ইসরাইলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাস

প্রকাশিত: ১২ জুলাই, ২০২১ ০৩:০৯:৫২

ইসরাইলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাস

ইসরাইলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাস আগামী বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হচ্ছে। ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হ্যারজগের উপস্থিতিতে তেলআবিবে অবস্থিত এই দূতাবাস ভবন উদ্বোধন করা হবে।

আমিরাতের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আল খাজা অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। দায়িত্ব প্রাপ্তির পর গত ১ মার্চ থেকেই ইসরাইলে অবস্থান করছেন তিনি।এর আগে গত ২৯ ও ৩০ জুন সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথম আনুষ্ঠানিক সফরে যান ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদ। সফরে তিনি আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে ইসরাইলের দূতাবাস ও বৃহত্তম শহর দুবাইয়ে কনস্যুলেটের উদ্বোধন করেন।

গত প্রায় আট মাস ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া চলে আসছিল। দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আসা যাওয়া চলছিল। চলতি বছরের ১ মার্চ আমিরাতের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ খাজাকে তেল আবিবে পাঠানো হয়েছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত এমন সময় তেল আবিবে দূতাবাস উদ্বোধন করল যখন সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিশেষ করে গাজা যুদ্ধের পর এ অঞ্চলে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত বছরের আগস্টে পারস্য উপসাগরীয় দুই দেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরাইলের সাথে স্বাভাবিক কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সম্মতি জানায়। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন হোয়াইট হাউজে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরাইলের সাথে কথিত 'ইবরাহীমি চুক্তির' মাধ্যমে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ ও বাণিজ্য, প্রযুক্তি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তায় চুক্তিবদ্ধ হয়।

সম্প্রতি গাজায় ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে দখলদার ইসরায়েলের ১২ দিন ধরে তুমুল যুদ্ধ চলে। এই যুদ্ধে ইসরায়েল এত বেশি যুদ্ধাপরাধ করেছে যে, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে। ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ করলেও সংযুক্ত আরব আমিরাত টু শব্দটিও করেননি। বরং যুদ্ধ বিরতির আট দিন পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে তেলআবিবে দূতাবাস উদ্বোধন করল। আমিরাতের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আল খাজা ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েল থেকে আমিরাতে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধ বিরতির পর আবারও তিনি তেলআবিব ফিরে গেছেন এবং ইসরায়েলের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের মাত্রা এত বেশি ছিল যে, সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি আরব দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এমনকি ইসরায়েলের সঙ্গে রিয়াদের গোপন সম্পর্ক বজায় থাকলেও এ মুহূর্তে এ সম্পর্ক আরও উন্নয়নের বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনা থেকেও সৌদি আরব বিরত থাকে। আরেকটি বিষয় হলো আমিরাত এমন সময় ইসরায়েলে দূতাবাস খুলেছে যখন ইসরায়েলে ক্ষমতার পালাবদল ঘটতে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। অর্থাৎ ইসরায়েলে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্মকাণ্ড থেকে প্রমাণিত, এ দেশটি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্য আরব দেশগুলোর তুলনায় অগ্রগামী এমনকি তারা আরব পরিচিতিকেও আমলে নিচ্ছে না। এর ফলে দেশটির সরকার অভ্যন্তরীণভাবে যেমন ব্যাপক চাপের মুখে পড়বে তেমনি আরব বিশ্বেও তাদের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে।
প্রজন্মনিউজ২৪/তারিক আদনান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ