রমজানের প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে!

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০১:৪৮:৫১

রমজানের প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে!

প্রজন্ম ডেস্ক: রমজান মাস। ইবাদতের বসন্তকাল এবং বছরজুড়ে  ইবাদতের অভ্যাস গড়ে তোলার একটি শ্রেষ্ঠ ও কার্যকরী সময়। আল্লাহর নৈকট্য প্রাপ্তির সুবর্ণ সুযোগ। আমাদের সবার দুয়ারে কড়া নাড়ছে সেই মহিমান্বিত মাস। পশ্চিম আকাশে উত্থিত হতে যাচ্ছে আরেকটি রমজানের চাঁদ, জীবন বাগিচায় পুস্পিত বসন্তের ফল্গুধারা নিয়ে, অফুরন্ত রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে এবং আত্মশুদ্ধির পয়গাম নিয়ে। 

দুনিয়াবী বড় কোন কাজ করতে যেমন আমরা প্রস্তুতি নিয়ে থাকি তেমনই নবীজি (সাঃ) রমজানের ২ মাস আগে থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করতেন। আত্মিক ও মানসিকভাবে রমজান কে বরন করে নিতে ব্যকুল হয়ে পড়তেন। রমজান মাসে মাসব্যাপী সিয়াম পালনের জন্য তিনি শাবান মাস থেকে অধিক হারে রোজা রেখে দৈহিক প্রস্তুতি নিতেন। 

হজরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি নবীজিকে সাবান মাসের তুলনায় অন্য কোন মাসে এতো বেশি রোজা রাখতে দেখিনি। তিনি সাবানের প্রায় পুরোটাই রোজায় অতিবাহিত করতেন। কিছু অংশ ব্যতীত প্রায় পুরোটাই রোজা রাখতেন। অন্য একটি হাদিসে হজরত উম্মে সালামা বলেন, আমি নবীজিকে রমজান মাস এবং শাবান মাস ব্যতীত ধারাবাহিকভাবে ২ মাস রোজা রাখতে দেখিনি। 

মুহাদ্দিসিনে কেরাম বলেন, এই মাসে নবীজি বেশি বেশি রোজা রাখার কারণ হচ্ছে, এই মাসে বান্দার আমল উত্তোলন করা হয়, যেন রোজা অবস্থায় আমলগুলো উত্তোলন করা হয়। কেউ কেউ বলেন, শাবান ও রমজান পরবর্তী শাওয়াল মাসের রোজা ফরজ সালাতের আগে ও পরে পালিত সুন্নত নামাজের মতো। রমজানের ভূমিকাস্বরুপ প্রস্তুতিমূলক ইবাদত। একারণে এই রোজাগুলো পালন সুন্নত করা হয়েছে। 

রমজান পাওয়ার দোয়া

হজরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা:) রজব মাস থেকে রমজান পাওয়ার দোয়া শুরু করতেন। তিনি বলতেন, ‘ইয়া আল্লাহ! রজব এবং শাবানে আপনি আমাদেরকে বরকত দান করুন এবং আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌছানোর তৌফিক দান করুন।’ আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী (রহ.) বলেন, নেক কাজ করার উদ্দেশ্যে মহিমান্বিত সময়গুলো পর্যন্ত বেঁচে থাকার দোয়া করা মুস্তাহাব- ওই হাদিসে একথার প্রমাণ পাওয়া যায়। 

রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নানাভাবে উৎসাহিত করতেন। যেমন এক হাদিসে এসেছে নবীজি (সা.) বলেন, রমজান বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে এসে উপস্থিত হয়েছে, এই মাসের সিয়াম সাধনাকে আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর ফরজ করেছেন। এই মাসে আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে মহাকল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। 

আমরা এটাকে এভাবে বলতে পারি, ‘রজব মাস হলো বীজ বপনের মাস। শাবান মাস হলো ক্ষেতে পানি সেচ করার মাস। আর রমজান মাস হলো ফসল ঘরে তোলার মাস। ’ এক বিজ্ঞজন এভাবে বলেছেন, ‘রজব মাসের উদাহরণ হলো বৃষ্টি আসার আগের বাতাসের মতো। শাবান মাসের উদাহরণ হলো আকাশে মেঘমালার মতো। আর রমজান মাস হলো বৃষ্টির মতো।’ তাই, যে ব্যক্তি রজম মাসে বীজ বপন করলো না, শাবান মাসে সেচ প্রদান করলো না-তার ঘরে কীভাবে রমজানে ফসল আসবে?

রমজানকে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগানোর অন্যতম উপায় হচ্ছে, দুনিয়াবি কঠিন কাজগুলো রমজানের আগে আগে গুছিয়ে আনার চেষ্টা করা। রমজানের আগে সব গোনাহ থেকে তওবা করে গোনাহের যত অনুষঙ্গ আছে, সব অনুষঙ্গ থেকে গুটিয়ে রমজানের আগে নিজেকে গোনাহমুক্ত করা এবং ইবাদতে নিমগ্ন রমজান কাটানোর দৃঢ় সংকল্প করা। আল্লাহপাক রমজানকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতিসহ স্বাগত জানাতে, সুবর্ণ সুযোগগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে, মানসিকভাবে নিজেকে গড়ে তোলার তৌফিক আমাদের দান করুন। 


প্রজন্মনিউজ২৪/এএন

এ সম্পর্কিত খবর

পাবনায় হজ্ব প্রশিক্ষণ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

লক্ষ্মীপুরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের ভিড়

চলতি বছর পবিত্র হজ্জ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ

বশেমুরবিপ্রবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

মোস্তাফিজকে নিয়ে বিসিবির ভাবনা ঠিক নেই: হার্শা ভোগলে

ইউক্রেন-ইসরায়েলকে আরও ৯৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

শরীয়তপুরের জাজিরায় হাতবোমার বিস্ফোরণে আহত:৪

গুচ্ছের হাবিপ্রবি কেন্দ্রে তিন ইউনিটে পরীক্ষার্থী ১২৩৪১ জন

বিশ্ব বই দিবসে নিজের কক্ষেই লাইব্রেরি গড়ে তুললেন রাবি শিক্ষার্থী আকরাম

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ