বিদায় বেলায় আবেগের পানিতে ভাসালেন প্রধান বিচারপতি

প্রকাশিত: ৩১ অগাস্ট, ২০২৩ ০৩:৫৮:১৬

বিদায় বেলায় আবেগের পানিতে ভাসালেন প্রধান বিচারপতি

অনলাইন ডেস্ক: দীর্ঘ ১৭ বছরের সমাপ্তি। শেষ বিচারিক কর্মদিবসে বাবা-মায়ের স্মৃতিচারণ ও বিচার বিভাগ ছেড়ে যাওয়ার কথা ভেবে কাঁদলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এ সময় কাঁদেন প্রধান বিচারপতির পরিবারের সদস্যরাও।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতির বক্তব্য দেওয়ার সময় এ আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই বিদায়মুহূর্তে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমার মরহুম বাবা-মাকে। আমার জন্য এবং আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য অপরিসীম কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করে তারা জান্নাতবাসী হয়েছেন। তারা আমার সংগ্রামের পথে সহায়তা করেছেন।

এ কথা বলেই প্রধান বিচারপতি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এক মিনিটের মতো কথা বলতে পারেননি তিনি। এ সময় এজলাস কক্ষে উপস্থিত থাকা প্রধান বিচারপতির বড় মেয়ে, নাতি ও ছোট মেয়ের জামাইকেও কাঁদতে দেখা যায়। কিছু সময়ের জন্য এজলাস কক্ষের পুরো পরিবেশ নীরব-নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে।

এরপর প্রধান বিচারপতি আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, আমি বিচার বিভাগকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম এবং আমি চেষ্টা করেছি স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে।

বিদায়ী ভাষণে প্রধান বিচারপতি বলেন, মানুষ শাসন বিভাগ, আইন বিভাগের প্রতি আস্থা হারাতে পারে। কিন্তু বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারালে ওই জাতিকে খারাপ সময়ের জন্য, খারাপ দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বিচার বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকারের রক্ষক, সংবিধানের রক্ষক। তাই বিচারকদের সাহসী ও সুবিচারক হতে হবে। আইনজীবীদের বিভক্তি বিচারালয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতি, বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। এজলাস কক্ষে তিল ধারণের জায়গা ছিল না।

দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাচ্ছেন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সে সময় সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালে ছুটি থাকায় আজ বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) তার বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।

২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেল ৪টায় বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শপথবাক্য পাঠ করান। তার ৬৭ বছর পূর্ণ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। তাই সংবিধান অনুসারে ওইদিন তিনি অবসরে যাবেন।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৫৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পড়ালেখা শেষে হাসান তিনি ১৯৮১ সালের ২১ আগস্ট জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ও ১৯৯৯ সালের ২৭ মে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খুলনা সিটি করপোরেশন, কুষ্টিয়া পৌরসভা, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির আইন উপদেষ্টা ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলও।

২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের ও ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগে নিয়োগ পান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এ ছাড়া তিনি ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


প্রজন্মনিউজ২৪/এএএম

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ