সরিষা ক্ষেতে মধু চাষে লাভবান বগুড়ার মৌ-চাষিরা

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৩:২৩:৫০ || পরিবর্তিত: ১০ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৩:২৩:৫০

সরিষা ক্ষেতে মধু চাষে লাভবান বগুড়ার মৌ-চাষিরা

তৌফিক এলাহী 
শাজাহানপুর প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের হলুদ সমারোহ। মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ভরে উঠেছে। তাই মাঠে মাঠে এখন চলছে মধু সংগ্রহের কাজ। শীতকালীন শস্য সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ চাষিরা ।

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার বেলপুকুর এলাকার ফসলের মাঠে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। সরিষা খেতের পাশেই বসানো হয়েছে মৌ চাষের বাক্স। এসব সরিষার ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছির ঝাঁক। সংগৃহীত মধু নিয়ে জমা করছে খেতের পাশেই স্থাপিত মৌ-বাক্সে। 

সাজাপুর বেলপুকুরের মৌ খামারি মাসুদ রহমান জানান, তিনি প্রায় ১২ বছর ধরে এই পেশায় আছেন। তার এখানে প্রায় ৫০ টিরও অধিক মৌ বক্স আছে। আকার ভেদে একটি বাক্সে ১০ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত মধু পাওয়া যায়। আর প্রতি কেজি মধু বিক্রি করা হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। তিনি এই খামার থেকে প্রতি বছরে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা আয় করে।

মধু সংগ্রহের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মধু সংগ্রহের জন্য স্টিল ও কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হয় বাক্স। বাক্সের ভেতরে কাঠের তৈরি সাতটি ফ্রেমের সঙ্গে মোম দিয়ে বানানো বিশেষ কায়দায় লাগানো থাকে এক ধরনের সিট। এসব বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। আর তার ভেতর রাখা হয় একটি রানী মৌমাছি। রাণীর আকর্ষণে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা। একটি রাণী মৌমাছির বিপরীতে প্রায় তিন থেকে চার হাজারের মতো পুরুষ মৌমাছি থাকে একেকটি বাক্সে।  

এরপর মৌমাছিতে টুইটম্বর বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে রেখে দেওয়া হয়। পরে সেসব বাক্স থেকে সরিষা ক্ষেতের ফুলে ফুলে ভো ভো শব্দ তুলে ঘুরতে থাকে প্রশিক্ষিত মৌমাছিরা। এভাবে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে চলে আসে বাক্সে।

উপজেলার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হাবিবুল্লাহ বাশার জানান, সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলন ১০ ভাগ বেড়ে যায়। এতে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন সরিষার উৎপাদন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মধুর উৎপাদনও। সরিষা ও মধুর সমন্বিত চাষে লাভবান হচ্ছেন সরিষা ও মৌ-চাষীরা। 

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মৌ-চাষিরা এসব মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। মধু চাষের মাধ্যমে চাষীরা একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে দূর হচ্ছে বেকারত্ব।

উল্লেখ্য সরিষা ফুলের মধু খাঁটি ও সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/এমএসআর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ