প্রকাশিত: ১৪ জুলাই, ২০১৮ ০১:৩৬:১৯
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নামক দেশটি বৈষম্য মেনে নিতে পারেনি বলেই বুক উঁচু করে দাঁড়িয়েছিলো।নিজস্বতা ধারন করা,সমতা গড়া,আত্মমর্যাদা,স্বাধীনতার তাড়নায়ইতো পশ্চিম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধ করে জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলো।আমরাতো ১৯৪৭ সালে দেশভাগ মেনেই নিয়েছিলাম।তাহলে কি এমন হলো যে আমরা যুদ্ধ করে পৃথক হতে গেলাম!সেটা হলো আমাদের ঠকানো হয়েছিলো।অধিকার বঞ্চিত মানুষ অনেক কিছুই করতে বাধ্য হয়।সেটাই হয়েছে; আমরাও বাধ্য হয়েছিলাম।
বাংলদেশ স্বাধীন হলো,বৈষম্য গেলো কোথায় আর!রয়েই গেলো।আমাদের সংবিধানে আছে -‘মানুষে-মানুষে বৈষম্য করা যাবেনা’।তাহলে বৈষম্য হচ্ছে না এদেশে?হচ্ছেতো,কোথায় হচ্ছে না?অনেকগুলোর মধ্যে শুধু সরকারি চাকরিতে কোটা বন্টন নিয়েই একটু বলি।
কোটা? ইহা কি?ইহা হলো সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ সুবিধা।বিশেষ শ্রেণির জন্য ৫৬ভাগ কোটা!যেমন,মুক্তিযোদ্ধা -৩০ভাগ;জেলা-১০;নারী-১০;উপজাতি-৫;প্রতিবন্ধি-১।সর্বোমোট ৫৬ ভাগ কোটা।
আর বাকি ৪৪ ভাগ হলো দেশের সাধারন অর্থ্যাৎ কোটাহীনদের জন্য।অর্থ্যাৎ ৫৬ ভাগ কোটাধারী আর ৪৪ ভাগ সাধারনদের জন্য ।ভাবা যায়!একটা স্বাধীন দেশে কোটার নামে কতবড় একটা বৈষম্য সদম্ভে চলছেই।মেধাবীদের সুযোগ না দিয়ে আবার এদেশ এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নও দেখছে;হাস্যকর ব্যপার বটে!
আসলে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিকতা কতোটুকু?বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদে নারী এবং অনগ্রসর জাতির জন্য কোটার কথা বলা আছে।অনগ্রসর বলতে উপজাতি,প্রতিবন্ধী,পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর কথা বোঝানো হয়েছে।বাস্তবতা হলো এই সময়ে কোনো জেলার মানুষই নিজেদেরকে পিছিয়ে পড়া জেলার মানুষ হিসেবে মনে করছেন না।আর নারীরাতো এখন প্রত্যেকটা অঙ্গনেই সফলতার সাথেই এগিয়ে যচ্ছেন এবং তাদেরকে পিছিয়ে পড়া বললে তারা চোখ বাঁকা করে তাকাচ্ছেন।তাছাড়া আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে নারীদের অগ্রণি ভূমিকা পালন করতে দেখেছি।তাহলে নারী আর জেলাকোটা বিলুপ্তি নিয়ে কোন আপত্তি নাই।
প্রতিবন্ধী আর উপজাতিকোটা অনেক যুক্তিতেই থাকা দরকার আর এটা নিয়ে কোন বিবেকবান মানুষ আপত্তি করবেও না।
সবচেয়ে আপত্তির জায়গাটা কিছুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ ভাগ কোটা নিয়ে।এবং এই কোটাভোগীর কোনো সীমাবদ্ধতা নাই।একজন মুক্তিযোদ্ধার ১০ জন ছেলে থাকলে আর সেই ১০ জনের ১০ জন করে সন্তান থাকলে প্রত্যেকেই কোটার আওতাধীন।কোন সীমাবদ্ধতা নাই;চলছে চলবে অবস্থা।
আর এই কোটাতেই জালিয়াতির সুযোগ সবচেয়ে বেশি।কারন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়েই কোনো স্বচ্ছতা নেই।১৯৮৬ সালের জরিপে সংখ্যা ছিলো ৬৯ হাজার৮৩৩।পরবর্তী জরীপে ২ লক্ষ ২ হাজার ৩০০ জন।ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় বাদ পরতে হয় ৬২ হাজার।আর এখন স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও এদের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছেই।
আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এমন কোনো জরিপ হয়েছে যেটা বিতর্কের উর্ধ্বে?
একজন সুস্থ মানুষ চাইলেও বলার সুযোগ নাই যে, আমি প্রতিবন্ধী -আমাকে চাকরি দেন।একজন পুরুষ মানুষের চাইলেও বলার সুযোগ নাই যে,আমি নারী-আমাকে কোটার সুবিধা দেন।অর্থ্যাৎ ভুয়া নারী,ভুয়া প্রতিবন্ধী হওয়া সম্বব না-কিন্তু ভুয় মুক্তিযোদ্ধা সম্ভব।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা কোনভাবেই শেষ হবার নয়।তাদের ঋণ কোনভাবেই শোধ করা সম্ভব না।তাদের বাকি জীবন যেন অর্থের অভাবে পরতে না হয় সেজন্য তাদের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাবসত যদি ৩০ ভাগ কোটা দিতে হয় তাহলে তাদের চেয়ে শহীদ পরিবারের জন্য কত ভাগ কোটা রাখা দরকার?তাদের পরিবারের জন্য আমাদের রাষ্ট্র কোনো কোটা বা অন্য কোনো সুবিধাও দেয়নি।কি কৃতজ্ঞতাবোধ দেখালো আমাদের রাষ্ট্র শহিদদের প্রতি!যে মানুষ যুদ্ধে শহিদ হলো তার পরিবারের জন্য কোনো ধরনের কোনো সুবিধাই দেয় হলো না-শহিদদের চেয়ে বড় ত্যাগি আর কে হতে পারে?অথচ তারা কিছুই পেলো না।আফসোস
আর এই কোটা দিয়ে তাদের একধরনের ছোট করা হচ্ছে।মুক্তিযোদ্ধার অনেক সন্তান তাদের এই গর্বের পরিচয়টা দিতে লজ্জাবোধ করে পাছে আবার কোটাধারী নামক তীরষ্কার শুনতে হয়।
তাদের যেহেতু এতো অবদান তাই তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিৎ।তাদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে,তাদের অনেক সেবাই তারা ফ্রি অথবা অল্পমূল্যে পাচ্ছেন-খুবই ভালো।আরো দেওয়া যেতে পারে।তাদের সবাইকে ফ্ল্যাট,গাড়ি,ব্যাংকব্যালেন্স করে দেওয়া যেতে পারে-কোনো আপত্তি নাই।কিন্তু এতো বেকারত্তের দেশে বিভিন্ন কোটা দিয়ে মেধাবীদের থামিয়ে দেওয়ার তামাশা না করলেই ভালো হতো।
মুক্তিযোদ্ধারা কোনো ধরনের সুযোগের জন্য যুদ্ধ করেননি।তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র।তখনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই।আর এখনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাদের জঙ্গী ট্যাগ দেওয়া হয়!এটা একেবারেই পক্ষপাতিত্ত্ব এবং দুমোখি নীতি।আমরা একটা স্বাধীন দেশে এতো ডিভাইডেশন দেখতে চাই না-সমতার চর্চা দেখতে চাই।রাষ্ট্র থেকে পরিবার সব জায়গায়।
আমরা এমন কোনো দেশ চাই না যেটা শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ,শুধু আওয়মিলীগের দেশ,শুধু বিএনপির দেশ অথবা জামাতের দেশ।আমরা এমন একটা দেশ চাই যেটা সম্মিলিত ১৮ কোটি মানুষের দেশ।
মুজাহিদ গাজী লেখক ও সাংবাদিক
ঘোড়াঘাটে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চাপমুক্ত আওয়ামী লীগ
ইউএসএ বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে আসতে শুরু করেছেন দুই বাংলার কবি সাহিত্যিকগন
মৎস্য মন্ত্রী বলেন দুই ভাই হত্যার জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে
হাবিপ্রবি সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ
বশেমুরবিপ্রবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন
পঞ্চগড়ে বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
ডাকঘরে পোস্ট মাস্টারের আইসক্রিম ডিলারের ব্যবসা
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once