামি চাষে সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। কারণ পরিবেশগত দিকসহ আধুনিক চাষ পদ্ধতির প্রস্তুতির বিষয় আছে। প্রস্তুতি ঠিক থাকলে অনুমোদন পাওয়া সহজ। পোনা ও খাদ্য আমদানি করতে হয়। এ বছর আরও ছয় জন অনুমোদন পেয়েছেন। গত বছর অনুমোদন পেয়েও পাঁচ জন পোনা না পাওয়ায় চাষ করতে পারেননি। গতবার যে তিন জন চাষ করেছেন তারা হেক্টরপ্রতি ১২ টন উৎপাদন করতে পেরেছেন। তাদের লাভ হয়েছে ভালোই।’

ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়বে জানিয়ে এই মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘২০০৬-০৭ অর্থবছরে বাগদা-গলদা- হরিণা চিংড়ি উৎপাদন হয়েছিল ১৮ হাজার ২৫৫ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ২৫ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। ভেনামি উৎপাদন ২০২২-২৩ অর্থবছরে শুরু হয়। তখন উৎপাদন হয়েছিল ১৩৫ মেট্রিক টন। এ বছর আরও বাড়বে।’


প্রজন্মনিউজ২৪/এফএইচ

এ সম্পর্কিত খবর

টানা চার বারের মতো কমলো সোনার দাম

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে তিন বিদেশি শক্তি কাজ করেছে: জিএম কাদের

ইউপি সদস্য কর্তৃক অসহায় নারীকে ধর্ষণ এক লক্ষ টাকায় ধামাচাপা

থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ গুচ্ছের পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

এমন ভুল বারবার করতে চাইবে পাঞ্জাব!

গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার স্বপ্ন: প্রধানমন্ত্রী

প্রচণ্ড গরমে দিনের পরিবর্তে রাতে কাজ করবে ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা

জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ অন্ধকার: কাজী ফিরোজ

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ