গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে আ’লীগের মহাসমাবেশ

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারী, ২০১৯ ১২:১৮:১৩

গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে আ’লীগের মহাসমাবেশ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় এবং টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনকে উৎসবের মাধ্যমে স্মরণীয়ভাবে পালন করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে তারা। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে উৎসবের ঢঙে ১৯ জানুয়ারির ওই মহাসমাবেশ পালন করতে চান ক্ষমতাসীনরা।

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর নেতাকর্মীদের আনন্দ মিছিলসহ কোনো ধরনের ‘বাড়াবাড়ি’ না করার আহ্বান জানানো হয়েছিল দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে। এবার মহাসমাবেশের মাধ্যমে সেই বিজয় উদযাপন করবে এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি।

দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহাসমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। শনিবার দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা এবং ঢাকা ও এর আশপাশের জেলার নেতা ও দলীয় এমপিদের যৌথসভা হয়।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেখানে মহাসমাবেশ সফল করতে নানা দিকনির্দেশনা দেন তিনি। এ ছাড়া রোববার বেলা ১১টায় একই স্থানে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঢাকা জেলা, গাজীপুর, গাজীপুর মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি

ও সাধারণ সম্পাদক, দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উল্লিখিত জেলার সব উপজেলা, থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের যৌথসভা ডেকেছে দলটি।

দলীয় সূত্র জানায়, রাজধানী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া ও মুন্সীগঞ্জ জেলার বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে মহাসমাবেশে আনার পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। বাস, ট্রাক ও রেলপথে নেতাকর্মীরা বর্ণিল মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দী ময়দানে সমবেত হবেন।

ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের দলীয় এমপিরা মিছিল সহকারে মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী সব শ্রেণিপেশার মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান ক্ষমতাসীনরা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় স্থান পাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনের তথ্যসংবলিত পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার। নৌকা আকৃতির মঞ্চের পাশাপাশি উদ্যানজুড়ে থাকবে আলোকসজ্জা।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয় হয়েছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আবার আস্থা রেখেছেন। নির্বাচনে বিজয়ের পরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রধানমন্ত্রী আনন্দ মিছিল করতেও নিষেধ করেছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অক্ষরে অক্ষরে তা পালনও করেছে।

১৯ জানুয়ারি রাজধানীতে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আমরা সবাইকে নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে এ মহাসমাবেশ সফল করব। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত বলেন, দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে বিজয়ী করেছে। গণরায় দিয়েছে। ১৯ জানুয়ারির মহাসমাবেশেও মানুষের ঢল নামবে। আমরাও জোরালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সব ইউনিটের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে মহাসমাবেশে যোগ দেবে। একই বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, বিজয়ের পরে কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা কোথাও কোনো আনন্দ মিছিল করিনি। সুতরাং নেতাকর্মীদের মাঝে আলাদা একটি আমেজ তো থাকবেই।

তিনি বলেন, মহাসমাবেশ সফল করতে ১৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা ডেকেছি। সেখানে থানা, ইউনিয়ন ওয়ার্ডের নেতা এবং দলীয় কাউন্সিলররা থাকবেন। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেব। রাজধানীতে আওয়ামী লীগের সমাবেশগুলোয় এমনিতেই নানা ধরনের বর্ণিল আয়োজন থাকে।

এবার তাতে আরও বেশি চমক দেখা যাবে বলে জানা গেছে। রাজধানীর ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু বলেন, মহাসমাবেশ সফল করতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। আওয়ামী লীগের সঙ্গে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও মহাসমাবেশ সফল ও উৎসবমুখর করতে নিচ্ছেন নানা প্রস্তুতি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট  বলেন, আমরা যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিজয় উদযাপনের এ মহাসমাবেশকে সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি, ওই দিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মানুষের ঢল নামবে।

মহাসমাবেশে নারীদের বিপুল অংশগ্রহণ থাকবে বলে জানান যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল। তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বর্ধিতসভা করেছি। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণেও বর্ধিতসভা হবে। সংগঠনের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে মহাসমাবেশে উপস্থিত হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। এবারের সংসদ নির্বাচনে দেশের নারী সমাজও বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রতি আস্থা রেখেছেন। তারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন।

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ