ইসলামে নারীর অধিকার

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১১:৫৬:১৬

ইসলামে নারীর অধিকার

প্রাক-ইসলামিক যুগে কন্যাসন্তানদের অবস্থা ছিল খুবই নাজুক। কন্যাসন্তানদের পিতা হওয়াকে অপমানজনক মনে করা হতো। কারো কন্যাসন্তান জন্ম নিলে সে খুবই মর্মাহত হতো; এমনকি কেউ কেউ তাকে হত্যাও করে ফেলত। এ অবস্থায় আরবের বর্বরতার অন্ধকার যুগের নারীদের প্রতি অমানবিক নির্যাতন নিষিদ্ধ করে ইসলাম যে প্রয়োজনীয় বিষয়ে নারীদের ন্যায়সংগত অধিকার প্রদান করেছে তা নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

শিক্ষাগত অধিকার: ইসলামধর্মে জ্ঞানার্জনকে অতীব গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। কোরআন শরিফের সুরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ হওয়ার মধ্য দিয়ে কোরআন শরিফ অবতীর্ণ হওয়া শুরু হয়। পড়া অর্থাৎ জ্ঞান অর্জন করার নির্দেশনা দিয়ে ইসলামের শুভ সূচনা। জ্ঞান অর্জন সম্পর্কে কোরআন শরিফে আরো বলা হয়েছে, ‘যারা জানে (জ্ঞানী) আর যারা জানে না (জ্ঞানী নয়) তারা কি সমান?’(সুরা জুমার, আয়াত : ৯) মুসলমানদের জ্ঞানার্জন করার জন্য হাদিসে শুধু খুব উৎসাহই প্রদান করা নয়, অবশ্য কর্তব্য বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজ বা অবশ্য কর্তব্ (ইবনে মাজাহ)। অর্থাৎ পুরুষের যেমন শিক্ষার অধিকার আছে, তেমনি নারীরও শিক্ষার অধিকার আছে, যা উভয়ের জন্য অবশ্যই পালনীয়।

ইসলামে নারীর অর্থনৈতিক অধিকার: ইসলামে পরিবার-পরিজন চালানোর জন্য, ভরণ-পোষণের জন্য নারীর অর্থ-উপার্জনের প্রয়োজন নেই, কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। নারীরা যদি অর্থ উপার্জন করে তাহলে তা তাদের নিজস্ব সম্পদ বলে পরিগণিত হয়। এ সম্পদসহ অন্য উৎস থেকে প্রাপ্ত সম্পদের কর্তৃত্ব শুধু তাদেরই থাকে। তারা তাদের ধন-সম্পদ ইচ্ছামতো ব্যয় করতে পারে। কোরআন শরিফে বলা হয়েছে, ‘পুরুষরা যা উপার্জন করে তা তাদের প্রাপ্য অংশ, আর নারীরা যা উপার্জন করে তা তাদের প্রাপ্য অংশ।’(সুরা নিসা, আয়াত : ৩২) কোরআন ও হাদিসে কোথাও নারীর কাজ করার বাধা-বিপত্তি আরোপ করা হয়নি। তবে শর্ত হলো, এ কাজ শরিয়তের সীমার মধ্যে হতে হবে। অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ ইসলাম দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আল্লাহ প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার জন্য তোমাদের অনুমতি দিয়েছেন।’ (বুখারি)

এ জন্য দেখা যায়, তৎকালে মুসলিম নারীরা অবস্থাভেদে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ, শিল্প ও কারুকর্মে অংশগ্রহণ করতেন। ইসলাম নারীদের পিতা-মাতার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারের অধিকার প্রদান করেছে। এ ব্যপারে কোরআন শরিফে একাধিক আয়াতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কোরআন শরিফের সুরা বাকারা, সুরা নিসা, সুরা মায়েদায় বলা হয়েছে যে নারীরা স্ত্রী হিসেবে, মা হিসেবে, কন্যা হিসেবে, বোন হিসেবে সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার লাভের অধিকারী হবে। এ ছাড়া ইসলামে নারীদের বিয়েতে মোহরানার (দেনমোহর) ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা সম্পদ লাভ করে। এ সম্পদের ওপর একচ্ছত্রভাবে অধিকার শুধু নারীরই আছে।

ইসলামে নারীর পরকালীন কল্যাণের অধিকার: পরকালীন কল্যাণেও পুরুষদের মতো নারীদের অধিকার আছে। কোরআন শরিফে বলা হয়েছে, ‘আর যে সৎকাজ করবে সে পুরুষ হোক বা নারী, যদি সে ঈমানদার হয় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর কারো ওপর বিন্দুমাত্র অবিচার করা হবে না।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১২৪)

এ ব্যাপারে কোরআন শরিফের আরেকটি সুরা নাহলে বলা হয়েছে, ‘পুরুষ বা নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, যদি সে মুমিন হয় তাহলে তাকে আমি দুনিয়াতে পবিত্র জীবন যাপন করাব এবং পরকালের জীবনেও এদের সৎকর্মের বিনিময়ে উত্তম পুরস্কার দেব।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৭)


প্রজন্মনিউজ২৪/এমজে

এ সম্পর্কিত খবর

আ. লীগ নেতারা ও তাদের স্বজনরা দেশ ছেড়ে যাচ্ছে

শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক মে দিবস উৎযাপন

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এপ্রিল ২০২৪ এইচআরএসএস এর মাসিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন।

সম্মানহানির বিচার চেয়ে জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডীনের অভিযোগ

অনুশীলনে চোট পেয়েছেন লিটন

জয় বাংলা ব্লাড স্কিমের আড়ালে সিট দখলের অভিনব কৌশল রাবি ছাত্রলীগের

কুয়েত থেকে আর দেশে ফেরা হলো না জহিরুলের

শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপি সংকল্পবদ্ধ : মির্জা ফখরুল

শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার থেকে অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত : জামায়াত আমীর

মহানবী সা.-এর বাবার ইন্তেকাল হয়েছে যেভাবে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ