প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৩:৫৪:০৬ || পরিবর্তিত: ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৩:৫৪:০৬
এনামুল ইসলাম,
হেমন্ত বিদায়ের পথে শীতঋতু দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে। তাই প্রকৃতি এখন সাজছে নতুন সাজে। শীতের আগমনে গ্রাম বাংলার আবহাওয়ায় ধীরে ধীরে আসছে পরিবর্তন। শীতের অবস্থান হেমন্তের পরে ও বসন্তের আগে। বাংলাদেশের ঋতু চক্রে অন্য পাঁচটি ঋতু থেকে শীতের বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। শীত তার চরম শুষ্কতার রূপ নিয়ে প্রকৃতির ওপর জেঁকে বসে।
বাংলার শীতকে উপযোগী জেনে প্রতি বছরই অপেক্ষাকৃত বেশি শীতের অঞ্চলগুলো থেকে আসে লাখো লাখো অতিথি পাখি। এই অতিথিরা বাংলার প্রকৃতিতে ঠাঁই নেয়, প্রিয় অতিথি হয়ে থাকে গোটা শীতের মৌসুমে। তাদের কলতানে মুখরিত হয় দেশের বিভিন্ন জলাভূমি। এসব পাখির পাখা ছড়িয়ে দেয়া উড়ে চলার সৌন্দর্য বাংলার আকাশকে করে তোলে আরো সুন্দর। তাই প্রতি বছর শীতকাল এলেই আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন জলাশয়, খাল-বিল, হাওর ও পুকুর ভরে যায় নানা রংবেরঙের নাম না জানা পাখিতে। এসব পাখিকে বলা হয় অতিথি পাখি।
শীতের মৌসুমে সচারাচর যেসব পাখি দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ছোট পানকৌড়ি,ডুবুরি, খোঁপা ডুবুরি, জল ময়ূর,লেঞ্জা, কুন্তি হাঁস, জিরিয়া হাঁস, নীলশির, গ্যাডওয়াল, লালশির, পাতারি হাঁস, বামনীয়া, ভুটি হাঁস, কালো হাঁস,চখা চখি, বালি হাঁস, বড় সরালী, ছোট সরালী, কানি বক, ধূসর বক,গো বক, সাদা বক,ছোট বক, মাঝলা বক,কালেম বা কায়েন,শামুকভাঙা বা শামুকখোলা, কালো কুট, কাদা খোঁচা বা চ্যাগা,জলের কাদাখোঁচা পাখি, ছোট রিয়া বাটান, চা পাখি, সবুজ পা, লাল পা পিও, লাল লতিফা বা ইটটিটি, গঙ্গা কবুতর, কাল মাখা গঙ্গা কবুতর,রাজসরালি,পিন্টেল,পাতিসরালী, বালি হাঁস, ল্যাঞ্জা হাঁস,সাদা বক, দল পিপি, পানমুরগি, কাস্তেচরা, বেগুনিকালেম,ঈগল প্রভৃতি। এসব পাখিদের মধ্যে অনেক প্রজাতিই বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে অন্য দেশে চলে যায়। সেই সব দেশ বরফে ঢেকে যাওয়ায় এতই ঠান্ডা আবহাওয়া থাকে যে আমাদের দেশের শীতকাল সেই পাখিদের জন্য অনেক আরামদায়ক। ফলে এসব পাখি প্রতি বছর বেড়াতে আসে। তাই প্রতি বছর শীতকাল এলেই জলাশয়, বিল, হাওর, পুকুর ভরে যায় নানা রংবেরঙের নাম না জানা পাখিতে। আদর করে আমরা সেগুলোকে বলি অতিথি পাখি।
নাম অতিথি হলেও এই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে হাজির হয় নিজেদের জীবন বাঁচাতে। উল্লেখ্য, পৃথিবীতে প্রায় ৫ লাখ প্রজাতির পাখি আছে। এসব পাখিদের মধ্যে অনেক প্রজাপতিই বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় অন্য দেশে চলে যায়। শুধু ইউরোপ আর এশিয়ায় আছে প্রায় ৬০০ প্রজাতির পাখি। কিছু কিছু পাখি প্রতি বছর ২২ হাজার মাইল পথ অনায়াসে পাড়ি দিয়ে চলে যায় দূরদেশে। উত্তর মেরু অঞ্চলের এক জাতীয় সামুদ্রিক শঙ্খচিল প্রতি বছর এই দূরত্ব অতিক্রম করে দক্ষিণ দিকে চলে আসে। আমাদের দেশে অতিথি পাখিরা অতটা পথ পাড়ি না দিলেও তারাও অনেক দূর থেকেই আসে। বরফ শুভ্র হিমালয় এবং হিমালয়ের ওপাশ থেকেই বেশির ভাগ অতিথি পাখির আগমন ঘটে। এসব পাখিরা হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তিব্বতের লাদাখ থেকে সেন্ট্রাল এশিয়ান ইন্ডিয়ান ফ্লাইওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে। এছাড়া ইউরোপ, দূরপ্রাচ্য (সাইবেরিয়া) থেকেও এসব পাখি আসে। এরা কিছু সময় পর আবার ফিরে যায় নিজ দেশে। অতিথি পাখি কেন আসে কেন যায় এর উত্তর খুব সহজেই দেওয়া যায়। কারণ শীত এলে এরা সহ্য করতে না পেরে অন্য দেশে যেখানে শীত অপেক্ষাকৃত কম সেখানে চলে যায়। তাছাড়া এসময়টাতে গীতপ্রধান এলাকায় খাবারেও দেখা যায় প্রচন্ড অভাব। কারণ শীতপ্রধান এলাকায় এ সময় তাপমাত্রা থাকে অধিকাংশ সময় শূন্যেরও বেশ নিচে।
অনিন্দ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এদেশে পেয়েছে অতিথি পাখি সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে বিশেষ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। অতিথি পাখি আমাদের বন্ধু তাই আমরা তাদের নির্মমভাবে শিকার করব না। অতিথি পাখি আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নানাভাবে রক্ষা করে থাকে, যা আমরা অনেকে উপলব্ধি করতে পারি না। তাই একটু আশ্রয়ের আশায় দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যে পাখিরা এসে আশ্রয় নেয় বাংলা মায়ের বুকে তারা যেন কোনো ধরণের বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে না পরে।
প্রজন্মনিউজ২৪/এমএসআর
টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশেই থাকবে : শিল্পমন্ত্রী
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের লক্ষ্য: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
মাদক বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়
তাৎপর্যপূর্ণ সফরে আজ আসছেন কাতারের আমির
হ্যাপিং হ্যান্ডস্ সমাজ কল্যাণ সংস্থার গুনিজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
অপসাংবাদিকতা রোধে শিগগিরই সাংবাদিকদের ডাটাবেজ তৈরি করা হবে
গবেষণা ক্ষেত্র নির্ধারণের জন্য হাবিপ্রবিতে অনুষদ ভিত্তিক কর্মশালা শুরু
নির্দিষ্ট একটি দেশের ইশারায় চলে বাংলাদেশ : ব্যারিস্টার আবু সায়েম
সিংড়ায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত