আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে গণঅধিকারে গায়েবানা জানাজা

প্রকাশিত: ০৪ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:৪৫:৫১

আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে গণঅধিকারে গায়েবানা জানাজা

মিনহাজ, নিজস্ব প্রতিবেদক:  ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ও পরবর্তী হরতাল-অবরোধে নিহতদের স্মরণে গায়েবানা জানাজা ও আহতদের জন্য দোয়ার আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ।

শুক্রবার বিকাল ৪:৩০ টায় পুরানা পল্টন আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে গায়েবানা জানাজা ও দোয়া পূর্বক বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন,"শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এভাবে গুলি করে মানুষ হত্যা করলো ,আহত করলো, আমরা চুপ থাকতে পারি না। এর বিহিত হওয়া দরকার।

গত ২৮ অক্টোবর ছাত্রলীগ-যুবলীগ আমাদের যুব অধিকার পরিষদের নেতা সায়মনের পেটে গুলি করেছে। এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে, শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতা রুবেলকে পুলিশ গুলি করে তার বাম চোখ নষ্ট করে দিছে। গত পরশু আমাদের প্রোগ্রাম শেষে ফেরার পথে গণঅধিকার পরিষদের নেতা উজ্জলকে তুলে নিয়ে পুলিশ নাশকতার মামলা দিয়েছে। বিদেশে থাকে, মারা গেছে এমন মানুষকেও পুলিশ মামলার আসামি করছে। জনগণের সেবক হয়ে পুলিশ এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে  গ্রেফতার করে মানুষকে হয়রানি করতে পারে না। 

প্রশাসনকে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন," মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আপনার বাবা-মাকে গালি শুনাবেন না। মানুষের অভিশাপ নিবেন না। এর জন্য মরার পরও আপনাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হবে।" 

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে নুর বলেন , "আপনি নিজেই বক্তব্যে বলেছে এতো বড় দল , লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মী ,ঐ লাশ পড়ে রইলো ধানমণ্ডিতে। ৭৫ এর নির্মম হত্যাকান্ড নিন্দনীয়, আমরাও নিন্দা জানাই। কিন্তু মনে রাখবেন ৭৫ এ সেদিন কেউ প্রতিবাদ করেনি। আপনার পতন হলেও কাউকে পাশে পাবেন না। বল এখনো আপনার কোর্টে। শান্তি ও সেইভ এক্সিট চাইলে রাজবন্দীদের মুক্তি দিয়ে আলোচনা করে সমঝোতার মাধ্যমে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় উদ্যেগ নিন। অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সুষ্ঠু নির্বাচনের উদ্যোগ নিন।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, ২৮ অক্টোবরে মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য সরকার তার এজেন্টদের মাধ্যমে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করেছিলো। সেদিন একজন যুবদল নেতা ও পুলিশ কনস্টেবল নিহতের ঘটনা দুঃখজনক। আমরা শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছি। বিএনপিও অহিংস ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের করে আসছে। ২৮ অক্টোবরে জনগণের উপস্থিতি দেখে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে যায়। তাই এজেন্টদের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। প্রশাসন চাইলে সাথে সাথেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো। এতে সমাবেশও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়ে যেত। কিন্তু সরকার বিরোধীদের মাঠে দাঁড়াতে দিবেনা। তাই পরিকল্পিতভাবে সমাবেশ বানচাল করেছে।

পরবর্তীতে হরতাল-অবরোধে মধ্যে আন্দোলনকারী দু'জন বিএনপি কর্মী পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে সরকার পুলিশকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করাচ্ছে, জনগণের বুকে গুলি চালাচ্ছে। গণঅধিকার পরিষদ শুরু থেকেই যুগপৎ আন্দোলনের প্রতিটা কর্মসূচি পালন করে আসছে। আন্দোলন সফল না হওয়ার আগ পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল ইব্রাহিম বলেন, আমাদের ওপর যারা অত্যাচার করছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে তাদের রুহের আত্মা মাগফেরাত কামনা করছি। গণঅধিকার পরিষদের তরুণ সাহসী নেতাদের ধন্যবাদ যে, তারা এতো হামলা-মামলার পর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। 

গায়েবানা জানাজা ও দোয়া শেষে একটি মিছিল বের করে গণঅধিকার পরিষদ। মিছিলটি পুরানা পল্টন ঘুরে, নাইটিঙ্গেল মোড়, বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে দিয়ে ফকিরাপুল হয়ে কালভার্ট রোডে এসে শেষ হয়।

গায়েবানা জানাজা ও দোয়ায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, এডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, আরিফ তালুকদার , সহ সভাপতি নিজামউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, রবিউল ইসলাম, জিলু খান, ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ইলিয়াস মিয়া, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন,সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীবসহ দলের নেতাকর্মীরা।


প্রজন্মনিউজ২৪/এসআই

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ