প্রকাশিত: ০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৪৬:১৭
তিতুমীর কলেজের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন একজন শিক্ষকের চেয়েও বেশি। শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি গাইড, বন্ধু এবং অভিভাবকের মতো। গণিত বিভাগে তার নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা যেনো একটি নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়, যেখানে তারা নির্দ্বিধায় নিজেদের সমস্যাগুলো তার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারে। তার শিক্ষার প্রতি গভীর আগ্রহ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক মনোভাব তাকে বিভাগের প্রিয় শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
শিক্ষার্থীরা তাকে স্নেহভরে ‘শাহনাজ মেম’ বলে ডাকেন। শুধু একাডেমিক বিষয় নয়, ব্যক্তিগত সমস্যাও শিক্ষার্থীরা সহজে আলোচনা করতে পারে প্রিয় ম্যামের সাথে। কোনো শিক্ষার্থী যখন ব্যক্তিগত কোনো সমস্যায় পড়ে, মেম তখন মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেন। তিনি সবসময় শিক্ষার্থীদের বলেন, 'জীবনে সমস্যা থাকবে, কিন্তু তা সমাধান করা সম্ভব, যদি আমরা নিজেদের প্রতি বিশ্বাস রাখি।'
শাহনাজ পারভীনের পাঠদান পদ্ধতি অত্যন্ত সৃজনশীল এবং সহজবোধ্য। গণিতের মতো একটি কঠিন বিষয়কে তিনি এমনভাবে উপস্থাপন করেন, যা শিক্ষার্থীদের কাছে মজার হয়ে ওঠে। তার ক্লাসগুলোতে তিনি ধাপে ধাপে সমস্যার সমাধান বোঝান, যাতে শিক্ষার্থীরা সহজে বিষয়টি আয়ত্ত করতে পারে। তার ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে যে উৎসাহ এবং আগ্রহ দেখা যায়, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। শুধু পাঠ্যক্রমেই নয়, সহশিক্ষা কার্যক্রমেও শিক্ষার্থীদের সবসময় উৎসাহিত করেন তিনি।
শিক্ষার্থীরা জানান, কোভিড-১৯ এর সময়, যখন সারা পৃথিবী থমকে গিয়েছিলো, শাহনাজ মেম আমাদের জন্য ছিলেন অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। তিনি নিয়মিত অনলাইন ক্লাস নিতেন এবং প্রতিটি শিক্ষার্থীর খোঁজ রাখতেন, যেন কোনো শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে। শিক্ষার্থীরা তার এই আন্তরিকতার জন্য তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন।
২০২৪ সালে যখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ক্যাম্পাস এবং হল বন্ধ করে দেওয়া হয়, শাহনাজ পারভীন নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি নিজের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থাও করতে চেয়েছিলেন। এই কঠিন সময়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি তাদের প্রতি তার দায়িত্ববোধের প্রমাণ দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানায়, পরীক্ষার আগে যদি কোনো শিক্ষার্থীর সিলেবাস শেষ না হয়, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্লাস নিয়ে তাদের প্রস্তুত করেন। গণিত বিভাগের সাংস্কৃতিক বা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং শিক্ষার্থীদেরও নতুন কিছু করার জন্য সবসময় উৎসাহিত করেন। তার মতে, একজন শিক্ষার্থীকে শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়; সহশিক্ষা কার্যক্রমেও অংশগ্রহণ করে জীবনের নানা দিকের উন্নতি সাধন করা জরুরি।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার সম্পর্ক এমন যে, অনেকেই তাকে পরিবারের সদস্যের মতো মনে করে। যখন তারা হতাশ হয় বা পরীক্ষার চাপে পড়ে, তখন শাহনাজ মেম তাদের মানসিকভাবে সহায়তা করেন। তিনি প্রায়ই বলেন, 'তোমাদের কোনো সমস্যায় কখনো একা মনে করবে না, আমরা সবাই একসঙ্গে আছি।' তার এই সহযোগিতামূলক মনোভাব শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
শাহনাজ পারভীনের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র গণিতের পাঠ নয়, বরং একজন ভালো মানুষ হয়ে ওঠার নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের শিক্ষাও প্রদান করা। শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, একজন শিক্ষক জাতি গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারেন, যদি তার শিক্ষার্থীরা তার কাছ থেকে সঠিক দিকনির্দেশনা পায়। শিক্ষককে হতে হবে শুদ্ধাচারী, সৎ এবং জ্ঞানপিপাসু। সেই সাথে, তার মধ্যে শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব এবং সৃজনশীল মানসিকতা থাকতে হবে।
অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন তিতুমীর কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু একজন শিক্ষক নন, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তার আচরণগত মাধুর্য এবং দায়িত্ববোধ শিক্ষার্থীদেরকে মুগ্ধ করে এবং তাদের জীবনে সত্যিকার অর্থে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আবুসাইদ
জাতীয় নাগরিক পার্টিতে এলজিবিটি সমর্থক, কী বলছেন শীর্ষ নেতারা
যেভাবে সৃষ্টি করেছিল বাঙালির জাতীয় চেতনা,ভাষা আন্দোলন
লন্ডনে ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে প্রবেশ ঘিরে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে উত্তেজনা
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়া উচিত হয়নি ‘ডিকটেটর জেলেনস্কি’র : ট্রাম্প
বুলডোজারের সংস্কৃতি চালু করেছে আ’লীগ : ডা. তাহের
প্রথম সন্তানের মা হলেন জর্ডানের রাজকুমারী
দেড় যুগ পর লন্ডনে মঞ্চমাতাবেন আসিফ
ভালোবাসা নিয়ে পরীমণির অন্যরকম স্ট্যাটাস