প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০২:৫৪:৪৫
আল-আমীন, বটিয়াঘাটা (খুলনা) প্রতিনিধি: হেমন্তের শুরুতে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা খুলতেই একঝাঁক কুহেলি বিন্দু শীতলতার পরশ বুলিয়ে দেয় গায়। ধবধবে কুয়াশা শুভ্রতার চাদর বিছিয়ে দেয় চারদিকে। শীতকালের সঙ্গে খেজুর রস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেন একে অন্যের পরম বন্ধু। কনকনে শীতের সকালে এক গ্লাস ঠান্ডা খেজুরের রস শরীরে এনে দেয় সজীবতা। গ্রামে শীতকালের সকালটা খেজুর রস ছাড়া যেন একেবারেই জমেই না। স্বাদে আর গন্ধে এককথায় অমৃত। পাখিরাও সে স্বাদ সরু ঠোঁট দিয়ে চুকচুক করে পান করে সুমিষ্ট রস।
খেজুর গাছিরা রস আহরণের জন্য খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। খুলনা জেলার বটিয়াঘাটাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার জন জীবনের স্বাভাবিক জীবনে পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। রাস্তায়, জমিতে কিংবা পুকুরে, মাঠে-ঘাটে খেজুরের গাছের আশেপাশে মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। কয়েকদিনের মধ্যেই রস ঘরে আসবে আর তা দিয়ে তৈরি হবে নানা উপকরণ।
গাছ ছাঁচা-ছোলার কাজ শেষ হলেও এখন নলি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। তাই শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই গাছিদের সব প্রস্তুতি শেষের দিকে। এমন কোনো বাড়ি নেই যে সেখানে খেজুরের গাছ নেই। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই লক্ষ্য করা যায় খেজুরের গাছ। গাছ কেটে যারা প্রতিনিয়ত রস আহরণ করে স্থানীয় ভাষায় তাদেরকে গাছি বলা হয়। আর যে নলের মাধ্যমে রস ফোটা ফোটা করে পড়ে তাকে নলি বলা হয়।
প্রথমে গাছের মাথার ডগা পরিষ্কার করা কষ্ট হলেও যখন গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয় তখন আর গাছির আনন্দের শেষ থাকে না। গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে প্রতিদিন বিকেল বেলা গাছ কেটে নলির মুখে পাত্র বসিয়ে পরের দিন খুব সকালে গাছ থেকে রসসহ পাত্র নামিয়ে ফেলে। এভাবে একে একে করে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে থাকে। খেজুরের মিষ্টি রস যে একবার পান করেছে, তার স্বাদ কোনো দিন সে ভুলতে পারবে না।
খেজুর রসের পায়েস ও ক্ষীর তো খুবই মজাদার। আবার এই রস দিয়ে তৈরি হয় পাটালি গুড়। শীত মৌসুমে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গাছিরা গাছ থেকে রস আহরণ করে আর তা দিয়ে পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। এই রসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সেইসাথে গুড় পাটালীর কদরও রয়েছে অনেক। খেজুরের রসের তৈরি যাবতীয় উপকরণ এনে দেয় বাড়তি স্বাদ। ক-দিন পরেই গাছি মধুর সুরে গাইতে থাকবে- “হারা ধুয়ে দে-বউ গাছ কাটতি যাবো।”
উপজেলার বারোআড়িয়া গ্রামের সুখেন্দু মন্ডল বলেন,আর মাত্র কয়েক দিন পরই গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হবে। প্রতি বছর শীত মৌসুম এলেই আমরা গাছ কেটে পর্যায়ক্রমে রস সংগ্রহের উপযোগী করে থাকি। কাঁচা রস বিক্রি করি আবার রস থেকে গুড় ও পাটালি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে থাকি।
সুরখালী এলাকার গাছি শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর শিতের মৌসুমে আমি খেজুর গাছ কেটে প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় করে থাকি। গাছ প্রতি ৫০/ ১০০/২০০ টাকা করে দেই। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর এই পেশায় আছি। খেজুর গাছ ছাড়াও তালের মৌসুমে তালগাছ কাটি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, গাছিদের জন্য সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা করা হয় না। তবে এই খাজুর গাছিরা যদি আমাদের কাছে কোনো সহযোগিতা চায়, সেক্ষেত্রে কৃষি অফিস এর পক্ষ থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।
গাছিরা এখন ছাঁচা-ছোলা আর নলি বসানো নিয়ে ব্যস্ত, আর কয়টা দিন পরেই রস আহরণ শুরু হবে সেইসাথে তাদের মুখে হাসি ফুটবে। প্রায় গাছিই শীত মৌসুমের জন্য অপেক্ষায় থাকে কারণ তারা এই রস আহরণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে।
প্রজন্মনিউজ২৪/এন হাসান
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ
৭ দাবিতে কুবি’র তিন দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ
মোস্তাফিজকে নিয়ে বিসিবির ভাবনা ঠিক নেই: হার্শা ভোগলে
দিনে হিটস্ট্রোকের ভয়, চাঁদের আলোয় ধান কাটছে কৃষকরা
সিংড়ায় মসজিদের অর্থ আত্মসাৎ ও মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা
পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা
রাজধানীতে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়
পথচারীদের জন্য ‘কুলিং স্পেস’ তৈরির চেষ্টাও চলছে : বুশরা আফরিন