বহিরাগতদের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষই!

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০২:৫৩:০৮

বহিরাগতদের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষই!

সিলেট এমসি কলেজের কর্তৃপক্ষ ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ করে দিত বহিরাগতসহ কলেজ শিক্ষার্থীদের। তা আবার সরকারের নির্দেশনা অমান্য করেই। করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। সরকারের নির্দেশনা থাকার পরেও এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে প্রভাব খাটিয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে থাকত ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীরা। সবকিছু জানার পরেই মুখ বন্ধ করে থাকতে হত কলেজ কর্তৃপক্ষের। বহিরাগত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রাবাসে বসবাস করে আসছিলেন। বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের জানা থাকলেও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সালেহ উদ্দিন বলেন, করোনা পরিস্থিতি সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর পরই কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেয়া হয় নোটিশ দিয়ে। তবে অনেক শিক্ষার্থীরা রয়েছেন কলেজে পড়াশুনার পাশাপাশি চাকরি ও টিউশনি করেন। সেইসব শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে থাকার জন্য হোস্টেল সুপারের মাধ্যমে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছিল। তখন আমি হোস্টেল সুপারকে বলেছি যারা বৈধ তাদের কয়েকজনকে ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। তবে ছাত্রবাসে থাকলেও তারা ছাত্রাবাসের ডাইনিং ও গ্যাস ব্যবহার করতে পারবেনা। সেজন্য ছাত্রাবাসের ডাইনিং বন্ধ রাখার পাশাপাশি গ্যাস সংযোগও বন্ধ করে দেয়া হয়।

তিনি বলেন, ছাত্রাবাসের ৬টি ব্লক ও পূর্ব দিকে একটি ৪তলা ভবন রয়েছে। সেখানে প্রায় ৩শত শিক্ষার্থী থাকত। কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ হওয়ার পর মানবিক দিক বিবেচনা করে ছাত্রাবাসে প্রায় ২০-৩০জনকে থাকাতে মৌখিকভাবে বলা হয়। বহিরাগত কেউ থাকছে কিনা বা কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্দেশনা মানছে কিনা সে বিষয় দেখতেন হোস্টেল সুপার। শুক্রবার ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষ তল্লাশি করে বন্ধ করা হয়।

ছাত্রাবাসের কক্ষে অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যদি কারও গাফিলতির সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কলেজের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে আমাদের কলেজের কয়েজন শিক্ষক নানা বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করে দেখছেন।

এমসি কলেজের হোস্টেল সুপার জামাল উদ্দিন জানান, করোনার সময়ে হোস্টেল বন্ধ থাকলেও কিছু শিক্ষার্থীরা টিউশনি ও চাকরি করার কারণে ছাত্রাবাসে থাকছেন। যারা এখন হল ছাড়বে না তাদের বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ছাত্রাবাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সাথে কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছাত্রাবাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। শুক্রবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছাত্রাবাসের সাইফুর রহমানের রুম থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও ছোরা উদ্ধার করা হয়।  

জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রাইভেট কারযোগে স্বামীকে সাথে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির এক গৃহবধূ (১৯)। ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী মিলে স্বামীসহ ওই গৃহবধূকে তুলে নেন পার্শ্ববর্তী কলেজ ছাত্রাবাসে। এসময় তারা প্রাইভেট কারও জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করার পাশাপাশি ওই তরুণীকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে।

প্রজন্মনিউজ/মেহেদী

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত



ব্রেকিং নিউজ