একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে পশুর হাট

প্রকাশিত: ০৪ জুলাই, ২০২১ ০১:২৪:২৭

একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে পশুর হাট

মহামারি করোনার কবল থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে সরকার কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। গত ৩ দিন ধরে সেনাবাহিনী, পুলিশ প্রশাসন, বিজিবির সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন উপজেলাব্যাপী লকডাউনের আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, দোকানপাট খোলা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বাজারে কুরবানির পশুর হাট বসানোর অভিযোগ উঠেছে। এসব হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে লকডাউনে গরুর হাট বসবে কিনা এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশনা না থাকায় প্রশাসনও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।।

লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রশাসনের প্রচার-প্রচারণা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকলেও জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার নাপিতেরচর গাইবান্ধা গরুর হাট বসেছে। এসব হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও বালাই ছিল না। হাটে আসা বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এছাড়া উপজেলার পোড়ারচর, কান্দারচর, পচাবহলা, সিরাজাদাবাদ, ডিগ্রিরচর, টানাব্রিজ, ঝগড়ারচর, মলমগঞ্জ, কুলকান্দী, কড়ইতলা, হাড়গিলা, কাজলা একতা, কাঠমা জনতা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম. মাজহারুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজার করাসহ দৈনন্দিন জীবনে সব ধরনের কাজকর্ম করতে জনগণকে সচেতন করে যাচ্ছি। লকডাউন বাস্তবায়নে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, করোনার সংক্রমণরোধে পঞ্চগড় জেলায় চলছে লকডাউন। তবে বিভিন্নস্থানে বসছে পশুর হাট। শনিবার জেলার বোদা উপজেলার নগরকুমারী পশুরহাট বসেছে। হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি ক্রেতা-বিক্রেতাদের। সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও বুধবার ঐতিহ্যবাহী হাটটি বসে। অন্যদিকে রবিবার জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভাউলাগঞ্জ হাট বসার আগে প্রচার-প্রচারণা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রত্যয় হাসান বলেন, গরুর হাট বসার বিষয়ে কোনও বিধিনিষেধ নেই, বন্ধেরও কোনও নির্দেশনা আসেনি।

বোদা নগরকুমারী হাটের ইজারাদার মো. আব্দুর রহমান জানান, লকডাউনে কুরবানির পশুর হাট বন্ধের বিষয়ে কোনও নির্দেশনা ছিল না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট বসানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

বোদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী জানান, সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পশুরহাট চলেছে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুরবানির পশুর হাট বসানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন। পশুরহাট বন্ধের বিষয়ে কোনও নির্দেশনা নেই, তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে হাট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

অন্যদিকে, সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেই হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বসেছিল জনতার বাজার পশুহাট। তবে নির্ধারিত সময়ের পর বাজার বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। শনিবার (৩ জুলাই) বিকালে সাড়ে ৫টায় জনতার বাজার পশুর হাট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানা যায়, জনতার বাজার পশুহাট ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষা নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জনতার বাজার পশুহাট শনিবার-সোমবার বসছে। শনিবার সকাল থেকেই জনতার বাজার পশুর হাটে বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে কুরবানির পশু কেনাবেচা করতে আসেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলেছে কেনাবেচা। এ সময় অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখেই ছিল না মাস্ক। কারও কারও মাস্ক থাকলেও তা ছিল পকেটে বা থুতনির নিচে।

পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে স্বাস্থ্য সচেনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানানো হয়। সেখানে বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে পশুর হাট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে শুক্রবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের নলুয়াবাগী এলাকায় পশুর হাট বসানো হয়। এসময় পশুর হাটে না ছিল সামাজিক দূরত্ব না ছিল স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও দৃশ্য। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে হাট বন্ধ হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক বা জরিমানা করা হয়নি।#

প্রজন্মনিউজ২৪/ফাহাদ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ