রাবি ছাত্রলীগের সদ্যঘোষিত কমিটির নেতাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেবেন না পদবঞ্চিতরা

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ০৪:৫২:৪৭

রাবি ছাত্রলীগের সদ্যঘোষিত কমিটির নেতাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেবেন না পদবঞ্চিতরা

সাত বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কমিটিকে বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগের একাংশ।

রবিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দলীয় ট্রেন্টে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় সদ্যঘোষিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করতে থাকেন তারা। কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না করা পর্যন্ত বর্তমান কমিটির নেতারা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিতে পারবে না বলে জানান পদবঞ্চিতরা।

পরে দলীয় ট্রেন্ট থেকে ক্যাম্পাসে শোডাউন বের করেন তারা। শোডাউন শেষে শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতে ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের হল মাদারবক্স হলে গিয়ে তার কক্ষে ভাঙচুর করেন। পরে পরিবহন মার্কেটে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে দেখে মারধর করেন এবং তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।

পদবঞ্চিত একাধিক নেতাকর্মী দাবি করেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র না মেনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি দিয়েছে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, বিবাহিত ও অছাত্ররা কমিটিতে আসতে পারবে না। কিন্তু যাদেরকে নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তারা দুজনেই বিতর্কিত। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন না সদ্য কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু। পড়াশোনা শেষ করে সেলুনের ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা এবং নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ছিল বাবু। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট হয়েছেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। তার বিবাহিত ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব বিতর্কিত নিয়ে কমিটি ঘোষণা করায় আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।

সদ্যঘোষিত কমিটির সহ-সভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন দাবি করেন, বর্তমান কমিটি সম্পূর্ণ বিতর্কিত। অছাত্র, ইন্টার পাস ও বিতর্কিতদের নিয়ে এই কমিটি গঠিত হয়েছে। সভাপতি বাবু ছয় মাস আগে রাজনীতিতে এসেছে, নেতা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক গালিব বিবাহিত, ইন্টারপাস ও বিতর্কিত। রাজাকারের নাতিও এই কমিটিতে আছে। আমরা এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরা আসতে পারবে না।

পদবঞ্চিত নেতা ও গত কমিটির সহ-সভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন দাবি করেন, ৩৪ দিন যাচাই-বাছাই করে যে কমিটি দিয়েছে তা মেনে নেওয়ার মতো না। সব পোস্ট বিতর্কিতদের দিয়ে করা হয়েছে। সম্মেলন হওয়ার দুই দিন আগেও বাবু প্রার্থী ছিল না। সে সেলুনে চুল কাটার ব্যবসা করত। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক গালিব ইন্টার পাস। ৩-৪ বছর পড়াশোনা করে পাস করতে পারেনি। সে বিয়েও করেছে। তার পরিবারের আট জন বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত কমিটিতে যে সহ-সভাপতি এখন সাত বছর পর সে আবার সহ-সভাপতি। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এই কমিটি হাস্যকর। এটা আমাদের সঙ্গে রসিকতা করা হয়েছে। তারা সংগঠন শেষ করে দিয়েছে। আমরা এই সম্পূর্ণ কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।

সদ্যঘোষিত কমিটির সহ-সভাপতি তাওহীদুল ইসলাম দুর্জয় দাবি করেন, গত নভেম্বরে সম্মেলন হলে বাবু সেখানে প্রার্থীই ছিল না। কিছুদিন আগে সে রাজনীতিতে এসেছে। সাধারণ সম্পাদক গালিব অছাত্র, বিতর্কিত। এই কমিটিতে পিএইচডি এমফিল শিক্ষার্থীরা আছেন। তাদের নেতা কীভাবে ইন্টারপাস হয়?

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সাকিবুল হাসান বাকী, অনিক মাহমুদ বনি, শামীম হোসেন, নিয়াজ মোর্শেদসহ অসংখ্য পদবঞ্চিত শতাধিক নেতাকর্মী।

নবগঠিত কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু দাবি করেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং রাজশাহীর মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নেতা খায়রুজ্জামান লিটন চিন্তাভাবনা করেই এ কমিটি দিয়েছেন। যারা এ কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে তাদের ব্যক্তি স্বার্থ রয়েছে। শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।


প্রজন্মনিউজ২৪/ইমরান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ