‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরিয়ে দিল পুলিশ, লাঠিপেটা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, আগুন

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ০৩:৫২:২৩

‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরিয়ে দিল পুলিশ, লাঠিপেটা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, আগুন

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে থেকে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের অনেককে লাঠিপেটা করতে দেখা যায়। পরে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ, বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে মঞ্চের সামনে যারা অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের বেশির ভাগই একই রঙের পোশাক ও টুপি পরেছিলেন।

 

আজ শুক্রবার বেলা সোয়া একটার পর থেকে এসব ঘটনা ঘটে। বেলা আড়াইটার দিকে ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের সামনের রাস্তা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এগিয়ে যাচ্ছিল। অন্যদিক থেকে মাঝে মাঝে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হচ্ছিল।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভের পর সকালে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে শতাধিক মানুষ সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন।

বেলা সোয়া একটার দিকে মঞ্চের সামনে থেকে ‘জুলাই যোদ্ধা’–দের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় কয়েকজনকে লাঠিপেটা করতে দেখা যায়। এ সময় ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাঁদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

পরে ‘জুলাই যোদ্ধারা’ বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ করে এবং কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে একদল ব্যক্তি আবার মঞ্চের দিকে ঢুকে যায়। এ সময় পুলিশ আবার তাদের সরিয়ে দেয়।

‘আমাদের অন্তর্ভুক্ত না করে কীভাবে এই সনদে স্বাক্ষর করবে তারা’

নিজেকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে রুবেল নামের একজন ব্যক্তি বলেন, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিপেঠায় তাঁদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বেলা সোয়া দুইটার দিকে ঘটনাস্থলের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পরিস্থিতি থমথমে। সেখানে কয়েকটি জায়গায় ধরিয়ে দেওয়া আগুন জ্বলছিল।

এর আগে বিক্ষোভকারীদের একটি দলকে পুলিশ খামারবাড়ি মোড়ের দিকে, আরেকটি দলকে আসাদ গেট প্রান্তের দিকে সরিয়ে দেয়।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আসাদ গেট মোড়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে।

বেলা দুইটায় সংসদ ভবনের সামনের এলাকার সড়কে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এর আগে বেলা পৌনে দুইটার দিকে সেখানে কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ আজ বেলা সোয়া দুইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলা করা হয়েছে। পুলিশের পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাঁরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভের পর সকালে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে শতাধিক মানুষ সংসদ ভবন এলাকার ১২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন। একপর্যায়ে তাঁরা সংসদ ভবন এলাকার ১২ নম্বর গেট টপকে ভেতরে ঢোকেন। মঞ্চের সামনে অতিথিদের চেয়ারে বসে স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনকারীদের দাবি, জুলাই আন্দোলনে তাদের অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসন বাস্তবায়ন করতে হবে।

আজ বিকেল চারটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সরকার। বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন দল এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবে বলে জানিয়েছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে আইনি ভিত্তির নিশ্চয়তা ছাড়া তারা এখন জুলাই সনদ স্বাক্ষর করবে না।

জুলাই জাতীয় সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে সংশোধিত খসড়া না পেলে সনদে সই করবে না বাম ধারার চারটি দল। দলগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ