চায়ের চাহিদা কমায় চার দাম কমেছে, নষ্ট হচ্ছে পাতা

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই, ২০২০ ১২:৩০:১৯

চায়ের চাহিদা কমায় চার দাম কমেছে, নষ্ট হচ্ছে পাতা

 দেশের বাজারে কমেছে চায়ের ক্রেতা। বিক্রি না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে চায়ের পাতা।
দেশের চা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশে চায়ের বড় ক্রেতা টং দোকান এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ। মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মার্চের ২৬ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সব বন্ধ ছিল। এখন দোকান খুললেও বিক্রি আগের মতো নেই। মানুষ দোকানে এসে চা কম খাচ্ছে। ফলে আশঙ্কাজনক হারে চা বিক্রি কমে গেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে চায়ের দাম পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চায়ের দামে মহামারি করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব আন্তর্জাতিক বাজারেও পড়েছে। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে চায়ের কেজি ছিল ৩ দশমিক ৪১ ডলার।
ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনে করোনার প্রকোপ শুরু হলে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দাম কমে ২ দশমিক ৫০ ডলারে নেমে আসে। করোনার প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চায়ের দামে দরপতনও চলতে থাকে। মার্চের শুরুতে দাম আরও কমে ২ দশমিক ২৫ ডলারে নামে।
এরপর কিছুটা দাম বেড়ে মার্চের শেষ সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে চায়ের কেজি ৩ দশমিক ২৫ ডলারে ওঠে। তবে এপ্রিলে আবার দাম কমে যায়। দফায় দফায় দাম কমে জুনে ১ দশমিক ৯০ ডলারে নেমে যায়।
বড় ধরনের এই দরপতনের পর চলতি মাস থেকে আবার চায়ের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) লেনদেন শেষে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি চায়ের দাম দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৫৪ ডলার।

এতে সপ্তাহের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে চায়ের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর মাসের ব্যবধানে ৩৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং বছরের ব্যবধানে ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।

এদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা বছরে ৯ কোটি কেজি। ২০১০ সাল থেকে এ চাহিদা পূরণ করতে চা আমদানি শুরু হয়। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ এক কোটি ১৪ লাখ কেজি চা আমদানি হয়। ২০১৬ সালে আট কোটি ৫০ লাখ কেজি রেকর্ড উৎপাদন করে চায়ের চাহিদা পূরণ করে বাংলাদেশ।

গত বছর (২০১৯ সাল) চা শিল্প ১৬৫ বছরের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের নতুন রেকর্ড গড়ে। বছরটিতে রেকর্ড ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। তার আগের বছর ২০১৮ সালে দেশে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চায়ের উৎপাদন ১৪০ মিলিয়ন বা ১৪ কোটি কেজিতে উন্নীত করতে কাজ করছে চা বোর্ড।

চায়ের উৎপাদন ভালো হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে চা রফতানি করে কিছু আয়ও হচ্ছে। চা রফতানি করে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩৭ লাখ ১০ হাজার ডলার, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৮ লাখ ২০ হাজার ডলার আয় হয়েছে।
টি প্লান্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিপিটিএবি) সদস্য সচিব জহর তরফদার বলেন, এ বছর আমাদের শ্রীমঙ্গলের নিলাম কেদ্রে ২০টি নিলাম অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এখন পর্যন্ত তিনটি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ নিলামে ১৮ হাজার ৭০০ কেজি চা বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের অংশগ্রহণ কমেছে, সঙ্গে চায়ের দামও কমেছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয়। দেশ স্বাধীনের সময় দেশে চা বাগানের সংখ্যা ছিল ১৫০টি। তখন তিন কোটি কেজির মতো চা উৎপাদন হত।
বর্তমানে সারাদেশে বিদেশি কোম্পানি, সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ছোট-বড় মিলিয়ে চা বাগানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৬টি। এর মধ্যে মৌলভীবাজারে রয়েছে ৯২টি চা বাগান। বাকিগুলোর মধ্যে হবিগঞ্জে ২৪টি, সিলেটে ১৯টি, চট্টগ্রামে ২২টি, পঞ্চগড়ে সাতটি, রাঙ্গামাটিতে দুটি ও ঠাকুরগাঁওয়ে একটি। এসব বাগানে মোট জমির পরিমাণ দুই লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৯ একর।
প্রজন্মনিউজ২৪/জহুরুল হক

 

এ সম্পর্কিত খবর

হাবিপ্রবি সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ

৭ দাবিতে কুবি’র তিন দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা

চলতি বছর পবিত্র হজ্জ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

ইসরায়েল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবিতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

বশেমুরবিপ্রবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি: কাদের

অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কৃষকের জনজীবন

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন, সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করুন: প্রধানমন্ত্রী

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ