রাবির চার হল থেকে অর্ধ-পোড়ানো কোরআন উদ্ধার, দেয়ালে বিজেপির লোগো

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারী, ২০২৫ ০৪:৩৬:০৮ || পরিবর্তিত: ১২ জানুয়ারী, ২০২৫ ০৪:৩৬:০৮

রাবির চার হল থেকে অর্ধ-পোড়ানো কোরআন উদ্ধার, দেয়ালে বিজেপির লোগো

প্রজন্ম ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারটি আবাসিক হল থেকে আগুনে পোড়ানো পবিত্র কোরআন শরীফ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার (১২ জানুয়ারি) ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী, শহীদ জিয়াউর রহমান ও মতিহার হল থেকে অর্ধ-পোড়ানো কোরআন উদ্ধার করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বেলা এগারোটার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের মসজিদ থেকে কয়েকটি পাতা পোড়ানো অবস্থায় কোরআন উদ্ধার করে হল প্রশাসন। একইসঙ্গে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের দেয়ালে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) লোগো পদ্মফুলের ছবিও আঁকানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িতদের এখনো শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। এ ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

হল প্রশাসন ও আবাসিক শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, শহীদ জিয়াউর রহমান হলে আজ ফজরের নামাজের সময় পবিত্র কোরআন শরীফ পড়তে গেলে শিক্ষার্থীরা দেখতে পান গ্রন্থটির প্রথম দিকের কিছু অংশ পোড়ানো। পরে সকাল ১০টার দিকে সৈয়দ আমীর আলী হলের মুক্তমঞ্চে অর্ধ পোড়ানো অবস্থায় পবিত্র কোরআন শরীফ দেখতে পান এক শিক্ষার্থী। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে হল প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বেলা ১১টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের মসজিদে খোঁজ নিয়ে পবিত্র কোরআনের কয়েকটি পাতা পোড়ানো দেখতে পায় হল প্রশাসন। অন্যদিকে দুপুর ১২টার দিকে মতিহার হলের ছাদে অর্ধ পোড়ানো এবং ছিন্নভিন্ন অবস্থায় গ্রন্থটি উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে আমীর আলী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হারুনর রশিদ বলেন, আজ সকালে হল সুপার আমাকে ফোন করে বলে ছাত্ররা হলে কোরআন পোড়ানো অবস্থায় পেয়েছে। আমি তৎক্ষণাৎ হলে এসে দেখি বিষয়টি সত্য। মূলত ধর্মীয় ইস্যুতে কেউ অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য পাঁয়তারা করছে। ঘটনাটি আমরা তদন্ত করবো। আমি এবিষয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলেছি।শহীদ হবিবুর রহমান হল প্রাধ্যক্ষ বাইতুল মোকাদ্দেছুর রহমান বলেন

, ‘হলগুলোতে এমন ঘটনার খবর পেয়ে আমি আমার হল মসজিদের মুয়াজ্জিনকে খোঁজ নিতে বলি। খোঁজ নিতে গিয়ে তিনি দেখতে পান মসজিদে সংরক্ষিত একটি কোরআন শরীফের কয়েকটি পাতা পোড়ানো। পরে আমি বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাই।’

ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। পরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে পূর্বপরিকল্পিত। সম্ভবত একই সময়ে একটি গোষ্ঠী রাতের আঁধারে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এখানে তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। আমি আমার শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যারা ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের উদ্দেশ্য আমরা সফল হতে দিতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ গুলোকে সামনে রেখে পুলিশ, গোয়েন্দাসহ সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে দোষীদের বের করতে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দোষীদের যত শক্ত শাস্তি দেওয়া যায় আমরা সেই ব্যবস্থা করব। দোষী যদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কেউ হয়ে থাকেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’এ ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


প্রজন্মনিউজ২৪/ এম বি

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ