জন্ডিসের প্রকোপে আতঙ্কিত রাবি ক্যাম্পাস, আক্রান্ত ৬৮ শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী, ২০২৪ ১০:৫৯:১৩

জন্ডিসের প্রকোপে আতঙ্কিত রাবি ক্যাম্পাস, আক্রান্ত ৬৮ শিক্ষার্থী

রাবি প্রতিনিধি: গত ৭ জানুয়ারি শরীরে জ্বর নিয়ে বাসা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও  সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আল জাবের আহমেদ। পরদিন থেকে ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে তার শরীর। এ অবস্থায় পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটলে ১৩ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেকে) ভর্তি হন তিনি। বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানায় হেপাটাইটিস 'এ' অর্থাৎ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন৷

এভাবে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রেদোয়ান-উল হক নাসিফ। শুধু তারাই নন এভাবে হেপাটাইটিস 'এ' অর্থাৎ জন্ডিসে আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। গত একসপ্তাহে পরিসংখ্যানে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৮ শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছেন এই রোগে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ পুরো ক্যাম্পাসে সাবমারসিবল পাম্পের সংখ্যা খুবই কম। এদিকে টিউবওয়েল ও মোটরের পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় এ রোগের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান মেডিকেল সেন্টারারের চিকিৎসকেরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল এবং একাডেমিক ভবনগুলোতে যেন বিশুদ্ধ পানির ব্যাবস্থা করা হয়।

রাবির মেডিকেল সেন্টারের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৪৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা করালে হেপাটাইটিস এ অর্থাৎ জন্ডিস ধরা পরেছে ৬০ জন শিক্ষার্থীর।

এর মধ্যে- ১৫ তারিখ ১১ জন পরীক্ষা করালে জন্ডিস আক্রান্ত হয় সাত জন, ১৬ তারিখে ১৩ জনের মধ্যে পাঁচ জন, ১৭ তারিখ আটজনের মধ্যে ছয় জন, ১৮ তারিখ ২১ জনের মধ্যে ১২ জন, ২১ তারিখ ১৬ জনের মধ্যে ১০ জন, ২২ তারিখ ১৭ জনের মধ্যে আটজন, ২৩ তারিখ ১৫ জনের মধ্যে ৫ জন, ২৪ তারিখ ১৮ জনের মধ্যে আটজন এবং ২৫ তারিখ ২৭ জনের মধ্যে ৭ জন শিক্ষার্থীই জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান শেখ বলেন, 'শীতকালে ঠান্ডা কারণে মানুষ চলাচল কম করে যার ফলে রক্ত চলাচলও কম করে। হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের কারণেই জন্ডিস হচ্ছে। এটি মূলত একটি পানিবাহিত রোগ। এ রোগ থেকে নিরাময় পেতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের সচেতনতা। যেসব শিক্ষার্থী হলে থাকে তারা সাবমারসিবলের পানি খেতে হবে। ক্যাম্পাসে হোটেল ও ক্যান্টিন মালিকদের উচিত বিশুদ্ধ  টিউবওয়েল বা সাবমারসিবলের পানি দিয়ে রান্নার কাজ করা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা। যাদের লক্ষণ খারাপ মনে হয়, তারা দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে এসে ট্রিটমেন্ট নেওয়ার জন্য আহবান জানান তিনি'।

এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, যেদিন থেকে জন্ডিসের আক্রান্ত রোগী ধরা পড়েছে তারপর থেকেই আমরা মেডিকেল সেন্টারে বলে দিয়েছি এটা যেন সচেতন ভাবে দেখা হয়। এছাড়াও আমরা গণমাধ্যমের সাহায্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জানাতে চেষ্টা করেছি তারা যেন যেখান- সেখানকার পানি পান না করে। টিউবয়েল বা সাবমার্সিবল এর বিশুদ্ধ পানি পান করেন।


প্রজন্মনিউজ২৪/এইচআরসি

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ