করোনায় এক ফুলচাষীর প্রায় ১২ লাখ টাকার ফুল নষ্ট

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল, ২০২০ ০৮:৫৫:৪৩

করোনায় এক ফুলচাষীর প্রায় ১২ লাখ টাকার ফুল নষ্ট

নওগাঁর ধামইরহাটে করোনার প্রভাবে জাকারিয়া নামের এক ফুলচাষীর প্রায় ১২ লাখ টাকার ফুল ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছ। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ফুলচাষ করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরাট অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে তাকে। তাই সরকারের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই ফুল চাষী।

জানা গেছে, উপহার নার্সারীর স্বত্বাধিকারী আবু তালেব মন্ডল জাকারিয়ার লীজকৃত দুটি বাগানে এবার বড় পরিসরে এনজিও এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত মঙ্গলবাড়ী শহীদ আব্দুল জব্বার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ একর এবং এবং ধামইরহাট পৌরসভার বেড়াডাঙ্গা গ্রামে ৯ একর মোট ১৩ একর জমিতে তিনি ফুল চাষ করেছেন।  এসব বাগানের গোলাপ, বেলী, রজনীগন্ধা ও গাঁদা ফুল চাষ করেছেন। বর্তমানে তিনিসহ ৮জন কর্মচারী বাগানে কাজ করছেন। প্রায় তিন মাস থেকে ফুলের সকল ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।

ফুল বাগানে নিয়মিত পানি দিয়ে ফুল ও ফুলগাছগুলো বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হলেও দির্ঘদিন ধরে বাজারে ফুলের চাহিদা না থাকায় বর্তমানে ফুল নষ্ট হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে। এই দুই বাগানে বছরে প্রায় ১২ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হতো।

এবার লাভতো দূরে কথা আসল টাকা ওঠানোর কোন সম্ভাবনা নেই। প্রতি বছর জমির মালিককে লীজ বাবদ প্রায় ৪ লাখ টাকা দিতে হয়। প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে কর্মচারীদের নিয়ে তিনি বেকার হয়ে পড়েছেন। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

ফুলচাষী জাকারিয়া বলেন, অন্যান্য বছর ফুল চাষ ও বিক্রয় করে মওসুমে প্রায় ২শত কর্মচারীর বেতনভাতা পরিশোধ করে মোটামুটি স্বচ্ছলভাবে চলতো তার সংসার। এটিই তার একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম ছিলো। 

এসব ফুল চাষ করে তার দুইটি দোকানে প্রতিদিন ফুল বিক্রি করতেন। এছাড়াও এসব বাগানের ফুল তিনি নওগাঁ, বগুড়া, রাজশাহী, যশোর, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, পঞ্চগড়, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন স্থানে পাইকারীভাবে বিক্রি করেন।

তাছাড়াও এ ফুলগুলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা, স্বাধীনতা দিবস, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। এছাড়া বিয়ে, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রচুর ফুল বিক্রি হতো তার। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি, মার্চ এবং এপ্রিল মাসে প্রায় ২০০ জন নারী শ্রমিক শুধু ফুল উঠানো ও ফুলের স্তবক নির্মাণ করতো।

গত বিজয় দিবস ভালোভাবে ব্যবসা হলেও মাতৃভাষা, স্বাধীনতা দিবস, পহেলা বৈশাখে করোনার প্রভাবে কোন ফুল বিক্রি হয়নি। ফলে বাগানে সকল ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। সরকারি সহায়তা ছাড়া আমি ঘুরে দাঁড়াতো পারবো না। ফুলচাষী জাকারিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার বরাবর সরকারি আর্থিক সহায়তা চেয়ে একটি আবেদন করেছেন বলেও জানান তিনি।

প্রজন্মনিউজ২৪/নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ