জাবিতে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০৩:৫০:২৪

জাবিতে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

অনলাইন ডেস্ক: জাবিতে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারসংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেন তাঁরা। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।

 অন্যদিকে বেলা পৌনে দুইটার দিকে ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী। মানববন্ধনে শাখা ছাত্রলীগের উপক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আলিফ আফিসান দীপ বলেন, ‘ধর্ষকের শাস্তি সুনিশ্চিত করতে আমরা কখনোই একজন ধর্ষককে ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের অংশ বলে বিশ্বাস করি না। ধর্ষক কোনো দলের নয়, সংগঠনের নয় ধর্ষকের স্থান জেলের অভ্যন্তরে, ধর্ষকের স্থান সর্বোচ্চ শাস্তির মানদণ্ডে। আমরা বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তাঁর দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের জোরালো দাবি জানাই। কোনো ধর্ষকের স্থান এই ক্যাম্পাসে নেই।’

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রববানী বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্বামীকে হলে জিম্মি করে তাঁর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। আজকে আমি ক্লাসে বলেছি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গজব নাজিল হওয়া উচিত, আমাদের সবার ধ্বংস হয়ে যাওয়া উচিত। ১৯৯৮ সালে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধর্ষকদের বিতাড়িত করেছি। সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরকে খুনিদের মদদ দেওয়ায় তাঁকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু আজকে আমরা আবার দেখতে পেয়েছি আমাদের এই ক্যাম্পাসে একদল নষ্ট মানুষ, যারা ক্ষমতায় বসে আছে, যারা নির্লজ্জ, অসভ্য, যাদের কোনো বোধ নেই, বুদ্ধি নেই, তারা ওই চেয়ার দখল করে বসে আছে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে  আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে  শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ।

গোলাম রাব্বানি  আরও বলেন, ‘প্রায় আড়াই হাজার অছাত্র এখনো ক্যাম্পাসে   রয়েছে। এই ধর্ষণ কোনো বিছিন্ন ঘটনা নয়, যত দিন প্রশাসনের মদদে এই ক্যাম্পাসে অছাত্র, অবৈধ ছাত্র অবস্থান করবে, ছাত্রলীগ নামধারী অছাত্ররা নিয়োগ বাণিজ্য করবে, চাঁদাবাজি করবে, তত দিন এই ক্যাম্পাস থেকে অপরাধ দূর করা সম্ভব নয়। আমরাও উপাচার্যকে বলে দিতে চাই, আমরা অনেক বড় বড় উপাচার্যকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছি। আমরা আপনাকেও বিতাড়িত করে ছাড়ব, যদি আপনারা তাদের বিচার না করেন। আমরা এই ধর্ষকদের ফাঁসি চাই, এই ধর্ষণকারীদের মদদদাতা প্রশাসনের পদত্যাগ চাই, এই ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এই ক্যাম্পাসে কোনো অবৈধ, সন্ত্রাসী, অছাত্র, মাদকব্যবসায়ী থাকবে না। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে প্রয়োজনে আমি শহীদ হয়ে যাব। যেসব হলে প্রাধ্যক্ষ অছাত্রদের দিয়ে হল চালায় তিনি আর প্রাধ্যক্ষ থাকতে পারবেন না।’

অধ্যাপক আনোয়ারুল্লা ভূঁইয়া বলেন, ‘এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ থাকলেও তার কোনো সঠিক বিচার হয়নি।এটি কোনো  বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে থাকে একটা যোগাযোগ, একটা কার্যকারণিক সম্পর্ক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অপরাধের বিচার হয় না। গতকালের ঘটনায় দেশব্যাপী আমার ক্যাম্পাসকে আমার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, পত্রিকার মাধ্যমে লজ্জিত করা হয়েছে, অপমানিত করা হয়েছে। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ বছর ধরে আছি আমি শিক্ষক হিসেবে অপমানিত হয়েছি। এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, কোনো ছলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়া হয়, তাহলে যারা এই ছলচাতুরীর আশ্রয় নেবে, তাদের আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করব।’

গতকাল শনিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, একই বিভাগের সাগর সিদ্দিকী ও হাসানুজ্জামান এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান।


প্রজন্মনিউজ২৪/এফএইচ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ