রাশিয়ার নাগরিক উত্তর কোরিয়া ভ্রমণে গিয়ে যা দেখলেন

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০৪:০৭:৩৪ || পরিবর্তিত: ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০৪:০৭:৩৪

রাশিয়ার নাগরিক উত্তর কোরিয়া ভ্রমণে গিয়ে যা দেখলেন

কোভিড-১৯ মহামারির পর চলতি মাসে প্রথমবারের মাতো উত্তর কোরিয়া ভ্রমণের অনুমতি পেয়েছিলেন কয়েকজন রাশিয়ার নাগরিক। ভ্রমণের পর তাদের দেখা বিভিন্ন বিষয় এবং তাদেরকে দেয়া নিষেধাজ্ঞার কথা বলেছেন সংবাদ মাধ্যমে।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারিতে বিদেশি পর্যটকদের বিধি-নিষেধ দিয়েছিল সেই ২০২০ সালে। তারপর বিধি-নিষেধ উঠে গেলেও এই প্রথম কোনো বিদেশি পর্যটক দল উত্তর কোরিয়া ভ্রমণ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত ঘেষা রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ থেকে মোট ১০০ জনের একটি পর্যটক দল দেশটিতে ভ্রমণের অনুমতি পায়। চার দিনের ভ্রমণের লক্ষ্যে পর্যটকেরা ৯ ফেব্রুয়ারি উত্তর কোরিয়ায় যাত্রা করেন, আর ভ্রমণ শেষে ১৩ তারিখে দেশে পৌঁছান।

উত্তর কোরিয়ায় পর্যটন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। সাধারণত যেকোন ভ্রমণকারীকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। যার ফলে, এই ভ্রমণ নিয়ে পর্যটকদের মনেও ছিল বেশ উৎকণ্ঠা। লেনা বাইচকোভা নামের এক পর্যটক ভিসা হাতে নেওয়ার পর বলেন, ‘সত্যিই বিশ্বাস করতে পারছি না।’

বাইচকোভা এবং গ্রুপের বাকি সদস্যরা ভ্লাদিভোস্টক থেকে উত্তর কোরিয়ার মালিকানাধীন কোরিও বিমানে যাত্রা করে ৯ ফেব্রুয়ারি পিয়ংইয়ং পৌঁছান। বাইচকোভা বলেন, তিনি এই ভ্রমণ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ভ্রমণটি সুন্দরভাবে শেষ করতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া ভ্রমণ নিয়ে বেশ ঝুঁকি থাকলেও এমন একটি দেশ দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে পারিনি। এমন দেশ যেখানে খুব কম সংখ্যক পর্যটক ভ্রমণ করার সুযোগ পান।’

পর্যটক দলের মধ্যে ভ্রমণ ব্লগার ইলিয়া ভোসক্রেসেনস্কিও একই রকম উত্তেজনা অনুভব করেছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আপনি যখন উত্তর কোরিয়ার দিকে লক্ষ্য করবেন তখন আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ঠাকুরমা এবং দাদা ঠিক কিভাবে বসবাস করছেন।’

ভ্রমণে যা যা দেখলেন:
ভোসক্রেসেনস্কি বলেন, উত্তর কোরিয়ার শহরগুলো যেন এক একটি অতীতের টেলিপোর্ট। শহরে একেবারেই কোনো বিজ্ঞাপন নেই। প্রদর্শনের একমাত্র জিনিস হলো, দলীয় স্লোগান, পতাকা ইত্যাদি।

চার দিনের এই ভ্রমণে প্রত্যেক দর্শনার্থীর খরচ প্রায় ৭৫০ ডলার। তাদের সাথে সবসময়ের জন্য একজন রাশিয়ান-ভাষী গাইড এবং অনুবাদক ছিলেন। আর ভ্রমণসচিতে ছিল, মানসু হিলে প্রয়াত নেতা কিম ইল সুং এবং কিম জং ইলের ব্রোঞ্জের মূর্তি, ম্যাংগিয়ংডে চিলড্রেনস প্যালেস, যেখানে বাচ্চারা একটি সঙ্গীত এবং নৃত্য পরিবেশন করে। এছাড়াও মাসিকরিয়ং স্কি রিসোর্ট ছিল উল্লেখযোগ্য।

পর্যটকদের জন্য যে নিয়ম দেওয়া ছিল:
রাশিয়ান এই পর্যটকদের অনুসরণ করার জন্য দেওয়া হয়েছিল কঠোর নিয়ম। বিশেষত, ছবি এবং ভিডিও তোলার ক্ষেত্রে দেওয়া হয় অতিরিক্ত নিয়ম।

বাইচকোভা বলেন, আমাদেরকে সামরিক বাহিনী বা সাধারণ ইউনিফর্মে লোকদের ছবি না তুলতে বলা হয়েছিল। নির্মাণ সাইট বা নির্মাণাধীন ভবনগুলোর ছবি না তুলতে বলা হয়েছিল।

তিনি বলেন, কীভাবে ছবি তোলা যায় এবং সাধারণত নেতাদের প্রতিকৃতি বা ভাস্কর্যের সাথে আচরণ করার নিয়ম কেমন হবে সম্পর্কেও অবগত করেন। যদি আপনার কাছে নেতার ছবিসহ একটি সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিন থাকে, তবে আপনি সংবাদপত্রটি ভাঁজ করতে পারবেন না যাতে প্রতিকৃতিটি কুঁচকে যায়।

বাইচকোভা বলেন, কেনার মতো অনেক কিছু ছিল, বিষয়টি এমন না। আমাদের দেখা মাত্র দুটি দোকান ছিল, একটি বিমানবন্দরে এবং একটি রাজধানীতে। রাজধানীর দোকান থেকে তিনি এবং অন্যান্য পর্যটকরা চুম্বক, পুতুল, লেগো সেট এবং অন্যান্য ছোট উপহার নেন।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ