রাজধানীর দক্ষিণখানে বেপরোয়া হাসুর মাদক ব্যবসা চলছেই

প্রকাশিত: ১৫ মার্চ, ২০২৪ ১০:১৪:০৭

রাজধানীর দক্ষিণখানে বেপরোয়া হাসুর মাদক ব্যবসা চলছেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর দক্ষিণখানের দক্ষিণ মোল্লারটেক এলাকায় বেপরোয়া হাসুর মাদক ব্যবসা এখনো চলমান। তবে পাল্টেছে কৌশল। গত ২০ জানুয়ারী, ২০২৪ তারিখে ‘দক্ষিণখানে বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ী হাসুর খুঁটির জোর কোথায়?’ শিরোনামে ‘প্রজন্মনিউজ২৪ডটকম’ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। দক্ষিণখান থানা পুলিশের টনক নড়ে। কিন্তু রাজমিস্ত্রী পেশার আড়ালে মাদক ব্যবসায়ী আবুল হাসেম হাসু নিজেকে বাঁচাতে গা ঢাকা দেয়। যে কারণে পুলিশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়।

বর্তমানে হাসু আবার ফিরে এসেছে। কৌশল ও জায়গা পাল্টিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। আগে তাকে দক্ষিণ মোল্লারটেকের বায়তুল মামুর জামে মসজিদ সংলগ্ন বাদলের চা দোকান ও মা ফার্মেসীর সামনে বেশি দেখা গেলেও এখন নতুন আস্তানা গেড়েছেন দক্ষিণ মোল্লারটেকের গাজী বাড়ী কবরস্থান এলাকায়। নিজেকে নিরাপদ রাখতে এখন আর একা চলাফেরা করেন না। সাথে লোকজন রাখেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস. এম. তোফাজ্জল হোসেনের ট্রাক মার্কার পক্ষে কাজ করা হাসু এখন নির্বাচনে পাস করা কেটলি মার্কার খসরু চৌধুরীর লোকজনদের ম্যানেজের চেষ্টায় আছেন। অথচ নির্বাচনের সময় হাসু মাদকাসক্তদের মাদকের বিনিময়ে ট্রাক মার্কার প্রচারণায় কাজ করিয়েছেন। ভেবেছিলেন ট্রাক মার্কা পাস করলে তার মাদক ব্যবসা আরো সহজ হয়ে যাবে।
এখন হাসু সবাইকে আবেগী কন্ঠে বলে বেড়াচ্ছে, ট্রাক মার্কার পক্ষে কাজ করে আমি কালার হয়ে গেলাম। একুল ওকুল দুইকুল হারালাম। আবার খসরু চৌধুরীর লোকজনদের বলেছেন, আমি ট্রাক মার্কার পক্ষে কাজ করলেও ভোট দিয়েছি কেটলি মার্কায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজমিস্ত্রীর পেশার আড়ালে খুব কৌশলে ভ্রাম্যমানভাবে গাঁজা ও ইয়াবার ব্যবসা করে হাসু। আগে বিমানবন্দর রেল স্টেশন, হাজীক্যাম্প, ইর্শাল কলোনি, বাদলের চা দোকান ও উদয়ন স্কুল রোডে নিজেই ভ্রাম্যমানভাবে মাদক ব্যবসা করলেও ‘প্রজন্মনিউজ২৪ডটকম’ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর এখন অন্য লোক দিয়ে মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে মাদক ভেলিভারি দেন। এখন প্রকাশ্যে হাসুর আনাগোনা আগের চেয়ে কম দেখা যায়। আগে যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাসাও বদলেছেন।

এক সময় নুন আনতে যার পান্তা ফুরোতে সে হাসু এখন মাদক ব্যবসার টাকায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ! ঝুপড়ি ঘর ছেড়ে থাকেন ফ্লাট বাসায়। ছিড়া জামা কাপড় পড়া লোক এখন নিত্য নতুন দামি দামি পোশাক পড়ে।
দক্ষিণখানের বটতলা এলাকার কয়েকজন রাজমিস্ত্রী প্রতিবেদককে অভিযোগ করেছিলেন, হাসু মাদক ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন সাইটে রাজমিস্ত্রী সাপ্লাই দেয়। তার সাইটে যারা কাজ করতে যায় তাদের ঠিকমতো পারিশ্রমিক দেয় না। ন্যায্য পারিশ্রমিক চাইলে মারধর করে। এনিয়ে তার সাথে রাজমিস্ত্রীদের প্রতিদিন ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। যারা হাসুর সাইটে একবার কাজে যায় তারা আর ২য় বার যেতে চায় না। এছাড়া তার সাইটে যারা কাজ করে তাদের মাদক সেবনে উদ্বুদ্ধ করে হাসু। এমন গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।

স্থানীয়রা অভিযোগ দেন, এলাকার উঠতি বয়সের তরুনদের হাতে মাদক তুলে দিয়ে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে হাসু। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই বর্বর নির্যাতনের শিকার হতে হয়। হাসু শুধু মাদক ব্যবসাই করেন না, নানা রকম সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথেও জড়িত সে। এছাড়া হাসুর পরিকল্পনায় দক্ষিনখানের বিভিন্ন এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটছে। চোরদের শেল্টার দেয় হাসু। নিয়মিত চুরির মালামাল কেনাবেচা করেন।
বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ী হাসুকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। এর আগে মাদক ব্যবসায়ী হাসুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে নিউজ প্রকাশ করলে প্রতিবেদককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তিনি বলেন, ‘আমার কিচ্ছু করতে পারবেন না। আমার পেছনে অনেক বড় বড় নেতার হাত আছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/এস

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ