আজ মাগফিরাতের প্রথম দিন

প্রকাশিত: ০৭ জুন, ২০১৭ ০২:২৫:৫৭

আজ মাগফিরাতের প্রথম দিন

এহসান বিন মুজাহির :খুব দ্রতই শেষ হয়ে গেলো রহমতে ভরা রমজানুল মোবারকের প্রথম দশক। ক্ষমার ঘোষণা নিয়ে মাগফিরাতের দ্বিতীয় দশকের প্রথম দিন শুরু হলো আজ। রমজানের প্রথম দশ দিনে যারা আল্লাহর রহমতে সিক্ত হয়েছেন, আজ তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন মাগফিরাত আর করুণার বারিতে ভেজার। আমরা কী নিজেকে রহমতস্নাত করতে পেরেছি? রমজানের এ দশকে আমরা মাগফিরাত  থেকে বঞ্চিত হতে চাই না।

 শুরু হওয়া মাগফিরাতের এ দশকে পাপি বান্দাদের পাপ মাফ করানোর সুবর্ণ সুযোগ। রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের বৃষ্টি বর্ষিত হতে থাকে। মহান আল্লাহতায়ালা অসংখ্য-অগণিত মানুষকে এই মাসে ক্ষমা করেন। তবে যারা রমজানের এই কল্যাণময় সময়গুলোও অবহেলা ও উদাসীনতায় দূরে ঠেলে দেয় তারাই বঞ্চিত থাকে আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ থেকে। রমজানে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত রয়েছে।

 রয়েছে আরো অনেক পুরস্কার আল্লাহর পক্ষ  থেকে। সিয়াম ও কিয়াম ও অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে তা লাভ করা যায়। যদি  কেউ রোজা, তারাবিহসহ অন্যান্য ইবাদত না করে, তাহলে তার ভাগ্যে জিবরাঈল (আ.) এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বদদো‘আ ছাড়া আর কি থাকতে পারে?হযরত কা’ব ইবনে উজরা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে বললেন, তোমরা মিম্বরের নিকট সমবেত হও।

আমরা সকলেই তথায় উপস্থিত হলাম। যখন তিনি মিম্বরের প্রথম সিড়িঁতে পা রাখলেন, তখন বললেন-আমীন, যখন দ্বিতীয়সিঁড়িতে পা রাখলেন বললেন আমীন, যখন তিনি তৃতীয় সিঁিড়তে পা রাখলেন বললেন আমীন। হযরত কা’ব ইবনে উজরা (রা.) বলেন, যখন তিনি (মিম্বর থেকে) অবতরণ করলেন, আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আজ (মিম্বরে উঠার সময়) আমরা আপনাকে এমন কিছু কথা বলতে শুনেছি, যা ইতিপূর্বে কখনো  শুনিনি। উত্তরে তিনি বললেন, জিবরাইল (আ.) আমার নিকট আগমন করেছিলেন, যখন আমি প্রথম সিড়িঁতে পা রাখলাম, তখন তিনি বললেন, ধ্বংস হোক ঐ ব্যক্তি যে রমজান মাস পেল, তবুও তার গুনাহ মাফ হলো না। আমি বললাম, আমীন।

যখন দ্বিতীয় সিড়িঁতে পা রাখলাম তখন বললেন, ধ্বংস হোক ঐ ব্যক্তি যার নিকট আপনার নাম উচ্চারিত হলো অথচ  সে আপনার প্রতি দরূদ পাঠ করলো না। আমি বললাম আমীন। যখন তৃতীয় সিড়িঁতে পা রাখলাম, তখন বললেন, ধ্বংস হোক ঐ ব্যক্তি যে বৃদ্ধ পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে পেল অথচ তারা উভয় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না। অর্থাৎ তাদের  খেদমতের মাধ্যমে নিজেকে জান্নাতবাসী করতে পারলো না। আমি বললাম, আমীন। (মুসলিম হাদীস নং-২৫৫১ ও তিরমিজি হাদীস-৩৫৪৫)আল্লাহর রসুল (সা.) বলেছেন, রমজানের প্রতি রাতে একজন ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, হে পুণ্যের অন্বেষণকারী অগ্রসর হও! হে পাপাচারী! থাম, চোখ খোল! ফেরেশতা আবার বলেন, ক্ষমাপ্রার্থীকেই ক্ষমা করা হবে। অনুতাপকারীর অনুতাপ গ্রহণ করা হবে। প্রার্থনাকারীদের দোয়া কবুল করা হবে।

(আহমদ)হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা রমজান মাসের প্রত্যেক দিবস ও রাত্রিতে অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন এবং প্রত্যেক মুমিন বান্দার একটি করে দুআ কবুল করেন। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৭৪৫০)হযরত আবু হুরয়রা (রা.) বলেন, রমজান মাস লাভকারী ব্যক্তি যে উত্তমরূপে সিয়াম ও কিয়াম (রোজা, তারাবী ও অন্যান্য আমল) পালন করে, তার প্রথম পুরস্কার এই যে, সে রমজান শেষে গুনাহ থেকে ঐ দিনের মতো পবিত্র হয় যেদিন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল।

 (মুসলিম, হাদীস-৮৯৬৬)হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত রসুলে করিম (সা.) বলেছেন, রমজান মাসে চারটি কাজ  বেশি েেবশি করে করবে- দুটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আর দু’টি কাজ যা না করলে তোমাদের  কোনো উপায় নেই। প্রথম দুই কাজ যা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করবে তা হলো কালেমায়ে তাইয়্যিবা ও ইস্তিগফার বেশি বেশি করে পড়বে। দ্বিতীয় দুই কাজ যা নিজের জন্য করবে তা হলো আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করবে ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করবে। (বায়হাকি)  রমজান আমাদেরকে আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে।

 মাগফিরাতের প্রথম দিন এবং নাজাতের আরও দশদিন যথাযথ হক আদায় করে রোজাসহ অন্যান্য ইবাদত এবং নেক আমলসমুহের মাঝে কাটাতে চাই। আল্লাহতায়ালা আমাদের মাগফিরাত এবং নাজাতের বারিধারায় সিক্ত করুন। এই দশকে আমরা বেশি  বেশি করে তাওবাহ, ইবাদত-বন্দেগী, কুরআন তেলাওয়াত, দান সদকা, তওবা, ইস্তেগফার ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। মাগফিরাতের এই দশকে আল্লাহতায়ালা আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমিন।

প্রজন্মনিউজ২৪/জোবায়ের

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত



ব্রেকিং নিউজ