ইউপি সদস্য কর্তৃক অসহায় নারীকে ধর্ষণ এক লক্ষ টাকায় ধামাচাপা

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:১৩:৪৬

ইউপি সদস্য কর্তৃক অসহায় নারীকে ধর্ষণ এক লক্ষ টাকায় ধামাচাপা

জামালপুর প্রতিনিধি: দেওয়ানগঞ্জের ডাংধরা ইউনিয়নে এক অসহায় নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ১ লক্ষ টাকা জরিমানায় ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মাদক সম্রাট আঃ সালামের বিরুদ্ধে।

গত ২৪ শে এপ্রিল বুধবার রাত দুইটায় উক্ত ঘটনা ঘটে।এলাকাবাসী জানায়, গত বছর দেওয়ানগঞ্জ  উপজেলার বাঘার চর আশ্রয়ণ কেন্দ্রে (গুচ্ছু গ্রাম)প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে স্ত্রী ও এক সন্তান  নিয়ে বাস করেন ভূমিহীন দরিদ্র এক দিন মজুর। তবে তাদের সংসারে হঠাৎ নেমে আসে এক আমাবস্যার অন্ধকার।

ভুক্তভোগী ধর্ষিতা জানায় , গত ২৪ এপ্রিল বুধবার রাত দুইটায় ঘড় খালি পেয়ে ডাংধরা ৪ নং ওয়ার্ডের (মাখনের চরের) আঃ সালাম মেম্বার ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে । এসময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সে টয়লেটে পালায়।পরে সে প্রতিবেশীদের হাত পা ধরে  পালিয়ে যায়। ধর্ষিতার স্বামী খবর পেয়ে পরের দিন ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। বিচারের আশায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ওইদিনই ডাংধরা ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় মেম্বার হামিদুল ইসলামের কাছে যান ভুক্তভোগী নারী। তবে স্থানীয় মেম্বার সহ আরো কয়েকজন মেম্বার মামলা বা আইনি সহযোগিতার পরিবর্তে গ্রাম্য সালিশ ঢেকে  মাত্র ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করে  মীমাংসা করে দেন মেম হামিদুল ইসলাম আনিছুর রহমান সহ আরো কয়েকজন মেম্বার। 

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জানান, গত শুক্রবার রাতে বাঘার চর আশ্রয়ণ কেন্দ্র সালিশি বৈঠক বসার কথা থাকলেও সেটা নিয়ে যায় অভিযুক্ত ডাংধরা ইউপি ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আঃ সালামের বাড়ীতে। কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ তার অনুসারীদের নিয়ে সালিশি বোর্ড গঠন করে কথিত বিচারকাজ পরিচালনা করেন ইউপি ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হামিদুল ও আনিসুর রহমান। ধর্ষককে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে ‘মীমাংসা’ করে দেন ইউপি মেম্বারগণ। ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মামলা করতে নিষেধ করেন মেম্বারগণ।এবং আরো বলেন, এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিলে গ্রাম ছাড়া করা হবে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, ‘আমার স্ত্রীর ইজ্জতের দাম ১ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে রায় দেন ইউপি মেম্বার হামিদুল ইসলাম ও আনিসুর রহমান বাপ্পি। আমার স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করেছে সালাম মেম্বার। তার শাস্তি না দিয়ে উল্টো তার পক্ষ নিয়ে আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।

অভিযুক্ত আঃ সালাম মেম্বার মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত তাকে মাদক সম্রাট বলা হয়।এই ঝামেলার মীমাংসা করতে স্থানীয়রা ইউপি মেম্বার হামিদুল ও আনিসুর রহমান বাপ্পির শরণাপন্ন হলে তারা আমাদের জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে কথিত সালিশ করে থাকেন। সালিশে স্বজনপ্রীতি ও টাকা নিয়ে অন্যায় রায় দেন তারা। এ ছাড়া ধর্ষণের বিচার কোনো সালিশি বৈঠকে সম্পন্ন করার বিধান নেই জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এক সদস্য (মেম্বার) বলেন, ‘ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এটি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ নেই। এদিক থেকে ঐ সালিশি বৈঠক  সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘ধর্ষণের মতো অপরাধের মীমাংসা ১ লক্ষ  টাকা জরিমানায়! এটি কোনোভাবেই সঠিক মীমাংসা হতে পারে না। এ ছাড়া এটি ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারের জন্য খুবই দুঃখজনক।’

এ বিষয়ে ডাংধরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। মেম্বাররা কি করেছে সেটা জানিনা।
অভিযুক্ত আঃ সালাম মেম্বারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি । 
বিচারে উপস্থিত থাকা মেম্বার হামিদুল  ইসলাম , আনিসুর রহমান, আব্দুর আঃ রাজ্জাকসহ  ফরিদ মেম্বার এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। 
এ ব্যাপারে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন,  এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।অভিযোগ পেলে ব্যবস্তা নিবো।

প্রজন্মনিউজ২৪/এমএম

এ সম্পর্কিত খবর

বিএনপির বহিষ্কৃত নেতারা ভোটেও হারলেন

ঝালকাঠিতে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেফতার

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন তৃতীয় লিঙ্গের মুন্নী , চলছে ব্যতিক্রমী প্রচারণা

উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুরে ককটেল বিস্ফোরণে ৫ জন আহত 

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে মধ্যরাতে ছাত্রহলে ছাত্রলীগ নেত্রী

রামুতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে কৃষককে গুলি করে হত্যা

যৌন হয়রানির দায়ে ঢাবি’র দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, নিন্দা জানাল চীন

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক

খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২৫ টাকা

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ