করোনা নিয়ে চীনের তথ্য কী সঠিক?

প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল, ২০২০ ০১:৫৭:১২

করোনা নিয়ে চীনের তথ্য কী সঠিক?

করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হয় চীনে। ভাইরাসটি সেখানে নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বলে দাবি করছে দেশটি। অধিকাংশ জায়গায় ধীরে ধীরে চলাচলের অনুমতি দিচ্ছে প্রশাসন। আগামী সপ্তাহে প্রথমবারের মতো বাইরে যেতে পারবেন উহানের মানুষজন, যে শহর দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে লকডাউন ছিল। এবং এ শহরেই গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। পরবর্তীতে শহরটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। যদিও সেখানকার কর্মকর্তারা এ বিষয়ে এখনও বেশ সতর্ক। তাই নাগরিকদের বাইরে যেতে নিরুৎসাহিত করছেন। তাদের এই ভয়ও আছে, সামান্য উদাসীনতার সুযোগে করোনা ভাইরাস যেন আবার না ফিরে আসে।

চীন যখন করোনা ভাইরাসের দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে। তখন বিশ্বজুড়ে চীন সম্পর্কে নতুন নতুন প্রশ্নও উঠছে। দেশটিতে আক্রান্ত ও মারা যাওয়া সংখ্যা, যা চীনের সরকার জানিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবার এমন প্রশ্নও উঠছে যে এ প্রাদুর্ভাব চীন সত্যিই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে কি?

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং অবশ্য এমন প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, এ কথা বলে দ্বিমত পোষণ করলেন এবং এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানালেন। তিনি জানান, করোনা ভাইরাস নিয়ে চীন ‘উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী তথ্য দিয়ে এসেছে বিশ্বকে।’ 

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানব স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রশ্নে আমরা অভ্যাসগতভাবে মিথ্যাবাদী রাজনীতিকদের চেয়ে বরং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, মহামারী ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের কথাই শুনেছি। দেখুন, এই তো কয়েকদিন আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জেনেভায় সংবাদ সম্মেলন করে ‘চীন অস্বচ্ছ তথ্য’ দিয়েছে, এমন অন্যায্য অভিযোগকে খণ্ডন করেছেন।’

এ ধরনের প্রশ্ন উঠায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেন, নিজেদের দেশ যখন চরম সংকটে রয়েছে, তখন তারা দোষ অন্যের কাঁধে চাপাতে মরিয়া। তিনি বলছেন, ‘জনসাধারণের স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতি করা অনৈতিক ও অমানবিক। আমি আশা করব, তারা আর কোনো সময় নষ্ট না করে যেন করোনা মোকাবেলার দিকে মনোযোগী এবং আমেরিকান মানুষকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয়।’

অবশ্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, চীনের বাণিজ্যিক সংবাদপত্র কাইজিনও কিছুদিন আগে এক প্রতিবেদনে দাবি করে, করোনা ভাইরাসের কারণে মৃত্যুবরণকারীদের যে তালিকা উহান কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেছে, মোট শবাধারের সংখ্যা তার চেয়ে কয়েক হাজার বেশি। তবে এটাও ঠিক, ২৫ জানুয়ারি থেকে ১১ মিলিয়ন মানুষের শহর উহানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অফিশিয়াল কার্যক্রম বন্ধ ছিল, কাজেই করোনা ভাইরাস ছাড়া অন্য রোগে মারা যাওয়া মানুষও শবাধারের মধ্যে থাকতে পারেন। আবার মারা যাওয়া মানুষের মধ্যে এমনও রয়েছেন, যারা করোনা ভাইরাসের পরীক্ষাও করাতে পারেননি।

তবে ভাইরাসটি চীন থেকে ছড়ালেও বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬৭৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৬১৬ জনের। চীনে আক্রান্ত ৮১ হাজার ৬৬৯, মারা গেছে ৩ হাজার ৩২৯ জন। ইতালিতে ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৪৮ জন আক্রান্ত, বিপরীতে মারা গেছে ১৫ হাজার ৮৮৭ জন। এখন পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে এবং আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে।

এছাড়া স্পেনে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৪৬ জন আক্রান্ত, আর ১২ হাজার ৬৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জার্মানিতে ১ লাখ ১২৩ জন আক্রান্ত, ১ হাজার ৫৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফ্রান্সে আক্রান্ত ৯২ হাজার ৮৩৯, মারা গেছে ৮ হাজার ৭৮ জন। ইরানে আক্রান্ত ৫৮ হাজার ২২৬, মারা গেছে ৩ হাজার ৬০৩ জন। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ৪৭ হাজার ৮০৬, মারা গেছে ৪ হাজার ৯৩৪ জন।

প্রজন্মনিউজ২৪/নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ