হার না মানা এক যুবক, গ্রাম থেকে উঠে আশা সফল  উদ্যোক্তা    

প্রকাশিত: ২৫ মে, ২০২৪ ০৬:৪০:৪৭

হার না মানা এক যুবক, গ্রাম থেকে উঠে আশা সফল  উদ্যোক্তা    

নিজস্বপ্রতিবেদক: আমি আরিফ সেই ছোট্টবেলা থেকে আমার অনেক বড় স্বপ্ন ছিল দেশের জন্য কিছু করার কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি পরিবেশগত কারণে তারপর থেকে আমি সিদ্ধান্ত নেই যে লাইফে কিছু একটা করতে হবে-যেখানে আমি শুধু আমার জন্য নয় সবার জন্যই এমন কিছুই করতে চাই যে আমি পৃথিবী থেকে যখন চলে যাব আমার কাজকর্ম তাতে আমাকে পৃথিবীর বুকে স্মরণ করে রাখে। 

আমি ২০১৪ সালের শেষের দিকে ঢাকায় আসি এরপর নিজের জীবন যাপনের জন্য বেছে নেই চাকরি জীবন। কিন্তু সেই ছোটবেলা থেকেই চাকরি জীবনটা আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি বা ভালো লাগার কারণ হয়ে ওঠেনি কখনো। বেশ কিছুদিন চাকরি করার পরে সিদ্ধান্ত নেই যে লাইফে কিছু একটা করতে হবে আর আমার যেই স্বপ্ন সেই স্বপ্ন আমি এই চাকরি জীবনে থেকে করতে পারবো না। দুই তিনটা কোম্পানিতে সুইস করি বাট আমার যেই লক্ষ্য আমার যেই স্বপ্ন সেই স্বপ্ন বা সেই লক্ষ্য আমি কোনভাবেই পরিপূর্ণ করে উঠতে পারছিলাম না। 

তারপর সিদ্ধান্ত নেই যে একজন সফল উদ্যোক্তা হবো, যেখানে নিজের ফ্রিডম থাকবে থাকবে নিজের অর্থনৈতিক সচলতা আর আমার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়া। তারপর আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে আমি বর্তমান যেই কোম্পানিতে কাজ করছি  NuVerus Nutrition Pvt Ltd. এর সন্ধান পাই। আমার সেই বন্ধু আমাকে হাতে কলমে শিখাতে শুরু করে কিভাবে আমি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারি। একজন প্রমোশনাল ব্র্যান্ড হতে পারি। তারপর থেকে আমি প্র্যাকটিস করা শুরু করি কিভাবে প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়ানো যায় কিভাবে মানুষের সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলা যায়। শুরুর দিকটা আমার অনেক কষ্টের হয়েছিল। 

সেই সময়টা ছিল ২০২০ সাল। ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের পার হয়ে যাওয়া ছয়টি বছর আরো বেশি কষ্টের ছিল আর সব থেকে বেশি কষ্ট ছিল যে আমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে না পারার। ২০২০ সাল থেকে কঠোর পরিশ্রম করা শুরু করে দেই দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। কিভাবে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয় কিভাবে প্রেজেন্টেশন দিতে হয় কিভাবে নিজেকে প্রমোট করতে হয় এবং নিজের প্রোডাক্টকে প্রমোট করতে হয় সে ব্যাপারে ট্রেনিং নিতে থাকি। ক্যারিয়ারের শুরুটা অনেক কষ্টের ছিল কখনো খেয়েছিলাম কখনো না খেয়ে ছিলাম। 

২০২০ সালের দিকে আমি ঢাকার উত্তর বাড্ডা তে ছিলাম। অর্থনৈতিক অসচলতার কারণে কখনো কখনো আমাকে তুই থেকে তিন ঘন্টা হেঁটে এসে অফিস করতে হয়েছে ট্রেনিং করতে হয়েছে শিখতে হয়েছে নতুন কিছু বুঝতে হয়েছে কিভাবে একজন মানুষের সাথে কথা বলা যায় কিভাবে সেল বাড়ানো যায় একজন সফল উদ্যোক্তা হতে গেলে কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হয় সবকিছুকে আয়ত্ত করার জন্য অনেক বেশি  পরিশ্রম করতে হয়েছিল।। 

এমন অনেক দিনও গিয়েছে যে আমি কখনো দুপুরবেলা না খেয়ে ছিলাম। আবার সারাদিনের ট্রেনিং শেষ করে আমি রাতের বেলা বাসায় হেঁটে ফিরেছিলাম। নিজে সেই কষ্টের কথাগুলো এবং না খেয়ে দিন দিন পার করার কথাগুলো কখনো কারো সঙ্গে শেয়ার করতে পারতাম না। সব সময় ভাবতাম মহান আল্লাহ তা'আলা আমার জন্য মনে হয় সামনে আরো ভালো কিছু রেখেছেন কাজেই আমি আমার পরিশ্রম করা কখনো বন্ধ করে দেইনি। সেই পরিশ্রমের দিনগুলোর কথা ভাবলে এখনো অঝোরে কান্না চলে আসে কত সুন্দর সুন্দর দিন অতিবাহিত করেছি কষ্টের মাধ্যমে না খেয়ে থেকে না ঘুমিয়ে। আর আজ এখন একটু একটু করে নিজের উন্নতি নিজে দেখতে পাচ্ছি। 

আমার সেই জার্নিটা এখন অনেকটাই আশানুরূপ আমি এখন ফেসবুক মার্কেটিং করি অনেক সময় লাইভ সেশন করি। আমি কনটেন্ট ক্রিয়েট করি। আমি অনেক সময় ব্লগিং করি। আমার এই আমি যাকে সব সময় সবার মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। যদিও আমি হেলথ এবং বিউটিফিকেশন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করি। একজন মানুষ কিভাবে ন্যাচারালি ভালো থাকতে পারে সুস্থ থাকতে পারে এই বার্তা প্রদান করি। নিজের স্বার্থের ঊর্ধ্বে সব সময় চেষ্টা করি সবাইকে ভালো রাখার সবাইকে হাসিখুশি রাখার। আর সব ক্লান্তি সব দুঃখ কষ্ট এক নিমিষেই দূর হয়ে যায় যখন আমার মাধ্যমে কেউ ভালো থাকে সুস্থ থাকে বা কাউকে আমি সুস্থ থাকার বার্তা নিঃস্বার্থভাবে প্রদান করতে পারি। 

আমি একজন বাংলাদেশের বড় ব্র্যান্ড প্রমোটর হতে চাই। আমি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চাই। আমি লাইফে আরো অনেক বড় কিছু করতে চাই। যেখানে আমার ছায়াতলে থেকে অনেক তরুণরা আমার মত একজন উদ্যোক্তা হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করবে। দেশে তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে নিজের জীবনকে সুন্দর এবং সাবলীল ভাবে গড়ে তুলতে পারে সে ব্যাপারে যাতে একটা সময় আমি গাইড করতে পারি সেই লক্ষ্য নিয়েই প্রতিদিন আমি এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের একজন সোশ্যাল বিজনেস আইকন হতে চাই। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে জানাতে চাই এবং বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে দেখাতে চাই ইচ্ছা থাকলেই একটা মানুষ অনেক কিছু করতে পারে। শুধুমাত্র ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে একটা মানুষ নিজের জীবনের চাকা কি পরিবর্তন করতে পারে।। নিজের ইচ্ছাশক্তিকে এবং নিজের পরিশ্রমকে এবং নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে চাইলেই একটা মানুষ অনেক বড় কিছু করতে পারে।

দেশের তরুণ প্রজন্মকে একটা বার্তা দিতে চাই সেই সুদূর প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ছুটে আসা সেই আরিফুল ইসলাম আজ একজন সফল উদ্যোক্তা।আজ একজন সফল ব্র্যান্ড প্রোমোটর বিজনেস আইকন। শুধুমাত্র নিজের কাজগুলো প্রতিদিন নিজের মত করে ভালোবেসে করা নিজের প্রতিভা গুলোকে সঠিক কাজে এবং সঠিক পথে ব্যয় করা।। 
জীবনে চলার পথে সবসময় সৎ থাকা। সব থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহতালার কাছে সব সময় দোয়া করা স্বচ্ছ ও হালাল রিজিকের মাধ্যমে নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে মেলে ধরা পুরো পৃথিবীর বুকে যে আমিও পারি যে আমিও পারবো অন্য সবার মত কিংবা তারও বেশি ।


প্রজন্মনিউজ ২৪/ মনির

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ