অনলাইন প্রজন্ম: শীতের সকাল, কুয়াশার চাদরে ঢাকা চারদিক। এমন আবহাওয়ায় চায়ে চুমুক, মুডটাই পাল্টে দেয়। সকালে চা ছাড়া দিন শুরু করতে পারেন না অনেকেই। কেউ কেউ আবার আদামিশ্রিত চা খেতে বেশি পছন্দ করেন। আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুণ। তবে সবসময় আদা-চা খাওয়া কি ঠিক?

চিকিৎসকেরা বলছেন, ঠান্ডা, গলাব্যথায় আদা-চা বেশ উপকারী। তবে কিছু ওষুধ আছে, যেগুলোর সঙ্গে আদা সেবনে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। যেসব ওষুধ খেলে আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, তা জানিয়েছেন চিকিৎসক শিমু আক্তার। তার কথায়, যারা রক্ত পাতলার কারণে ওষুধ (যেমন: ওয়ারফেরিন, অ্যাসপিরিন বা ক্লোপিডোগ্রেল ইত্যাদি) সেবন করেন, আদা তাদের শরীরে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই এসব ওষুধ সেবনকালে আদা এবং আদা-চা খাওয়া থেকে বিরত থাকা জরুরি।

ডাক্তার শিমু বলেন, এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের সঙ্গে, বিশেষ করে ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, যেমন: অ্যামলোডিপিনের সঙ্গে আদা সেবন করলে রক্তচাপ বেশি কমে যেতে পারে। পাশাপাশি ব্যথানাশক যেমন: ডাইক্লোফেনাক বা ন্যাপ্রোক্সেন-জাতীয় ওষুধের সঙ্গে আদা খেলেও রক্তপাতের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

এ চিকিৎসকের মতে, গর্ভকালের শেষদিকে বেশি আদা-চা খাওয়া ঠিক নয়। আর দুগ্ধদানকারী মা পরিমিত বা রান্নায় আদা খেতে পারবেন। তবে খালি পেটে বা পাতলা পায়খানা হলে আদা কিংবা আদা-চা না খাওয়া ভালো।

আদা সেবনের সর্বোচ্চ সীমা নিয়ে এই চিকিৎসক জানান, প্রতিদিন সর্বোচ্চ আধা গ্রাম থেকে ৩ গ্রাম সেবন করা যাবে। এর বেশি হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে। অন্যদিকে গর্ভকালে দিনে ১ হাজার ৫০০ মিলিগ্রাম আদা সেবনের ফলে গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

তবে আদাতে আছে জানা-অজানা নানা উপকারী দিক। যেমন: আদা বাতের ব্যথা কমায়, মাইগ্রেনের ব্যথা হ্রাসেও ভূমিকা রাখে। এছাড়া ঋতুচক্রের ব্যথায় আদা বেশ উপকারী। পাশাপাশি আদা বমি বমি ভাব দূর করে, রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করে, কোনো জায়গায় প্রদাহের ফলে ফোলা হলে তা কমায়, ওজন হ্রাস করে, আদা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ হওয়ায় কোষের অবাঞ্ছিত বৃদ্ধিরোধ করে ও রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।

ডা. শিমু আক্তার জানান, অপারেশনের পর ব্যথা হলে কিংবা যাত্রাপথে বমি দূর করতে বা কেমোথেরাপির পর বমি কমাতে আদার কোনো জুড়ি নেই।

প্রজন্মনিউজ২৪/এএন