চার দিন পর থেকেই শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ১৯ জুলাই, ২০১৭ ১১:৩৬:৩১ || পরিবর্তিত: ১৯ জুলাই, ২০১৭ ১১:৩৬:৩১

চার দিন পর থেকেই শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে ২৩ জুলাই। এরপরই শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ। কেউ মেডিকেলে, কেউ প্রকৌশলী  কেউবা পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়ে পড়ার স্বপ্ন দেখছেন।

গত কয়েক বছরের ফল মূল্যায়ন করে দেখা গেছে, এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তির চাইতে মেডিকেল, প্রকৌশলী ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা কম থাকে। গত বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ছিলো ৫৮ হাজার ২৭৬। অথচ সারাদেশে প্রকৌশলী ও ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। তাই সর্বোচ্চ ফল পেয়েও অনেকেরই এসব প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানিয়েছে, দেশে মোট ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টির কার্যক্রম চলমান। বাকি পাঁচটির কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। এছাড়া বেসরকারি ৯৫টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেখানে প্রায় আড়াই লাখ আসন রয়েছে।

তথ্য মতে, এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা রয়েছে প্রায় সাত হাজার। চলতি বছর আবহাওয়া বিজ্ঞান নামে নতুন বিভাগ খুললেও এ বছর সেখানে স্নাতকে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাবি উপাচার্য।

অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আসন সংখ্যা এক হাজার ৩০টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজার, জগন্নাথে প্রায় তিন হাজার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় পাঁচ হাজার, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চার হাজার ৬৫৪, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ১১২, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এক হাজার ৪৪৮, দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুই হাজার, কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক হাজার ৬৯৫, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ২০০, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৭৫, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৭৫, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮১৫, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৭০, চট্রগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৯০, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এক হাজার ১০, গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৪৩০, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৩০০, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ১৯০, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৬০, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৬০, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৮৫, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ৯১৬, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) ৬০০, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৪০, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮০, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮২৫, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৭০, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০০, পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬১০, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০, চট্রগ্রাম ভেটেরেনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১০ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭৫টি আসন রয়েছে।

এছাড়াও মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে আসন আছে  চার হাজার ৩৪৪টি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৯৫৩টি আসন।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এবার পাস করা শিক্ষার্থীদের আসন সংকট না হলেও ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া নিয়ে হবে তুমুল যুদ্ধ। এই যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে আসন কম থাকায় ভালো ফল করলেও অনেক শিক্ষার্থীই ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে।

আসন স্বল্পতার কারণে প্রতি বছরের মতো এবারও শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে প্রতিটি আসনের জন্য লড়তে হবে।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, ব্যানবেইসসহ সংশ্লিষ্টের সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে আসন সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ, ডিগ্রি কলেজগুলোয় পাস কোর্সে আসন রয়েছে দেড় লাখের বেশি। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন আছে প্রায় দুই লাখ। ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও বুয়েটে ভর্তি হতে না পারা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে পড়তে হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সকলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলেও ভর্তি থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না। তাই ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় ২ এপ্রিল। আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে মোট ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ