পুনরায় গ্রেফতার হলেন পালিয়ে থাকা দুই ফিলিস্তিনি

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০১:২২:৪৯

পুনরায় গ্রেফতার হলেন পালিয়ে থাকা দুই ফিলিস্তিনি

প্রজন্মনিউজ ডেস্ক: উত্তর ইসরাইলের গিলবোয়া কারাগার থেকে পালানো ফিলিস্তিনি বন্দীদের মধ্যে গ্রেফতারির বাইরে থাকা সর্বশেষ দুই জনকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরের জেনিন থেকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী, অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেত ও পুলিশের যৌথ অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে এক টুইট বার্তায় জানান ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আভিখায়ি আদরায়ি।

টুইট বার্তায় তিনি বলেন, 'দুই নাশকতাকারী, নায়েফ কামামজি ও মুনাদেল ইয়াকুব আনফিয়াত জেনিনে তাদের লুকিয়ে থাকা বাড়ি সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘেরাও করার পর আত্মসমর্পণ করেছে।'

অপর এক টুইট বার্তায় আভিখায়ি আদরায়ি বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা বাড়ির চারপাশে ঘেরাও করে নায়েফ ও মুনাদেলের বের হয়ে না আসা পর্যন্ত গুলি করতে থাকে। পরে তারা নিরস্ত্র অবস্থায় বের হয়ে এলে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সাথে সাথে পালিয়ে থাকা এই দুই বন্দীকে সহায়তা করা আরো দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয় বলে জানান তিনি।

টুইট বার্তায় দুই বন্দীর ছবিও প্রকাশ করেন আভিখায়ি আদরায়ি।

এর আগে গত ৬ আগস্ট উত্তর ইসরাইলের উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত গিলবোয়া কারাগার থেকে সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যায় ছয় বন্দী।

ইসরাইলি কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই বন্দীরা তাদের সেলের টয়লেটের ফ্লোরে খুঁজে পাওয়া এক সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যায়। ২০০৪ সালে কারাগারটি নির্মাণের সময় ওই সেলের টয়লেট পর্যন্ত এই সুড়ঙ্গ করা হয়েছিলো।

কারাগার পালানো ফিলিস্তিনি বন্দীদের আইনজীবীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বন্দীরা গত বছরের ডিসেম্বর থেকে নিজেদের কারাগারের সিঙ্কের নিচে একটি সুড়ঙ্গ খনন শুরু করে। এই কাজে তারা চামচ, প্লেট এমনকি কেতলির হাতলও ব্যবহার করে।

পালিয়ে যাওয়া এই ছয় বন্দী হলেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামি জিহাদের সদস্য মাহমুদ আবদুল্লাহ আল-আরিদা, মোহাম্মদ
কাসিম আল-আরিদা, ইয়াকুব মোহাম্মদ কাদরি, আয়হাম নায়েফ কামামজি, মুনাদিল ইয়াকুব আনফিয়াত ও ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ফাতাহ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডের নেতা যাকারিয়া জুবাইদি।

পালিয়ে যাওয়া এই বন্দীদের সন্ধানে ব্যাপক মাত্রায় উত্তর ইসরাইল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে অভিযান শুরু করে ইসরাইলি
বাহিনী। পাশাপাশি পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের সীমান্ত পেরিয়ে জর্দান যাওয়ার আশঙ্কায় জর্দানি কর্তৃপক্ষের কাছে বন্দীদের সন্ধানের অনুরোধ পাঠিয়েছিলো ইসরাইল।

পরে ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরাইলের ফিলিস্তিনি আরব অধ্যুষিত শহর নাজারেথের কাছে খ্রিস্ট ধর্মীয় পবিত্র স্থান জাবাল কাফাজা থেকে মাহমুদ আল-আরিদা ও ইয়াকুব মোহাম্মদ কাদরিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর পর ১১ সেপ্টেম্বর সকালে নাজারেথের কাছে 'আল-শিবলি' গ্রাম থেকে মোহাম্মদ আল-আরিদা ও জাকারিয়া জুবাইদিকে গ্রেফতার করা
হয়।

এদিকে গিলবোয়া কারাগার থেকে পালানো বন্দীদের সাথে সংহতি প্রকাশে ফিলিস্তিনজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড ঘোষণা করেছে, গিলবোয়া কারাগার থেকে নিজেদের মুক্ত করা ছয় বন্দী ছাড়া অন্য কোনো প্রকার শর্তে ইসরাইলের বন্দীবিনিময় হবে না।

ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড দাবি করছে, ২০১৪ সালে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের সময় চার ইসরাইলি সৈন্য তাদের হাতে আটক হয়েছে।

বন্দী এই ইসরাইলি সৈন্যদের বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে দর কষাকষি চলছে।

এর আগে ২০০৬ সালে গাজা-ইসরাইল সীমান্তে দায়িত্বরত ইসরাইলি সৈন্য গিলাদ শালিতকে অপহরণ করেন ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের সদস্যরা। গিলাদ শালিতের মুক্তির জন্য হামাসের সাথে দীর্ঘ পাঁচ বছরের দর কষাকষির পর ২০১১ সালে এক হাজার ২৭ ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে গিলাদ শালিতকে মুক্তি দেয়া হয়।
সূত্র : আলজাজিরা

প্রজন্মনিউজ২৪/ইমরান হোসাইন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ