প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ০৬:০৬:৫৩
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ঘুষ বাণিজ্য দুর্ণীতির আখড়াই পরিনত হয়েছে। এখানে ঘুষ ছাড়া হয়না কোনো দলিল রেজিস্ট্রি, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগিদের। এখানে ঘুষের বিনিময়ে জাল কাগজপত্রে জমির শ্রেণী অহরহ পরিবর্তন করা হচ্ছে। বাজারমূল্যের চেয়ে কম মূল্য (আন্ডার ভেল্যু) দেখিয়ে জমির দলিল করা নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সাইফুদ্দিন বাবুল (সনদ নং-২৯৭১) এবং মাকসুদুর রহমান মামুনের (সনদ নং-৩৬০৭) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় এসব অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের দুজনের সনদ বাতিল করা হয়েছে।
সনদ বাতিল করা হলেও সাইফুদ্দিন বাবুল বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হওয়ায় এখানো তার দাপটে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। আর এসব অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তরা যুক্ত থাকায় তারা সনদ বাতিল হওয়া এই লেখকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
নোয়াখালী জেলা রেজিস্টারের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে বাজারমূল্যের চেয়ে কম মূল্য (আন্ডার ভেল্যু) দেখিয়ে জমির দলিল সম্পাদন করায় সাইফুদ্দিন বাবুল ও মাকসুদুর রহমান মামুন নামের দুই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদক মামলার তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধন অধিদপ্তরে ০০.০১.৭৫০০.৬২৪.০১.১৯৩.১৭/নোয়াখালী/১২৭৮, তারিখ-১০.০১.২০২৩ খ্রিঃ নং স্মারকে অভিযুক্তদের সনদ বাতিলের জন্য পত্র প্রদান করে। নিবন্ধন অধিদপ্তর ওই পত্রের আলোকে অভিযুক্ত সাইফুদ্দিন বাবুল ও মাকসুদুর রহমান মামুনের দলিল লেখার সনদ বাতিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় ঢাকা’কে অবহিত করার জন্য গত ১৬ জানুয়ারী নোয়াখালী জেলা রেজিস্টারকে নিদের্শ প্রদান করেন। ওই নিদের্শনা বাস্তবায়ন করে গত ৩১ জানুয়ারী জেলা রেজিস্টার অভিযুক্তদের সনদ বাতিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ে চিঠি প্রেরণ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক জানান, বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির সভাপতির পদ নিয়ে সাইফুদ্দিন বাবুল দীর্ঘদিন সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রভাব খাটিয়ে আসছে। তার একক আধিপত্য বিস্তারে সাধারণ দলিল লেখকরা অসহায়। অফিসের কর্মকর্তাদেরও সে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ম্যানেজ করে রেখেছেন। তার এবং তার সহকারীদের দলিল সম্পাদনের সময় অফিসের প্রধান সহকারী এবং সাব-রেজিস্টার কোন কিছুই দেখেন না। চোখ বন্ধ করে দলিল সম্পাদন করে দেন। অথচ সাধারণ দলিল লেখকদের ক্ষেত্রে বিন্দু-ঃ পর্যন্ত দেখেন।
দলিল লেখকরা আরো জানান, বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে ২০১৬ সালে। ৩ বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা, কিন্তু সাইফুদ্দিন বাবুল বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলীয় প্রভাবে পুরো সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে জিম্মি করে রেখেছেন। গত সপ্তাহে অনিয়ম-দুনীর্তির দায়ে তার সনদ বাতিল করা হলেও এখনো সেই আগের মতোই দাপটের সঙ্গে তার অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছেন। শুধু পরিবর্তন হয়েছে দলিল লেখকের নাম, সনদ বাতিলের পর তিনি দলিলে তার সহকারীদের নাম ও সনদ নাম্বার ব্যবহার করছেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারী পত্রিকায় ‘নোয়াখালী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ ছাড়া রেজিস্ট্রি হয় না দলিল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে সাংবাদিকদের কাছে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে সম্পাদিত হওয়া একটি দলিল পৌঁছায় ভুক্তভোগীরা। ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর সম্পাদিত হওয়া দলিল নং-১১৬৮৩। ওই দলিলের মূল কাগজপত্রে জমির শ্রেণী ছিল নাল, কিন্তু দলিল সম্পাদন করার সময় দাতা-গ্রহিতা ও দলিল লেখক হাজী মো. আবুল হাসেম জমির শ্রেণী পুকুর দেখিয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে কম মূল্য (আন্ডার ভেল্যু) দেখিয়ে জমির দলিল সম্পাদন করেন।
দলিল লেখকদের কল্যাণে গড়ে তোলা দলিল লেখক সমিতির নেতাদের চত্রছায়ায় এ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিনিয়তই ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে সরকারের রাজস্ব, লুটে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
সনদ বাতিলের বিষয়ে আপনি জানেন কিনা এমন প্রশ্নে অভিযুক্ত সাইফুদ্দিন বাবুল মুঠোফোনে বলেন না, আমি কিছুই জানিনা। এসব বিষয়ে পরে কথা বলবো।
সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে বলেন, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি সাইফুদ্দিন বাবুলসহ দুইজনের দলিল লেখার সনদ বাতিল করা হয়েছে। সনদ বাতিলের পর তাদের কোন দলিল রেজিস্ট্রির জন্য আমার অফিসে আসেনি। সমিতিতে যদি তিনি প্রভাব খাটায়, সেটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা সনদ বাতিল হওয়া লেখকদের দলিল সম্পাদনের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছি।
নোয়াখালী জেলা রেজিস্টার আবদুল খালেক মুঠোফোনে বলেন, জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে দলিল লেখায় দুদকের করা মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাইফুদ্দিন বাবুলসহ দুইজনের দলিল লেখার সনদ আপাতত বাতিল করা হয়েছে। সনদ বাতিলের চিঠি দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।
প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ
৭ দাবিতে কুবি’র তিন দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা
ইসরায়েল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবিতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন
টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশেই থাকবে : শিল্পমন্ত্রী
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত জ্যামাইকার
ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
জলবায়ু পরিবর্তনের মূল আঘাত যাচ্ছে এশিয়ার ওপর দিয়ে: জাতিসংঘ
পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা
খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় বন্দি করা হয়েছে তা সর্বজনবিদিত
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once