ইসরায়েলি গণহত্যাকে রাজনৈতিক সুরক্ষা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : হামাস

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:১০:৫৩

ইসরায়েলি গণহত্যাকে রাজনৈতিক সুরক্ষা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : হামাস

নিজস্ব প্রতিনধিঃ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় সাত মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এমন অবস্থায় গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যাকে যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক সুরক্ষা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে হামাস।এমনকি মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে বলেও অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীটি।

রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল গাজায় হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে বলে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ গত শনিবার জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের ভেটো কার্যকরভাবে তেল আবিবের কর্মকাণ্ডের রাজনৈতিক সুরক্ষা প্রদান করছে।

আনাদোলুর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে ইসমাইল হানিয়াহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান প্রতারণামূলক, যদিও দেশটি বলে, তারা বেসামরিক লোকদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় না, তবে এটি তাদের একটি কৌশল। গাজায় নিহত সমস্ত বেসামরিক নাগরিক, হাজার হাজার শহীদ, মার্কিন অস্ত্র, মার্কিন রকেট, মার্কিন রাজনৈতিক সুরক্ষায় নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর অর্থ কী? এর মানে হলো- গাজায় গণহত্যা ও হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ সুরক্ষা দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেছেন, জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পূর্ণ সদস্যপদে মার্কিন ভেটো এটিই দেখায় যে- ওয়াশিংটন ইসরায়েলি অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের বিরোধিতা করছে। এদিকে হানিয়াহ রাফাহ শহরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, আমি সমস্ত ভ্রাতৃপ্রতিম দেশকে, আমাদের মিসরের ভাইদের, আমাদের তুরস্কের ভাইদের, আমাদের কাতারের ভাইদের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে এবং ইউরোপীয় দেশগুলোকে (ইসরায়েলি) আগ্রাসনকে দমন করতে এবং রাফাহ শহরে অভিযান প্রতিরোধ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে এবং সেইসাথে গাজা উপত্যকা থেকে (ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং গাজায় হামলার সমাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধের কথা বলতে গিয়ে হানিয়াহ বলেন: যদি জায়নবাদী শত্রু রাফাহতে প্রবেশ করে, ফিলিস্তিনি জনগণ সাদা পতাকা উত্তোলন করবে না। রাফাহ-এর প্রতিরোধ যোদ্ধারা নিজেদের রক্ষা করতে এবং আক্রমণ প্রতিহত করতে প্রস্তুত।

কেন তারা ইসরায়েলের সাথে আলোচনা করতে রাজি হয়েছিলেন তার কারণ ব্যাখ্যা করে হানিয়াহ বলেন, আমরা আলোচনায় রাজি হয়েছিলাম, কিন্তু এই শর্তে যে- ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর হামলা বন্ধ করা হবে। আমাদের শর্ত হচ্ছে- এই আলোচনার ফলে অবশ্যই একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সম্পূর্ণভাবে সৈন্য প্রত্যাহার এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রত্যাবর্তন এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি হতে হবে।

মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে দাখিল করা কয়েক ডজন প্রস্তাব নিয়ে এ পর্যন্ত সমস্ত আলোচনা সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়নি বলে অভিযোগ করে হানিয়াহ বলেন: ইসরায়েল যা চায় তা হলো- বন্দিদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং তারপর গাজায় যুদ্ধ পুনরায় শুরু করা। এটা সম্ভব নয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে গাজা থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে। ইসরায়েলও চায় না বাস্তুচ্যুত মানুষ উত্তর গাজায় ফিরে আসুক। তারা (ইসরায়েল) কেবল সীমিত পরিসরে এবং ধীরে ধীরে মানুষকে ফিরে আসতে দিতে চায়। এটা অগ্রহণযোগ্য।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল বন্দি বিনিময়ের জন্য অল্প সংখ্যক লোকের প্রস্তাব দিচ্ছে। যদিও গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিম তীর এবং গাজা থেকে প্রায় ১৪ হাজার ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েল। হানিয়াহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র (ইসরায়েলের ওপর) কোনো চাপ প্রয়োগ করে না এবং ওয়াশিংটন এ বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতেও বাধা দিচ্ছে। অবশ্য ইসরায়েল এই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রস্তুত থাকব।

গাজা ফিলিস্তিনিদের মাধ্যমেই শাসিত হবে ঘোষণা করে হানিয়াহ বলেছেন: হামাস গাজা শাসনের একমাত্র কর্তৃত্বের ওপর জোর দিচ্ছে না, তবে আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের অংশ এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি জাতীয় ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি এবং গাজার প্রশাসনের বিষয়ে সম্মত হতে পারি।

হানিয়াহ বলেন, গাজা প্রশাসনের বিষয়ে কিছু বিকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে, কিন্তু এসব বিকল্পে সফলতা সম্ভব নয়। তিনি বলেন,গাজা ফিলিস্তিনিদের মাধ্যমে শাসিত। এগুলো জাতীয় সমস্যা। আমরা ফিলিস্তিনের গাজা, পশ্চিম তীরে বা উভয় এলাকাকে দখলদার বা অন্য কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে দেব না। তিনি বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুই-পর্যায়ের আহ্বান জানিয়েছি। প্রথম পর্যায়ে- সমস্ত ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) এর পুনর্গঠন রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে- একটি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করা যারা গাজার পুনর্গঠন এবং পশ্চিম তীর ও গাজার প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক ছাদের নিচে একীভূত করবে এবং প্রেসিডেন্ট, আইনসভা এবং জাতীয় কাউন্সিল নির্বাচনের আয়োজন নিশ্চিত করবে।


প্রজন্মনিউজ২৪/আরা 
 

এ সম্পর্কিত খবর

জবিতে গুচ্ছের ‘বি’ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

নোবিপ্রবিতে গুচ্ছ বি ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, উপস্থিতির হার ৮৯.৩৯ শতাংশ

ভূমধ্যসাগরে মারা যাওয়া আট বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর

চাঁদের উদ্দেশে পাকিস্তানের প্রথম স্যাটেলাইট যাত্রা

মিয়ানমারের পুরুষদের বিদেশে কাজ করতে বাধা দিচ্ছে জান্তা সরকার

বশেমুরবিপ্রবি’তে ‘বি’ ইউনিটের গুছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন

বিশ্ব গনমাধ্যম সূচকে দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ

গুচ্ছের বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় হাবিপ্রবি কেন্দ্রে বহিষ্কার ১

ফরিদপুরে স্কুল শিক্ষার্থী অপহরন মামলায় একজন গ্রেফতার

ভর্তি পরিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে হাবিপ্রবিসাস'র ফ্রি শরবত বিতরণ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ