আবারো ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক!

প্রকাশিত: ০৬ মার্চ, ২০১৯ ০৩:০৬:২৩ || পরিবর্তিত: ০৬ মার্চ, ২০১৯ ০৩:০৬:২৩

আবারো ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক!

শীত শেষে আবারো ফিরে এসেছে বৃষ্টি। আর বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বাসা বাড়ীতে জমে থাকা পানিতে বাড়ছে মশার উপদ্রব। এরই মধ্যে রাজধানীতে বাড়তে শুরু করেছে মশার উপদ্রব। এতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে নগরবাসীর জীবন। দিনে রাতে চলছে মশার আধিপত্য। এতে ঢাকার বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে ডেঙ্গু ‍ও চিকনগুনিয়ার আতঙ্ক।

হঠাৎ করেই মশার এমন উপদ্রব বাড়লেও তা নিরসনের নজর নেই দুই সিটি কর্পোরেশনের কর্তাব্যক্তিদের। নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশন সময় সময় স্প্রে করলেও মশার স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, অপরিকল্পিত নগরায়নই মশা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তবে মশার উপদ্রব কমাতে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

মশার উৎপাতে বিঘ্ন ঘটছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা। সন্ধ্যার আগে দরজা জানালা বন্ধ করেও মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছেনা। আবার মশারির ভিতর মশা মারতে গিয়ে রাতের ঘুম নষ্ট করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরান ঢাকার নারিন্দা এলাকার মেসে থাকা শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, রাজধানীতে মশার যন্ত্রণা এতটাই বেড়েছে যে, নামাজ পড়তে গেলে নাকে মুখে মশা ডুকে পড়ে। এমনকি রাতে ঘুমানোর সময় ফ্যান ছেড়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়েও মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছেনা।

এখন মশার উৎপাত নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে গত ২০১৭ এবং ২০১৮ বছরের মত ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। একই মেসে থাকা সিপাত মাহমুদ নামে আরেকজন শিক্ষার্থী  তার হাতে পায়ে মশার কামড়ের কিছু চিহ্ন দেখিয়ে বলেন, মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মশারি কিনেও রক্ষা পাওয়া যাচ্ছেনা।

একই এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, এবারের মত মশার উৎপাত আমার জীবনে আমি আর কখনো দেখি নাই। কয়েল দিয়েও তাড়ানো যাচ্ছে না। শুনেছি মশা তাড়ানোর জন্য এবার আগের তুলনায় বাজেট অনেক হয়েছে।

তাহলে কি মশার বাজেট বৃদ্ধির সাথে সাথে মশার প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে? অভিযোগ করে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের বাজেট বৃদ্ধি পেলেও মশা নিধনের দায়িত্বে থাকা লোকদের ফগার মেশিন নিয়ে বছরে দুই একবার এলাকায় দেখা যায়। আবার তারা প্রধান সড়কে স্প্রে করলেও গলির ভিতর ঢুকে স্প্রে করে না। এসব বাজেট নিয়ে জনগনের কাছে কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় কোন পথে কি ব্যয় হচ্ছে তার খোঁজ খবর কেউ রাখে না। এরকম সিপাত আর রফিকের মত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার লোকজনের কাছ থেকে একই অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

 তারা বলেন, দিন শেষ না হতেই কানের কাছে মশার শো শো শব্দ শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে বসতে পারে না। সামনে এই মাস পরই শুরু হবে এইসএসসি পরীক্ষা। কিন্তু মশার যন্ত্রনায় ‍শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে বসতে পারছে না। মশারির ভিতরেও শিশুরা থাকতে পারছেনা। প্রচুর পরিমানে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে। মশার উৎপাত এমন পর্যায়ে পোছালো যে, হযরত শাহাজালাল বিমানবন্দরে বিমান উড্ডয়নেও বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। বিমানবন্দরে অবস্থানরত কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করে মশার কামড়ে তারা টিকেট কাউন্টারে অপেক্ষা করতে পারছেনা।

দ্যা গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় ঐ বছর দেশে সাত হাজার চারশ পঞ্চাশ জন ডেঙ্গু  রোগীর সংখ্যা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন মারা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে মশক নিয়ন্ত্রনের জন্য ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের ‍(ডিএসসিসি)  বাজেট ছিল ১০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেট বাড়িয়ে করা হয় ১১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে বাজেট ছিল ১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বাজেট ছিল ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে চলতি অর্থ বছরে তা বাড়িয়ে ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা করা হয়।

অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে ১০ কোটি টাকা এবং ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ১৪ কোটি টাকা বাজেট ছিল। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে এটি বাড়িয়ে ২৩ কোটি ২৫ লাখ করা হয়েছিল। চলতি অর্থ বছরে কিছু কমিয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়।

জনসাধারনের মনে প্রশ্ন তাহলে এই বাজেটের টাকা কোথায় যায়?

উল্লেখ্য, ঢাকা শহরের মশার উপদ্রব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট! রাজধানীর বায়ু দূষণ নিয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী একটি মামলার শুনানানিতে আদালত বলেছেন, মশার জন্য মানুষের স্বস্থ্যগত সমস্য হচ্ছে। মশার প্রর্দুভাব দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি বায়ু দূষন রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়র ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফের প্রতিবেদন দাখিল করতেও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

 

প্রজন্মনিউজ২৪/তারেক আজিজ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ