প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর, ২০২৫ ০১:৩৪:৩৭
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিমের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে নিরাপত্তা জোরদার এবং সংস্কারের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ এখনো নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
গতবছর (৩০ অক্টোবর) রাতে বাস চাপায় প্রাণ হারিয়েছিলেন মাইশা। সেসময় শিক্ষার্থীরা যে ১০ দফা দাবি তুলেছিল, তার বেশিরভাগই আজও অপূর্ণ। সড়ক সংস্কার ও নিরাপত্তাহীনতার এই বেহাল দশায় ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষার্থীরা, যাদের অভিযোগের তীর সরাসরি সংশ্লিষ্ট রোড কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দিকে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাৎক্ষণিকভাবে দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হলেও দশটি দাবির মধ্যে পাঁচটি দাবি পূরণ হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধানের বাকি পাঁচটি দাবি এখনো অবহেলায় পড়ে আছে। পূরণ না হওয়া দাবিগুলোর মধ্যে: বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কে ট্র্যাফিক পুলিশ নিযুক্ত করা এবং ফুটপাথ নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন, অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা বৃদ্ধি এবং ক্যাম্পাসের সকল অভ্যন্তরীণ সড়ক মেরামত ও সংস্কার করা।
সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রিপন মন্ডল বলেন, "আমাদের বোন মাইশার মৃত্যুর পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৮ দফা দাবি পেশ করেছিলাম, তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবি ছিল পর্যাপ্ত আলো, ফুটপাত নির্মাণ, ফুটওভার ব্রিজ করার। কিন্তু আমরা লক্ষ করলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু আমাদের দাবিগুলোই না, মাইশাকেই ভুলে গেছে। তার মৃত্যুর ১ বছর পার হলেও প্রশাসন একবারের জন্যও কোনো দোয়া মাহফিল বা স্মরণে কোনো কিছুই করেনি। আমাদের আর কোনো ভাই বোনকে সড়কে প্রাণ দিতে যেন না হয় তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে আমরা সেই আশাবাদ ব্যক্ত করি।"
বরিশাল ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মামুন সুমন বলেন, "জাতীয় মহাসড়কের উপর ফুটওভার ব্রিজ করার কোনো নিয়ম নেই। এজন্য একেবারে উপর থেকে অনুমতি নেওয়া এবং এটার ডিজাইন করা সহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করতে একটু দেরি হয়েছে। আমাদের এখন প্রাক্কলন চলছে এরপর টেন্ডার আহ্বান করে কাজ করাতে হবে।" তিনি আরো বলেন, "কিছু কারেকশন ছিল সেগুলোও সংশোধন করতে সময় লেগে গেছে। অন্ততপক্ষে মাসখানেকের অধিক সময় লাগবে কাজ শুরু করতে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসেন ফয়সাল বলেন, "আমাদের প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। খুব দ্রুতই আমরা কাজ শুরু করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।"
উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, "গত সপ্তাহে রোড অ্যান্ড হাইওয়ের যোগাযোগ করার কথা ছিল কিন্তু আমি ফোন দিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলেও তাদের কোনো সাড়া পাচ্ছি না। টাকা এসেছে, কাজও শুরু করতে এসেছিল কিন্তু ছাত্রদের দুই দিকে ল্যান্ডিং দেওয়ার রিজার্ভেশন ছিল। এজন্য নতুনভাবে ডিজাইন মডিফিকেশন করার জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল। সেই ডিজাইন বহু আগে পাশ হয়ে আসছে তবুও তারা তৎপর হচ্ছে না।"
আবু উবাইদা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়