মাহমুদউল্লাহ,আজ কত নম্বরে ব্যাট করবেন ?

প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০৩:১২:০১

মাহমুদউল্লাহ,আজ কত নম্বরে ব্যাট করবেন ?

স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং লাইনআপ যেখানে ব্যর্থ, সেখানে ব্যতিক্রম কেবল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যার আবার বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া নিয়েই শঙ্কা ছিল, সেই রিয়াদই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে টাইগারদের সেরা পারফরমার। 

বিশ্বকাপজুড়েই বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার এলোমেলো ছিল। মেহেদী হাসান মিরাজকে কখনো খেলানো হয়েছে তিনে, কখনো সাতে, কখনো চারে আবার কখনো পাঁচেও নামানো হয়েছে। ফলে মুশফিকুর রহিম বা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ব্যাট করানো হয়েছে নিচের দিকে। অথচ এই হতাশায় মোড়ানো বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরিটি হাঁকিয়েছেন সেই রিয়াদই। তাও আবার পরের দিকে নেমে।

মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। অধিনায়কও ব্যাখ্যা দিয়েছেন। 

দেশের বাইরে থেকেও এসেছে সমালোচনা। কেন মাহমুদউল্লাহ ৭ নম্বরে? এমন প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম। পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াসিম আকরাম বলেন, দয়া করে মাহমুদউল্লাহকে ওপরে খেলাও। যখন আপনার মিডল অর্ডার ব্যর্থ হচ্ছে, তখন প্রধান ব্যাটারকে চারে অথবা পাঁচে খেলান। জানি না টিম ম্যানেজমেন্ট কী ভাবছে। কেন মাহমুদউল্লাহ ৭ নম্বরে? আশা করি কেউ এর কারণটা আমাকে ব্যাখ্যা করবে। যদি তিন উইকেট চলে যায়, মাহমুদউল্লাহকে পাঠাও, সে এক প্রান্ত আটকে দেবে।

ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ধর্মশালায় আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে স্বপ্নটা আরও বড় করে দেখতে থাকেন টাইগাররা। তবে এর পরই যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজতে থাকে বাংলাদেশ দল। এর পর আরও ছয়টি ম্যাচ খেলেন সাকিবরা, তবে আর জয়ের দেখা পাননি তারা। উলটো প্রতি ম্যাচেই হেরেছে বড় ব্যবধানে। সেসব হারের কারণ হিসেবে দেখা হয় ব্যাটারদের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে। প্রতি ম্যাচে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলার ব্যাটিং লাইনআপ। লিটন, তামিম, শান্ত থেকে শুরু করে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সবাই প্রতিপক্ষের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন। 

শুধু ব্যতিক্রম ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। হিমালয় পর্বতের মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়ে গেছেন প্রতিটি ম্যাচে।

চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচ খেলে পাঁচ ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন তিনি। এর মধ্যে এক সেঞ্চুরি এবং একটি হাফ সেঞ্চুরিতে করেন ২৭৪ রান, যা চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন অপরাজিত ৪১ রানের ইংনিস। এর পর তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে করেন ৪৬ রান। চতুর্থ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা দেওয়া ৩৮২ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৫৮ রানে যখন ৫ উইকেট হারিয়ে দল বিপর্যয়ের মুখে তখন দলের ঢাল হয়ে উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকেন রিদায়। সেই সঙ্গে তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় শতক। খেলেন ১১১ রানের এই হার না মানা ইনিংস। 

মাহমুদউল্লাহকে আজ শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচে কত নম্বরে নামানো হয় সেটি নিয়ে কথা উঠেছে। ক্রিকেটবোদ্ধারা তাকে তিন চার কিংবা পাঁচে নামানোর কথা বলেছেন। তবে একাদশে নামের ক্রম যেভাবে দেখানো হয়েছে, তাতে মাহমুদউল্লাহকে আজও ছয়ে ব্যাট করার জায়গায় রাখা হয়েছে। যদিও পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনের রেওয়াজ ক্রিকেটে রয়েছে।

এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন তিনি। এবং চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেন ৫৬ রানের ইনিংস।

অথচ বিশ্বকাপের আগে বিশ্রামের নাম করে দল থেকে বাদ দেওয়া হয় এই দলের এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে। যদিও তিনি কিছুটা অফ ফর্মে ছিলেন। তবে সুযোগ না দিয়ে বয়সের অজুহাত দেখিয়ে তাকে বিশ্বকাপ দলের না রাখার পরিকল্পনা করা হয়। তখন অনেকেই তার ক্যারিয়ারের সমাপ্তি দেখে ফেলেছিলেন। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও ছিলেন না তিনি। কিন্তু আশা হারায়নি ৩৭ বছর বয়সি এই সাইলেন্ট কিলার। এর পর বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে ঘরে মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে মাঠে ফিরেন তিনি। 

র্দীঘদিন পর মাঠে ফিরেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৪৯ রান। সেই ৪৯ রানের ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে জানান দেয় ফুরিয়ে যাননি তিনি। এর পর নিউজিল্যান্ডেরন বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে করে ২১ রান। এর পর নানান কল্পনা-জল্পনা শেষে ফিরেন বিশ্বকাপ দলে। বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচেই নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন তিনি। ভারতে গোটা দল যখন অফ ফর্মে তাদের মধ্যে এক মাত্র ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে রিয়াদকেই। যাদের পরিবর্তে মাহমুদউল্লাহকে দলের বাইরে রাখা হয়েছিল তাদের ছাপিয়ে এভাবে ফিরে আসাটা চমকের থেকে কোনো অংশে কম নয়।

বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ২০০৭ সালের ২৫ জুলাই কলম্বোয় শ্রীলংকার বিপক্ষে অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। অভিষেকেই জানান দেন তার দক্ষতার। প্রথম ম্যাচেই নিজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেন সবাইকে। ৫ ওভার বোলিং করে ২৮ রানের শিকার করেন ২ উইকেট, আর ব্যাট হাতে করেন ৫৪ বলের বিনিময়ে করেন ৩৬ রান। এর পর আর ঘুরে তাকাতে হয়নি তাকে। বিভিন্ন সময় দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে লড়তে দেখা গিয়েছে তাকে, শেষ দিকে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে জিতেয়েছে অনেক ম্যাচও। 

এ ছাড়া বিশ্বকাপে টানা ১৭ ম্যাচে ন্যূনতম ২০ রান করেছেন তিনি। এই তালিকায় তার পরে আছে ক্রিকেট বিশ্বের কিংবদন্তি সব নাম। বিশ্বকাপে টানা ১৩ ম্যাচে ন্যূনতম ২০ রান করে তালিকায় দুইয়ে আছেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ম্যাথু হেইডেন, তিনে দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স (টানা ১২ ম্যাচ)। তাদের পরে আছেন লংকান কিংবদন্তি অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও অজি গ্রেট রিকি পন্টিং। দুজনই টানা ১১ ম্যাচে করেছেন ন্যূনতম ২০ রান।


প্রজন্মানিউজ২৪/এসআই
 

এ সম্পর্কিত খবর

খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটিতে টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির পরিদর্শন এবং "সেন্টার অব এক্সিলেন্স" এর উদ্বোধন

পবিপ্রবি ও ভারতের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি

জীববিজ্ঞানের অনুবাদমূলক গবেষণা নিয়ে রাবিতে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজিত

নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হাবিপ্রবি কেন্দ্রের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা

আইনমন্ত্রীর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার না বাংলাদেশের

শিশু-কিশোরদের সঙ্গে রাস্তায় ভিজলেন মেয়র আতিক

এমন ভুল বারবার করতে চাইবে পাঞ্জাব!

বৃষ্টি নিয়ে সুসংবাদ দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর

তালাকের পরও স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ, ছেলের হাতে খুন হলেন বাবা

ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ নিহত ১৫

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ