‘রুবিক্স কিউব’ নেপথ্যের কারিগর কে!

প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০৫:১৪:২৪

‘রুবিক্স কিউব’ নেপথ্যের কারিগর কে!

অনলাইন ডেস্ক: রুবিকস কিউব! সব ভাষা, বয়স, স্থান-কালের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে উজ্জ্বল আইকনিক ডিজাইনের 'রং মেলানো' এই পাজল গেমটি। এই গেম খেলার জন্য লাগে না কোনো নির্দেশনা বা প্রশিক্ষণ। যেকোনো জায়গাতেই এ কিউব পকেটে নিয়ে ঘোরা যায়। অগণিত উপায়ে সমাধান করা যায় এই রুবিকস কিউব। এ সবই রুবিকস কিউবের তুমুল জনপ্রিয়তা এবং এর 'বেস্ট-সেলিং' হওয়ার মূল কারণ। বিবিসি অবলম্বনে।

রং মেলানোর অসাধারণ এই পাজল গেমটি আবিষ্কারের পর এরনো রুবিক ধারণাও করতে পারেনি কী যুগান্তকারী আবিষ্কার করে বসেছেন তিনি। 

১৯৮৬ সালে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরনো রুবিক বলেছিলেন, এই কিউব যে এতটা সফলতা পাবে এবং তাকে জগৎজোড়া খ্যাতি এনে দেবে—তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। 

রুবিক আসলে এই কিউব খেলনা হিসেবে নয়, বানিয়েছিলেন তার ছাত্র-ছাত্রীদের শেখানোর উপকরণ হিসেবে। 

১৯৭৪ সালে তিনি 'বুদাপেস্ট কলেজ অভ অ্যাপ্লাইড আর্টস'-এ স্থাপত্যবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন তার ছাত্র-ছাত্রীরা খেলার ছলে জ্যামিতিক ও স্থানিক সম্পর্কগুলো নিয়ে সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে শিখবে। এই সম্পর্কগুলো শেখানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হিসেবে তিনি এই কিউবটি তৈরি করছিলেন। 

স্পর্শ করা যায়, এমন গেম বানাতে চেয়েছিলেন রুবিক। একইসাথে তা হতে হবে বহনযোগ্য। সহজ হওয়ার পাশাপাশি এ গেমে থাকতে হবে এমন কোনো সমস্যা যা সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গাণিতিক বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, জটিল এই গেমটির সমাধান করতে গেলে তাদেরকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। 

বিবিসিকে রুবিক বলেছিলেন, 'সবার আগে আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে। এই গুণটি যেকোনো সমস্যার সমাধানে উপকারে আসে। এছাড়া থাকতে হবে স্থানিক ও ত্রিমাত্রিক স্মৃতি। টুকরোগুলোর অবস্থান মনে রাখতে হবে…চোখ বন্ধ করেই যেন মনে করতে পারেন। আর শুধু ছবি হিসেবে মনে রাখলেই চলবে না, ছবির অর্থও বুঝতে হবে ।'

তার বানানো প্রোটোটাইপটি ছিল ছোট ছোট অনেকগুলো কিউবের সমন্বয়ে গঠিত ষড়ভুজাকৃতির কাঠের কিউব। প্রথমে তিনি ছোট কিউবগুলোর মাঝে ছিদ্র করে ওগুলো রাবার ব্যান্ড দিয়ে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সে চেষ্টা বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর একটি গোপন কৌশল ব্যবহার করেন রুবিক। ওই কৌশলে প্রতিটি টুকরোকে আলাদাভাবে বাঁকানো এবং ঘোরানো সম্ভব হয়। কিউবের প্রতি পাশে তিনি একটি নির্দিষ্ট রং ব্যবহার করেন, যাতে ঘোরানোটা সহজে দেখা যায়। 

এরপর তিনি পুরো কিউবটিকে ইচ্ছেমতো ঘোরাতে শুরু করেন, যাতে রংগুলো মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। এবার কিউবটিকে তিনি পুরোনো বা আদি অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন, যেখানে একই রঙের সব ছোট কিউব একপাশে থাকবে। 

প্রথমবার এই কিউবের সমাধান করতে প্রায় এক মাস লেগে যায় এরনোর। এর মধ্য দিয়ে তিনিই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রুবিকস কিউবের সমাধান করেন। ধারণা করা হয়, মাত্র ১ শতাংশ মানুষ কোনো ধরনের সাহায্য ছাড়া এর সমাধান করতে পারে। 

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এরনো স্বীকার করেন, পরবর্তী জীবনে তার রুবিকস কিউব সমাধানের দক্ষতা কিছুটা কমে আসে। 'আমি খুব একটা দ্রুত নই। নিয়মিত প্র্যাকটিস করলে মিনিটখানেকের মধ্যে কিউব মিলাতে পারি। তবে এখন আর প্র্যাকটিস করি না। বহু বছর আগে আরও দ্রুত মিলাতে পারতাম।'

ঠিক এই জায়গাতেই লুকিয়ে আছে এই কিউবের আকর্ষণ। সাদা চোখে দেখতে সহজ এই গেম মানুষকে নেশাদ্রব্যের মতো টানে, কিন্তু খেলতে বসলে পাজল মিলাতে না পেরে ভয়ানক হতাশায় পেয়ে বসতে পারে।

রুবিকস কিউবের সেই পুরোনো জৌলুশ এখন আর নেই। কিন্তু তারপরও বর্তমান সংস্কৃতিতে স্থায়ী প্রভাব রয়েছে এ কিউবের।


প্রজন্মনিউজ২৪/এএন

এ সম্পর্কিত খবর

সনদ বাণিজ্য: সরানো হল কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে

চীনে অ্যাপ স্টোর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ সরিয়ে নিল অ্যাপল

সনদ বাণিজ্যে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী গ্রেপ্তার

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন স্মার্ট সিটিজেন : চবি উপাচার্য

ঝিনাইদহে ইটভাটার ট্রাক্টর চাপায় কলেজশিক্ষক নিহত

৯৬ হাজার ৭৩৬ পদে শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

জামায়াতকে আবারও কাছে টানছে বিএনপি

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান - প্রতিমন্ত্রী

পবিপ্রবির পাঁচ শিক্ষার্থী হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের গুণগত মান ক্ষুন্ন হয়েছে: এনডিআই-আইআরআই

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ