আদালত চত্বরেই ঘুরপাক খাচ্ছে জাপানি দুই শিশুর ভাগ্য

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০১:২৮:২৯

আদালত চত্বরেই ঘুরপাক খাচ্ছে জাপানি দুই শিশুর ভাগ্য

বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুই জাপানি শিশুকে তাদের অজান্তেই বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। বলা হয় কিছুদিন পর মা চলে আসবে।

সন্তানদের টানে দেশে ফিরতেই নানা নিগ্রহের শিকার হন জাপানি মা নাকানো এরিকো। গত দেড় বছর ধরে বাংলাদেশের আদালত চত্বরেই ঘুরপাক খাচ্ছে দুই শিশুর ভাগ্য। এরিকো ও তার বড় মেয়ে শিশু জেসমিন আকুতি জানান, নিজ মাতৃভূমি জাপানে ফিরতে চান তারা।

নাড়িছেঁড়া সন্তানের জন্য মায়ের অশ্রু, আহাজারি, মিনতি। দুই সন্তানের জন্য যে মা নিজ দেশ ছেড়ে ৪ হাজার ৭৬৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন, বিদেশে লড়ছেন শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে।

জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো তার দুই শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে, গত দেড় বছর বাংলাদেশের আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। মায়ের হেফাজতে দুই শিশু জেসমিন ও লায়লাকে রাখার অনুমতি দিয়ে আপিল বিভাগ পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দিলেও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সে নির্দেশ মানা হয়নি আজও।

এরিকো বলছেন, পাকিস্তানের করাচিতে জন্ম নেয়া ইমরান শরীফ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকও। ২০০৮ সালে ১১ জুলাই জাপানে এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান ইমরান শরীফ জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন।

১২ বছরের সংসারে তাদের ঘরে আসে তিন কন্যাসন্তান। তবে স্ত্রীকে ডিভোর্সের চিঠি দেয়ার পর, সন্তানদের কাস্টডি নিয়ে জাপানের পারিবারিক আদালতে শুরু হয় মামলা।

মামলা হেরে যাওয়ার পর মেয়েদের পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে, ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাপান পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে পাসপোর্ট তোলেন ইমরান। এরপর স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময়, বড় মেয়ে জেসমিন ও মেজো মেয়ে লায়লাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন তিনি। আর ছোট মেয়ে তাদের কাউকে না পেয়ে জাপানে কাঁদছে।

এ সময় স্ত্রী নাকানো এরিকো ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও করেন। তবে এরিকোর অভিযোগ অস্বীকার করে ইমরান শরীফ জানান, এরিকোই মেয়েদের জাপানে নিয়ে যেতে মারধর করে তাদের দিয়ে পাসপোর্ট করিয়ে নিয়েছেন। তাই সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।

ইমরান শরীফ তার সাবেক স্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘ওনি একজন বিদেশি। এ দেশের নাগরিক না। আর কত মাথায় তোলে রাখব আমরা বলেন।’

যদিও বাবা ইমরান শরীফের অভিযোগ অস্বীকারে করে বড় মেয়ে জেসমিন বলছেন, তার মায়ের বিরুদ্ধে তার বাবা যে অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা। তার মা কখনো প্রতারণা করেননি। এগুলো কোনো বিশ্বাসযোগ্য কথা নয়।

২৩ ডিসেম্বর রাতে ২ সন্তানকে নিয়ে এয়ারপোর্ট গেলে ইমিগ্রেশন পুলিশ ফেরত পাঠায় এরিকোকে। এয়ারপোর্ট থেকেই মেজো মেয়ে লায়লাকে নিজের কাছে নিয়ে যান বাবা ইমরান শরীফ।


প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ