চলে গেলেন তিন প্রজন্মের শিক্ষক এ.কে. মাহমুদুল হক স্যার

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই, ২০২২ ০৩:২৬:১৭

চলে গেলেন তিন প্রজন্মের শিক্ষক এ.কে. মাহমুদুল হক স্যার

আসাদ আজিম,চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: আজ শুক্রবার সকাল ৬.৩২ মিনিটে, চট্টগ্রামস্থ মেট্রোপলিটন  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শ্রদ্ধেয় স্যার পরলোক গমন করেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।  তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।

আজ বাদে আসর চট্টগ্রাম মহসিন কলেজ মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

একে মাহমুদুল হক স্যার একজন বরেন্য  শিক্ষাবিদ। তাঁর রয়েছে বর্ণাঢ্য জীবন। ধর্মভীরু, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক হিসাবে সর্বত্র তিনি পরিচিত ছিলেন। চট্টগ্রাম তো বটেই সারাদেশে রয়েছে তার অসংখ্য ছাত্র। শিক্ষা বিষয়ক যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর কারা নির্যাতিত শিক্ষক নেতা: বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের জুন, ১৯৮৫ সাল থেকে নতুন জাতীয় বেতন স্কেলভুক্তকরণের দাবীতে আন্দোলন ও কারাভোগ।২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩৬ দিন (১৯৮৬ সাল)।

পরীক্ষায় দুর্নীতি, নকল প্রতিরোধে দৃঢ়চিত্ততা, সভা সমিতিতে বক্তব্য প্রদান, পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তোলা চট্টগ্রাম জেলায় অবসরজনিত গ্র্যাচ্যুয়িটি ব্যবস্থা চালুকরণ,সরকারি-বেসরকারি বৈষম্যমূলক শিক্ষা ব্যবস্থার বিলোপ সাধনে বিভিন্ন সংগ্রাম ও আন্দোলন বেসরকারী শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের জন্য আন্দোলন লেখাপড়ার গুণগত মান্নোন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টা নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য আন্দোলন সহ শিক্ষায় ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন জনাব এ.কে  মাহমুদুল হক স্যার। 

এছাড়াও রচনা করেছেন অসংখ্য গ্রন্থ বায়তুশ শরফ মাদ্রাসার উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ছিলেন মাসিক দ্বীন দুনিয়ায় সম্পাদক। তার উল্লেখ যোগ্য রচনা : মাসিক দ্বীন দুনিয়া, শিশু কিশোর মাসিক দ্বীন দুনিয়া সহজ বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা- চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি নিম্ন মাধ্যমিক রচনা ও বিরচন- ষষ্ঠ, সপ্তম, ও অষ্টম শ্রেণি আমাদের বাংলা সাহিত্য,মাধ্যমিক শিক্ষার সংকট ও সমাধান পরীক্ষা ও অভীক্ষা,মরণপুরের রাজা শিক্ষক-শিক্ষণ-সমীক্ষা (ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুলের ১৩৫ বছরের ইতিবৃত্ত)।

এছাড়াও, জীবন স্রোতের আঁকে বাঁকে (জীবনী গ্রন্থ),প্রবন্ধকার (জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকা), সুন্দর হাতের লেখা (বাংলা), পেশাগত জীবনে তার মত সফল দৃষ্টান্ত বিরল, সহকারি শিক্ষক- মির্জাপুর হাই স্কুল (১৯৫২ – ১৯৬১ সাল) সহকারি শিক্ষক- চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল (১৯৬১ – ১৯৭০ সাল) প্রধান শিক্ষক- চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল (১৯৭১ – ২০০০ সাল) পরিচালক- চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ চেয়ারম্যান- চিটাগাং আইডিয়্যাল ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠাতা – পশ্চিম হাইদ চকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়্।

পরীক্ষক ও নিরীক্ষক (কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড) প্রধান পরীক্ষক- (কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড) সদস্য- কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড পরিচালনা পরিষদ- ১৯৮০ – ১৯৮২ আলোচকঃ বাংলাদেশ বেতারের স্কুল ব্রডকাস্ট প্রোগ্রাম সদস্য- চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড পরিচালনা পরিষদ সদস্য-বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সভাপতি- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শিক্ষক সমিতি সভাপতি- শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ সহ সভাপতি- বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি প্রতিষ্ঠাতা – বোধন আবৃত্তি স্কুল (১৯৯৩ সাল) পরিচালনা কমিটির সদস্য- বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

স্বীকৃতি:
জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক – ১৯৮৪ সাল চট্টগ্রাম রোটারী ক্লাব অব ইসলামাবাদ কর্তৃক শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক- ১৯৮৬ সাল
জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক – ১৯৯২ সাল দিল্লী গমন: সার্ক শিক্ষক সেমিনার সদস্য হিসেবে- ৩১ অক্টোবর – ২ নভেম্বর, ১৯৯২ সাল সম্বর্ধনা- কারাভোগের পর ছাত্র- শিক্ষক- অভিভাবক ও জনতা কর্তৃক- ১৯৮৬ সাল চট্টগ্রামের বিখ্যাত বিদ্যাপীঠ আইডিয়াল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সবশেষ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৩৫ সালের ১লা এপ্রিল ফটিকছড়ির হাইদচকিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।


প্রজম্মনিউজ২৪/ফারহান আহমেদ
 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ