মৌলভীবাজার ৪ আসনে ৭ম বারেরমত মনোনয়ন পেলেন উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০৪:৫৩:৩৪

মৌলভীবাজার ৪ আসনে ৭ম বারেরমত মনোনয়ন পেলেন উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি মৌলভীবাজার- ৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনে এবার ৭ বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এর আগে পরপর ৬ বার তিনি এই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে সরকার দলীয় চিফ হুইপসহ গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

গত টানা ৩০ বছর তাঁর নির্বাচনী এলাকায় মানুষ শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পেরেছেন। এলাকায় চাঁদাবাজদের কোনো দৌড়াত্ম ছিল না।

কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কর্মীদের মতে, রাজনৈতিক দূরদর্শীতা, মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে দলমত নির্বিশেষে তিনি এই অঞ্চলের গণমানুষের নেতা হয়ে উঠেছেন। অর্জন করেছেন আস্থা, বিশ্বাস আর ভালোবাসা।

এ প্রসঙ্গে কমলগঞ্জ- শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ীরা বলেন, তিনি তাঁর যোগ্য ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে শ্রীমঙ্গলে কোনো ব্যবসায়ীকে চাঁদা বা হয়রানির শিকার হতে হয়নি। সব কর্মকাণ্ডে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন নীতির জন্য সাধারণ মানুষের ভালবাসায় আব্দুস শহীদ সিক্ত হয়েছেন।

উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে ১৯৯১ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে এরপর ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।  ১৯৯১ সালে আব্দুস শহীদের সঙ্গে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। ২০০৯- ২০১৪ পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, ২০০১- ২০০৬ পর্যন্ত সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ, এবং ১৯৯৬- ২০০১ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি সংসদের বিভিন্ন পদের দায়িত্বে ছিলেন ২০০১-২০১৯ পর্যন্ত। তিনি জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি ও ছিলেন।

অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি এ ছাড়াও তিনি দশম সংসদে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, সংসদ কমিটি, পিটিশন কমিটি ও কার্যপ্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটিরও তিনি সদস্য।

উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ ২০০৬ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা ও ১৯৬৯ সালের ১১ দফা আন্দোলনে ও পূর্বাপর সকল আন্দোলনে সিলেট জেলা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসাবে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন।

১৯৬৫ সালে ছাত্রলীগ মনোনীত সিলেট মদনমোহন কলেজ ছাত্র সংসদে নাট্য ও প্রমোদ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৬- ১৯৬৮ পর্যন্ত তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে আব্দুস শহীদ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯১- ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম মেম্বার, ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। একই সময়ে তিনি ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি ছিলেন।

উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এম.কম ডিগ্রি লাভ করেন। সম্প্রতি (২০১৮) তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের উপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য আব্দুস শহীদ শিক্ষার প্রসারে এলাকায় তাঁর ভূমিকা সর্বজনবিদিত। শ্রীমঙ্গলে উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ কলেজ ও দ্বারিকা পাল মহিলা ডিগ্রি কলেজ এবং কমলগঞ্জের আব্দুল বারী মুলফত উদ্দিন হাফিজিয়া ইবতেদায়ি মাদরাসা ও সাজেদা বারী শিশু সদনের তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। পিছিয়ে পড়া চা-জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা প্রসারে চা বাগান এলাকায় তাঁর উদ্যোগে ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল নির্বাচনী এলাকায় রাস্থাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার অবকাঠামোগত প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিতকরণে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। কৃষির উন্নয়নেও তার অবদান প্রশংসিত। দুই উপজেলায় ফসল উৎপাদন ও রক্ষায় সেচব্যবস্থার উন্নয়নে স্লুইসগেইট ও রাবারড্যাম এবং বাঁধ তৈরি করা হয়েছে।

উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক ভিশন হচ্ছে নির্বাচনী এলাকার গণমানুষের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায় ও তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা। নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের শিক্ষা, চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করা। দক্ষতার সাথে নির্বাচনী এলাকা ও সংসদে কাজ করেছেন বলেও দলীয় সভানেত্রী  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রার্থী বাছাই কমিটির তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন।  এজন্য তাঁদের কাছে তুনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’

৭ বারের মতো দলীয় মনোনয়ন লাভের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমার এলাকার প্রিয় নেতাকর্মী ও জনগণের দোয়া-আশীর্বাদ এবং ভালোবাসা ও শুভ কামনার ফসল আওয়ামী লীগের এই মনোনয়ন।’


প্রজন্মনিউজ২৪/এএএম

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ