ছোট্ট বেলার স্মৃতি জড়িত দিনগুলো

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০৩:৫৭:৪০

ছোট্ট বেলার স্মৃতি জড়িত দিনগুলো

গ্রামের পাশে নদীর কিনারায় লোকালয়ে হীন পরিবেশে একাকী অবস্থায় উপবিষ্ট আছে রুহুল। বসে বসে নিজের কাটিয়ে আসা দিনগুলির কথা স্মরণ করছে। কি-যেন এক আবেগময়ী অতীত পীড়া দিচ্ছে প্রতিটা মূহুর্তে।  রুহুল খুবই আবেগপ্রবণ এক ছেলে। সে ভাবছে, এইতো কিছুদিন আগেও ঘর থেকে বইয়ের ব্যাগটা কাঁধে বহন করে নিয়ে মনের আনন্দে রওনা করতাম গ্রামের ঐ ছোট্ট পাঠশালাতে। যেখানে অ,আ,ক,খ শেখার মাধ্যমে সূচনা হয় আমার শিক্ষা জীবন। পাঠশালায় কিছুসময় অবস্থান করার পর ফিরে আসতাম বাড়িতে। কোন রকম বইয়ের ব্যাগটা খাটের উপর রেখে চলে যেতাম নদীতে। একটা লম্বা সময় পার করার পর চোখ দুটি লাল করে উঠে আসতাম নদী থেকে। বাড়িতে ফিরে মায়ের হাতে মাখা আলুর ভর্তার সাথে খাঁটি ঘি মাখিয়ে খেতাম করতাম এক প্লেট ভাত। মায়ের কথা মতো একটু মিথ্যে ঘুম দিয়ে উঠে আসতাম খেলার জন্য। বিকালে গ্রামের সকল ছেলে মেয়েরা একসাথে জড় হতাম খেলা করা জন্য। কত রকমের খেলা গোল্লাছুট, সাত রঙের পাতা, গাঁদি আরো কতকিছু। 

শেষ বিকালের আকাশটাতে লাল আভা দেখা দিলে ফিরে আসতাম বাড়িতে। সন্ধ্যায় কোন রকম তড়িঘড়ি করে পড়া শেষ করে, আবারও কয়েকজন মিলে আরম্ভ করতাম লুকোচুরি খেলা। সে যে কত আনন্দদায়ক ছিল।  এখন প্রতিটা মূহুর্তে উপলব্ধি করতে পারি। রাত বেশি হলে মা হ্যারিকেনটা হাতে করে খুঁজতে আসত আমাকে। মাঝে মাঝে আবার বকাঝকাও করত। কত সুন্দরই না ছিল মায়ের সেই মিষ্টি শাসনটা। এভাবেই অতিবাহিত হত প্রতিদিনের জীবনটা। বৃষ্টির দিনে পাড়ার সকলে মিলে সৃষ্টিকর্তার দেওয়া পবিত্র জলে ভিজিয়ে দিতাম নিজেদের শরীর। সকলে মিলে কাদা মেখে ভুতুরে হয়ে বাড়ি ফিরতাম। এমনতাঅবস্থায়, বাবা দেখলে এমনভাবে তাড়া দিত যেন এক দৌড়ে নদীতে। 

ছোট্ট বেলার সকল স্মৃতিগুলো ভাসমান অবস্থায় আছে গ্রামের প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে। স্মৃতিগুলো স্মরণ করতে করতে কখন যে, তার চোখের কোনায় জল দেখা দিল বুঝতেই পারলো না। কতই সুন্দর ও মধুময় ছিল সেইসব স্মৃতিময় দিনগুলো।  আজ সময়ের ব্যবধানে সে এমন এক বয়সে উপনীত হয়েছে যে, এখন আর হাজার বার চাইলেও সেই গোল্লাছুট ও সাত রঙের পাতা ইত্যাদি সবখেলা খেলতে পারেনা। আজও গ্রামের পাশে অবস্থিত আছে সেই নদী, যেখানে একবার নামলে ওঠার কথা স্মরণে থাকত না। কিন্তু সময়ের কি আচর্য খেলা, এখন একবার হইলেও সেই নদীতে নামতে মন চাইনা। রাত্রে বেলার সেই লুকোচুরি খেলাও এখন আর হয় না। সবাই এখন নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। হয়তো রুহুলের জীবনে তার ঐ শৈশবের দিনগুলো কখনও আর আসবে না। আর কোন দিনই হয়তো, সে মায়ের করা সেই মিষ্টি শাসন উপলব্ধি করতে পারবে না। রুহুল তার জীবনের এইসমস্ত স্মৃতির কথা স্মরণ করতে করতে অতিবাহিত করে দেয় অনেকটা সময়। এখন সে ফিরে যায়, তার বর্তমান জীবনের ব্যস্থতায়। সে আবারো হারিয়ে যায় তার বর্তমানে। পৃথিবীর সকল মানুষেরই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত স্মরণীয় হয়ে থাকবে ছোট্ট বেলার  মধুমাখা স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা। আসলে সময়টা এমনই, যা দেখতে দেখতে কেটে যাবে জীবনের প্রতিটা মূল্যবান মূহুর্ত। যেই মূহুর্তগুলো আর কখনো স্রোতের সাথে বয়ে আসবেনা জীবন নামক এই মহাসাগরে।

নাফিজ আহমেদ


প্রজন্মনিউজ২৪/এসআই

এ সম্পর্কিত খবর

নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হাবিপ্রবি কেন্দ্রের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা

ইউপি সদস্য কর্তৃক অসহায় নারীকে ধর্ষণ এক লক্ষ টাকায় ধামাচাপা

রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা: চীনকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

মৎস্য মন্ত্রী বলেন দুই ভাই হত্যার জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে

৭ দাবিতে কুবি’র তিন দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা

রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৭ কেএনএফ সদস্য কারাগারে

বিশ্ব বই দিবসে নিজের কক্ষেই লাইব্রেরি গড়ে তুললেন রাবি শিক্ষার্থী আকরাম

দক্ষিণ লেবাননে ফসফরাস বোমা হামলার কারণ জানালো ইসরায়েল

ভোলার তজুমদ্দিনে চর দখল নিয়ে বিরোধ" দফায় দফায় সংঘর্ষ"খুনের শঙ্কা

গ্রাহকের ২ লাখ টাকার ফ্যামিলি ট্রিপের স্বপ্ন পূরণ করলো রিয়েলমি

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ