প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর, ২০২২ ১১:৩৬:৫৭
নাজমুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধিঃ চায়ের কাপ-সিগারেট কিংবা যেকোনো খাবার হাতে ক্রেতাদের নিকট ছুটোছুটি। সুযোগ পেলেই একটু-আধটু খুনসুটি এবং পুনরায় কাজের ব্যস্ততা, এভাবেই শেষ হয় সাব্বিরের দিন। অনেক সময় খেয়ে/না খেয়েই হয় রাত। অথচ সদা হাস্যজ্জল মুখে শত মানুষের ক্ষুধা নিবারণে কাজ করছে শিশু সাব্বির।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কালিবাড়ী এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে সাব্বির ইসলাম (৯) চাচা মনির হোসেনের ফুসকার দোকানে কাজ করেই পার করছেন দিন, জৈনিক শরিফুল ইসলামের চার সন্তানের মেঝো সন্তান সাব্বির, বড় ভাই পাশের হোটেলেই কাজ করেন, ছোট আরও দুই ভাই বাড়িতেই থাকেন, বাবা ভেন চালক, মা মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে চালায় সংসার। যে বয়সে পড়াশোনা করার কথা সে বসে সংসারের অভাবের তারনায় এখনো দেখেনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাড়ান্দা, শৈশবের আনন্দ ভুলে কাজ করতে গিয়ে শিক্ষার আলো থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন সাব্বির।
চিত্রটি ঠাকুরগাঁও পুনাক শিল্প ও পণ্য মেলায় চাচা মনিরুল ইসলামের সাথে অস্থায়ী দোকানে সাব্বিরের কাজ করাকালীন। চাচার দোকান ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালক উচ্চবিদ্যালয়ে বড় মাঠের পাশে চটপটি ও ফুসকার দোকানে দিনের পর দিন পারি দিচ্ছেন সাব্বির যেখানে হাজারো আলোকিত মানুষের সংস্পর্শে থেকেও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু সাব্বির। এমনকি অভাব-অনটনের ভাঁড়ে চাপা পড়ছে তার শৈশবের আনন্দটুকুও। ফলে স্বপ্ন পূরণের জায়গায় স্বপ্ন দেখারই সাহস হারিয়ে ফেলছে এই কোমলমতি শিশু সাব্বির।
জাতিসংঘ প্রণীত শিশু অধিকার সনদে ১৮ বছরের কম বয়সী প্রত্যেককে শিশু বলা হয়েছে। বাংলাদেশের শ্রম আইনে (২০০৬) ১৪ বছরের কম বয়সী কাউকে শ্রমিকের কাজ ব্যবহার না কারার নির্দেশ দেয়া আছে। এমনকি আন্তর্জাতিক শ্রম আইন সংস্থা (আইএলও) এবং জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ অনুসারে, যখন কোন শ্রম বা কর্মপরিবেশ শিশুর জন্য দৈহিক, মানসিক, নৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় ও ক্ষতিকর হিসেবে গণ্য হবে; তখন তা শিশু শ্রম হিসেবে গণ্য হবে।
আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইনে শিশুশ্রমকে অপরাধ চিহ্নিত করে এ কাজকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তবে এসব আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না কোথাও। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অনেক জায়গায় শিশুদের নামমাত্র মজুরিতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অবুঝ, অল্পেতুষ্ট ও বাধ্য হয়ে কাজে আসার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেক সময় শিশুদের খাটিয়ে নিচ্ছে মুনাফালোভীরা। তবে শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে দেশে দৃশ্যমান তেমন কোন শাস্তিও দেখা যায় না।
শিশু-শ্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে দোকান-মালিক সাব্বিরের চাচা মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার সাথে দোকানে থাকে পাশাপাশি কাজ করে, এখানে যেটুকু টাকা পায়, সেটা দিয়ে তাদের পরিবার কিছুটা উপকৃত হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের উদ্যোগে পড়াশোনা করানোর সামর্থ্য নেই। তাই কাজ করে সেরকম টাকাও পাচ্ছে না।
১৯৯০ সালে বাংলাদেশকে শতভাগ নিরক্ষরমুক্ত করতে প্রাথমিক শিক্ষা আইন পাশ করা হয়। এমনকি বিনামূল্যে এ শিক্ষা গ্রহণের পাশপাশি বৃত্তিমূলক ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশের নিরক্ষরতা দূরীকরণে সরকারের এত উদ্যোগ স্বত্বেও দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোর নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত এমন কাজ চলছে। অথচ এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কারোই।
মশিউর রহমান নামে একজন ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যেখানে প্রতিনিয়ত দক্ষ, সচেতন ও আলোকিত মানুষ তৈরি হচ্ছে- সেখানে এমন আইনের লঙ্ঘন খুবই দুঃখজনক। অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে, যারা সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে। তাই প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে এসব সংগঠনকে সহায়তা করার মাধ্যমে এই শিশুদের নূন্যতম প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব।
সাব্বিরের চাচা মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, পরিবার পড়াশোনা অর্থ জোগাড় করতে না পেরে কিছু উপার্জনের আশায় শিশুদের কাজে পাঠায়। তবে শিশুর সাব্বিরের শিক্ষা গ্রহণে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের পাশাপাশি প্রশাসন মানবিকভাবে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করলে এসব শিশুদের নিরক্ষরতার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।
পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, বিভিন্ন দোকানে অনেক শিশুই কাজ করে। তবে অবৈধ দোকান উচ্ছ্বেদ ও বৈধদের সার্বিক তথ্য হালনাগাদ করণে কাজ চলছে। যদি বৈধ কোন দোকানে কর্মরত কোন শিশুকে বঞ্চিত করার প্রমাণ মেলে, তবে সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে
পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন'২৪
হিট স্ট্রোকে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ছয় দিনের সরকারি সফরে আজ বুধবার থাইল্যান্ড গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টা
বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিসকা’র অনুমতি দেয়নি ঢাবি প্রশাসন
বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিতে রাবিতে 'মলাট' চালু
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের লক্ষ্য: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
হারের দায় মুস্তাফিজের কাঁধে দিতে চান না অধিনায়ক
বিশ্ব বই দিবসে নিজের কক্ষেই লাইব্রেরি গড়ে তুললেন রাবি শিক্ষার্থী আকরাম