প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারী, ২০২৩ ১০:২৯:১৮
সামিদুল ,বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জে পিকনিক ও মোবাইল ফোন কেনার টাকা জোগাতে টার্গেট করা হয় বাই সাইকেল অতঃপর খুন করা হয় তারই সহপাঠী স্কুল ছাত্র আবু হুরায়রা (৯) কে। এঘটনায় হত্যাকারী ৫ জনকে আটক করেছে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ।
সোমবার (১৬জানুয়ারি) বেলা ২টায় এ বিষয় নিয়ে শিবগঞ্জ থানা প্রাঙ্গণে প্রেসব্রিফিং করেন, শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুরুল আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মোকামতলা পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) আশিক ইকবাল, থানা উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরান হোসেন।
প্রেসব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে ওসি সাংবাদিকদের বলেন, শিবগঞ্জ থানাধীন সৈয়দপুর ইউনিয়নের কড়িবাড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের মনজুরুল ইসলামের পুত্র আবু হুরায়রা। সে স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণীতে পড়েন। স্কুলে যাওয়া আসার জন্য পরিবার থেকে তাকে একটি নতুন বাইসাইকেল কিনে দেওয়া হয়।
ওই গ্রাম থেকে স্বপ্নপুরী যাওয়ার জন্য একটি পিকনিকের আয়োজন করা হয়। পিকনিক করতে পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় তারা ৫ কিশোর বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নেন তার সহপাঠী আবু হুরায়রাকে হত্যা করে তার নতুন সাইকেল বিক্রি করে পিকনিক ও নতুন একটি মোবাইল ফোনের টাকা জোগান দেবেন।
এমন সিদ্ধান্তের একপর্যায়ে তারা রবিবার (১৫জানুয়ারি) হুরায়রাকে টার্গেট করেন।
এরপর তারা স্কুলের টিফিনের সময় হুরায়রাকে জঙ্গলে বানর দেখানোর কথা বলে সুকৌশলে অপহরণ করেন ওই কিশোরেরা। এরপর কালক্ষেপণ না করে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে তারা শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বড়িয়াহাট বজলুর মোড়ের বাঁশঝাড়ে ফেলে সাইকেল নিয়ে চলে যায়। এদের ভিতর চতুর ১ বন্ধু হুরায়রার সাইকেলটি ডাকুমারা হাটে এক দোকানীর কাছে ২৭০০ টাকায় বিক্রি করেন। এসময় তার গতিবিধি সন্দেহ হলে দোকানী বলেন, সাইকেল এখানে থাক তোমার অভিভাবকে ডেকে এনে টাকা নিয়ে যাও। এ কথা শোনার পর সেখান থেকে সে ভয়ে সটকে পড়েন।
এদিকে হুরায়রা স্কুল ছুটির পর বাড়িতে না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন৷ বাড়ির আশপাশ ও সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটিকে পাওয়া যায় না। পরে তারা থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত জিডি করেন। এর একপর্যায়ে তারা ডাকুমারা হাটে হুরায়রার বাইসাইকেল দেখতে পেয়ে দোকানীর কাছে জিজ্ঞেস করলে দোকানী বলেন, এক কিশোর বিকেলের দিকে বাইসাইকেল বিক্রি করে গিয়েছে। পরে ওই কিশোরকে আটক করে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ।
স্কুলে থেকে হুরায়রা কে ডেকে নেওয়ার ঘটনার তদন্তে সম্ভাব্য সময়ের সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।
৫বন্ধু হুরায়রার স্কুলের আশেপাশে চলাফেরার সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদেও পেশাদার খুনির মত মুখলেননি হুরায়রার এই ৫খুনি। তাতেও হাল ছেড়ে না পুলিশ। পরে শিবগঞ্জ থানার (ওসি)র জেরার মুখে একপর্যায়ে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন।
ওসি মনজুরুল আলম আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে ওই ৫ কিশোর জানান, তারা পিকনিক ও মোবাইল ফোন কেনার অর্থ জোগাতে হুরায়রা কে বানর দেখার কথা বলে ডেকে নিয়ে হত্যা করে তার সাইকেল বিক্রি করতে চেয়েছিল।
আসামিরা কিশোর বয়স হওয়ায় তাদের নাম পরিচয় আইনি বিধিনিষেধ থানায় তাদের নাম প্রকাশ করা যায়নি। তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় জেল হাজতে পাঠানো হবে।
শিশু হুরায়রার লাশ উদ্ধার করে রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে৷ এ ঘটনায় তার বাবা মুনজুরুল ইসলাম বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
প্রজন্মনিউজ২৪/এ আর