রক্তে কেনা ঐতিহাসিক মে

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল, ২০১৯ ০৮:১০:৩৯

রক্তে কেনা ঐতিহাসিক মে

নাবিল মাহমুদ, স্টাফ রিপোর্টার:  আগামীকাল পয়লা মে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় ৮০ টি দেশে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে এ দিনটি পালিত হয় । ১৮৮৬ সালের মে মাসে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের এক ঐতিহাসিক আন্দোলন ও বিসর্জনের সম্মানে এই দিনটি পালিত হয়। সভ্যতার প্রতিটি ইট, বালু ও পাথরে যাদের ঘাম ও রক্ত জড়িয়ে আছে, যে শ্রমিকেরা ছাড়া কখনোই সভ্যতা গড়ে তোলা সম্ভব ছিল না, এখনো নয়, সেই শ্রমিকেরা সুদূর অতীত থেকেই অবহেলিত, লাঞ্ছিত এবং শোষিত। ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের পরও স্বাভাবিক জীবনযাপন, স্বাধীনতা এবং নূন্যতম মর্যাদাটুকুও তাদের কখনোই ছিল না।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে শ্রমিকরা দিনে ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ করলেও তার বিনিময়ে সামান্য মজুরিও পেতেন না। শ্রমিকেরা বুঝতে পারে, মালিক শ্রেণীর এই রক্তশোষণ নীতির বিরুদ্ধে তাদের সংগঠিত হতে হবে। তারা বিশ্রাম, পরিশ্রম, ও বিনোদনের জন্য ৮ ঘন্টা করে সময়কে ভাগ করে নেয়। সে মাফিক ১৮৮০-৮১ সালের দিকে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠা করে নীতিমালা। পরে ১৮৮৬ সালে সংগঠিত হয়ে শক্তি অর্জন করতে থাকে। পরবর্তীকালে, তাদের এই শক্তি সংগঠনে রূপ নেয়। যার নাম দেয়া হয় আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার।  ১৮৮৪ সালে সংগঠনটি ৮ ঘণ্টা দৈনিক মজুরি নির্ধারণের প্রস্তাব পাস করে এবং মালিক শ্রেণীকে এ দাবি মেনে নেয়ার জন্য ১৮৮৬ সালের ১ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়।

কিন্তু  মালিকপক্ষের কাছে শ্রমিকদের এই  দাবির কোনো সাড়া মেলেনি।  পহেলা মে যতই এগিয়ে আসছিল, দুই পক্ষের সংঘর্ষ অবধারিত হয়ে উঠছিল। মালিক শ্রেণি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। এরই মধ্যে পুলিশ  তাঁদের উপর নির্মম নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাই। শ্রমিকদের ওপর গুলি চালাতে পুলিশদের বিশেষ অস্ত্র কিনে দেন ব্যবসায়ীরা। পহেলা মে তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় তিন লাখ শ্রমিক কাজ ফেলে নেমে আসেন রাস্তায়। আন্দোলন চরমে ওঠে।

 ৩ মে, ১৮৮৬ সালে সন্ধ্যাবেলা শিকাগোর‘ হে মার্কেট ’বাণিজ্যিক এলাকায় জড়ো হওয়া শ্রমিকদের দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন কিছু পুলিশ সদস্য। এমন সময় হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণে কিছু সংখক আহত ও ৬ জন পুলিশ মারা যায়।কিন্তু পুলিশের পাল্টা আক্রমণে শ্রমিকদের ১১ টি তাজা প্রাণ ঝরে যায়।পুলিশ হত্যার দায়ে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে  হত্যা মামলার অভিযোগ আনে।

তাদের এই প্রহসনমূলক বিচারে ১৮৮৭ সালের ১১ নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে শ্রমজীবীদের ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে আন্দোলনের নেতা আগস্ট স্পিজ বলেছিলেন, ‘আজ আমাদের এই নিঃশব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা শক্তিশালী হবে।’

কিন্তু এই মিথ্যা বিচারের অপরাধ শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে। ২৬ জুন ১৮৯৩ ইলিনয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিথ্যে ছিল ওই বিচার।  পরে ২৬ জুন, ১৮৯৩ সালে পুলিশ হত্যায় অভিযুক্ত আটজনকে নিরপরাধ বলে ঘোষণা দেয়া হয় এবং শ্রমিকদের ওপর হামলা হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করার দাবি অফিসিয়ালভাবে স্বীকৃতি পায়। আর ১ মে প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবি আদায়ের দিন হিসেবে যা পৃথিবীব্যাপী পালিত হয় প্রতি বছর।

প্রজন্মনিউজ২৪

 

 

 

এ সম্পর্কিত খবর

এক মিনিটেই তাদের বিসিএসের স্বপ্নভঙ্গ

উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীরা প্রভাব ফেলতে পারেন

গাজীপুরে চিরকুট লিখে স্বামী-স্ত্র‌ীর আত্নহত্যা

কাচিয়ায় ৭নং ওয়ার্ড উপনির্বাচনে প্রার্থীর বিরুদ্ধে জ্বিন প্রতারনা মামলার অনুসন্ধানশ্লিপ পাঠিয়েছে সিআইডি

ঘোড়াঘাটে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চাপমুক্ত আওয়ামী লীগ

বাসের সঙ্গে ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘষে নিহত ১ আহত ৩

ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২

ইউএসএ বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে আসতে শুরু করেছেন দুই বাংলার কবি সাহিত্যিকগন

পঞ্চগড়ে হিট স্ট্রোকে প্রাইভেট কার চালকের মৃত্যু

বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে অভিযান, নারীসহ আটক ১২

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ