রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হলো আমার পরিবার: এমপি আয়েন উদ্দিন

প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর, ২০২২ ০৫:২৩:২৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হলো আমার পরিবার: এমপি আয়েন উদ্দিন

রাবি প্রতিনিধিঃ রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন বলেছেন, আমার যত ক্ষোভ, দুঃখ, আবেগ, অনুভূতি প্রকাশ করার মতো একটা জায়গা হল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হলো আমার পরিবার। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার ভাই। আমি যখন রাবির ছাত্র ছিলাম, তখন শুধুই ছাত্র। যখন রাজনীতি করেছি ছাত্রলীগের, তখন নিজেকে ভাবতাম একজন ছাত্রলীগের কর্মী। কিন্তু যখন আমি সংসদ সদস্য হয়েছি, তখন আমি মনে করি এই মতিহার চত্বরের সবাই আমার ভাই। এটি হচ্ছে আমার পরিবার।

রোববার (২ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসিতে অনুষ্ঠিত 'বাংলাদেশের সাংবাদিকতা: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় সাংসদ আয়েন উদ্দিন আরো বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে যে যেই পেশায় যাবে সেই পেশায় যেন সে সর্বোচ্চ জায়গায় যেতে পারে। তবেই এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আসবে। একজন সাংবাদিক যদি এখানে  তার লেখনীর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তবে সাংবাদিক অঙ্গনে অনেক মেধাবীরা জায়গা পাবে। তবে একজন সাংবাদিককে শুধু সাংবাদিকতা শিখলে হবে না, তার কিন্তু অনেক জ্ঞান থাকা দরকার।

আলোচনা সভায় রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রাশেদ শুভ্রর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন ও রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। এছাড়া মুখ্য আলোচক ছিলেন রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস।

মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমরা যারা সমাজ গবেষণার কাজ করি, এদের সবার চেয়ে বড় গবেষক হচ্ছে একজন সাংবাদিক। প্রতিনিয়ত সাংবাদিকরা বাস্তবতার ভিতরে থাকেন। বাস্তবতা সম্পর্কে লিখতে গিয়ে তাদের চিন্তা করতে হয়। একেকটা বাস্তবতার শেকড় উঠার কারণগুলো কি কি, একজন সাংবাদিক যেভাবে জানেন সেভাবে একজন সমাজ গবেষক জানেন না। এটা পর্যবেক্ষণ এবং কমিটমেন্টের জায়গা।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সাংবাদিকেরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছেন। সেজন্য ক্রমাগতভাবে সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণের জায়গাটি সীমিত হয়ে আসছে। এতে সাংবাদিকরা পর্যবেক্ষণের প্রতিভাটি হারিয়ে ফেলছে। তারা আর পর্যবেক্ষণ করছে না। ঘটনার গভীরে ঘুরে তদন্ত করতে চাচ্ছে না। যেভাবে চললে তাদের মালিকের সুবিধা হয়, যেভাবে চললে তাকে যেসকল প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে তাদের স্বার্থহানী না ঘটে, সেভাবে লিখার জন্য তারা অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ বিবেককে হত্যা করার জন্য সংবাদ মাধ্যমগুলো বাংলাদেশে নিজেই ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এর আগে সাংবাদিকতায় অনেকের পুঁথিগত বিদ্যা ছিলো না। কিন্তু আমার ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে সাংবাদিকতা করতে যাচ্ছে। তোমাদের কাছের জাতির প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি অনেক বেশি। যদিও আমরা জানছি যে সাংবাদিকতা এখন অনেকটা বিপদজনক পেশা হয়ে গেছে। সত্য বড় কঠিন। তবে তোমাদের সত্যটাই লিখে যেতে হবে। আমি প্রত্যাশা করছি, তোমাদের হাত ধরেই বিনির্মাণ হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

আলোচনা সভায় রুরু'র সভাপতি রাশেদ শুভ্রের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ও রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল- ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। রুরু'র সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিফ রিয়াদ এবং অভ্যর্থনা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মারজিয়া আক্তার যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কর্মরত সকল সাংবাদিক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।

এর আগে, রুরু'র ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় রাকসু ভবনে সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয় কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।

পরে সংগঠনটির কার্যালয় থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে এক আনন্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) এসে শেষ হয়।


প্রজন্মনিউজ24/খতিব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ