সরকারি আমলারা না যাওয়ায় অভিমান করেছে জাপানি মেশিন!

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০১:৫৫:২১

সরকারি আমলারা না যাওয়ায় অভিমান করেছে জাপানি মেশিন!

অনলাইন ডেস্ক: কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের ছাপাখানার জন্য সম্প্রতি আট কোটি টাকা দিয়ে একটি ছাপা মেশিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই মেশিন দেখতে কারিগরি বোর্ডের ৫ কর্মকর্তা যেতে চেয়েছিলেন জাপানে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বোর্ডের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোও হয়। কিন্তু চূড়ান্ত অনুমোদন তা আর পায়নি। ফলে আটকে যায় জাপান ভ্রমণ।

মজার বিষয় হলো, এই ৫ কর্মকর্তার মধ্যে বেশির ভাগই হলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা বা আমলা। সবেধন নীলমণি প্রকৌশলী ছিলেন একজনই। আবার মেশিন অপারেটরদের কেউই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। তা অবশ্য হতেই পারে। মেশিন দেখতেই তো যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা, চালাতে তো আর না!

জাপানে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এক অজ্ঞাত সূত্রের দ্বারস্থ হয়ে জানা গেছে, মেশিনটি এই দেখাদেখিকে বর–কনে দেখার মতো করে গ্রহণ করে ফেলেছিল! কিছুটা আবেগী হয়ে গিয়েছিল আর কি। এমনিতেই বাংলাদেশে যাওয়ার কথা শুনে মেশিনটির মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জাগ্রত হয়ে গেছে। তার ওপর আবার, তাকে দেখতে আসছেন আমলারা—এমনটা শুনে মেশিনটি ভাবছিল, বিয়ের আগে বর–কনে দেখার মতো হয়তো তাকেও দেখতে আসছে বিপরীত পক্ষের আত্মীয়রা। ‘প্রেমের টানে জাপানি এখন ঢাকায়’ ঘরানার সংবাদের বিষয়বস্তু হওয়ার জন্যও মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল মেশিনটি। কিন্তু এরপরেই আসে বাংলা সিনেমার সেই মর্মভেদী দৃশ্যের মতো হার্টব্রেকিং নিউজ। মন্ত্রণালয় যে জাপান ভ্রমণের চূড়ান্ত অনুমোদনের ফাইল আটকে দিয়েছে, সেই খবর ইন্টারনেটের বদৌলতে পৌঁছে যায় উদীয়মান সূর্যের দেশে। মেশিনটি আবার বাংলায় প্রকাশিত খবর গুগল ট্রান্সলেট করে জাপানি ভাষায় পড়েও ফেলে। এরপরই অভিমান গাঢ় হয়ে ওঠে। কিশোরীর গাল ফুলিয়ে অভিমানের মতো করে মেশিনটি এখন পুরোপুরি বেঁকে বসেছে। তার বডি এবং মনকে কোনোভাবেই বাগে আনা যাচ্ছে না!

এদিকে এমতাবস্থায় মেশিন কেনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নাকি নতুন উপায় খোঁজার চেষ্টায় আছে। আমলাদের বক্তব্যের বরাতে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছিল, যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে, তারাই নাকি মেশিন দেখাতে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। ওই যেমন কনে দেখার আগে, বরের আত্মীয়–স্বজন কনেপক্ষের বাড়ি দেখতে যায় তেমন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এন্তার মিষ্টি–সমুচার অর্ডারও দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। এখন জাপান ভ্রমণ আটকে যাওয়ায় সেসব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, মেশিনের মন ভেঙে গেছে। এতে করে নাকি বাংলাদেশের ছাপাখানায় বসানোর পর ছাপার মান খারাপও হয়ে যেতে পারে। মন খারাপ থাকলে মেশিনের কত কিছুই তো হতে পারে, তাই না!

সেদিক থেকে একটি বিকল্প প্রস্তাবের কথা কান না পাতলেও শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, মেশিনের অভিমান ভাঙাতে ওই ৫ সরকারি কর্মকর্তাকে যে করেই হোক জাপান পাঠানো প্রয়োজন। একমাত্র তারাই মেশিনের মন ভালো করে দিতে পারবেন। দাবি উঠেছে, যে কৃচ্ছতাসাধনের জন্য সফর আটকে দেওয়া হলো, প্রয়োজনে ডলার ছাপিয়ে হলেও তা আবার খুলে দেওয়া হোক। কারণ এতে পুরো মেশিন সমাজের কাছে বাঙালিদের ভাবমূর্তি হুমকিতে পড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যুগে মেশিনদের কাছে ছোট হওয়ার কোনো মানে হয় না। তাই এখনই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তা না হলে মানববন্ধনের মতো করে জাপানে ‘মেশিনবন্ধন’–এর মতো কর্মসূচী পালন করা হতে পারে। তাতে সমস্যা কমবে বৈ বাড়বে না!

সুতরাং, সুপ্রিয় পাঠক, বুঝতেই পারছেন যে জাপানি মেশিনের অভিমান বর্তমানে কঠিন রূপে পরিণত হয়েছে। এমন ডায়লগও শোনা যাচ্ছে যে—‘ডলার হারালে ডলার পাওয়া যায় রে, মেশিন হারালে মেশিন পাওয়া যায় না!’ এমতাবস্থায় আপনারা কোন পক্ষে যেতে চান, সেটি একান্তই আপনাদের ব্যাপার। তবে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চোখে–মুখে ভালোভাবে পানি ছেটানোর অনুরোধ রইল। কারণ ঘুম ঘুম ভাবের মধ্যে নেওয়া যে কোনো সিদ্ধান্তই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর!


প্রজন্মনিউজ২৪/এএন

এ সম্পর্কিত খবর

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এপ্রিল ২০২৪ এইচআরএসএস এর মাসিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন।

খালে ভাসছে বাঘের দেহ! 

সম্মানহানির বিচার চেয়ে জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডীনের অভিযোগ

ধুনটে সেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নসেবার কমিটি গঠন 

শিক্ষামন্ত্রীসহ সরকারের পদত্যাগের দাবি জানালেন জয়নুল আবদিন ফারুক

ফরিদপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে খাবার পানি, স্যালাইন এবং গামছা বিতরণ অনুষ্ঠিত

সময় তিন অক্ষরের এক ছোট নাম কত মূল্যবান

সিলেট অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা

সিলেট নগরীর সুরমা টাওয়ার থেকে পড়ে সিসিকের এক কর্মচারির মৃত্যু

পিরোজপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী ইঞ্জিনিয়ার নিহত

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ