প্রকাশিত: ১৫ মে, ২০১৯ ১১:৫০:৪৪
বগুড়ায় ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে লুকোচুরি শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ। নির্ধারিত সময় অনেক আগে পার হলেও এখনও শুরু হয়নি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান। এজন্য জেলার কোথাও কোনো তালিকাও তৈরি করা হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২৫ এপ্রিল থেকে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা শুরু করা যায়নি। জেলার ১২ উপজেলাতে একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এদিকে সরকার নির্ধারিত ধানের দরকে স্বাগত জানালেও খুশি নন জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা। তারা বলছেন, এখনও খাদ্য বিভাগ কৃষকদের তালিকা তৈরি করেনি। শেষ সময়ে এসে কৃষকদের বাদ দিয়ে যদি ফড়িয়াদের কাছে থেকে ধান কেনা হয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা।
ধান উৎপাদনে উদ্বৃত্ত অঞ্চল বগুড়ার শেরপুর, ধুনট ও নন্দীগ্রাম উপজেলা। এখানে ধানের দাম খুবই কম। সরকারিভাবেও ধান সংগ্রহে চলছে টালবাহানা। এ অবস্থায় বোরো চাষিরা লোকসানের ভয়ে শঙ্কিত।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল ইসলাম জানান, বুধবার থেকে জেলার সর্বত্র একযোগে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। যদিও কোনো এলাকাতেই তালিকা তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, জেলায় এবার ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৮৬ মেট্রিক টন। চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৮ হাজার ৩৫৪ মেট্রিক টন।
ধুনট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার সরকারিভাবে ৫০২ মেট্রিক টন এবং শেরপুর উপজেলায় ৬৩৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করার কথা। কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মণ ধান এক হাজার ৪০ টাকায় কেনা হবে। কিন্তু এখনও উপজেলার খাদ্য বিভাগ ও মিল-চাতালের মালিকরা ধান কেনা শুরু করেননি। এ অবস্থায় হাট-বাজারগুলোতে পানির দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। অথচ ২৫ এপ্রিল থেকে ধান ক্রয় শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তা চলার কথা।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার খাদুলী গ্রামের ধান ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ গ্রামে ঘুরে ঘুরে ধান কিনছিলেন। তিনি বলেন, এবার ধানের দাম একেবারেই কম। বিভিন্ন গ্রামের ধনীরা এখন কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে নিচ্ছেন। পরে তারা সরকারি ক্রয়কেন্দ্রে বেশি দামে বিক্রি করবেন। তিনিও ফড়িয়া হিসেবে ধান কিনছেন।
পাঁচথুপি গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, গুদামে ধান দিতে পারলে কৃষকদের লাভ হতো। কিন্তু গুদাম ধান নেয়া শুরু করেনি। ফলে ধানের দাম দিনদিন পড়ে যাচ্ছে। একই গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিন বলেন, সাংসারিক চাহিদা মেটাতে তিন মণ ধান হাটে এনেছিলেন। প্রতি মণ ধান ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হন।
ধুনট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার কুন্ডু বলেন, সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর প্রস্তুতি চলছে। আগামী সপ্তাহেই ধান কেনা শুরু হবে।
শেরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, মাঠপর্যায়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ ক্ষেতের ধান কেটেছেন কৃষকরা। এখন ক্রয় অভিযান শুরু করলে কাঙ্ক্ষিত ধান পাওয়া যাবে না। তাই একটু বিলম্বে শুরুর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা খাদ্য অধিদফতর কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ৬০১ মেট্রিক টন ধান এবং চুক্তিবদ্ধ ২৮ জন মিলারের কাছ থেকে ৩৬ টাকা দরে দুই হাজার ৯৮১ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করবে। চাল ক্রয় অভিযান আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, সরকারিভাবে বোরো মৌসুমের ধান সরকারি গুদামে সরবরাহের জন্য তারা মজুদ করে রেখেছেন। তবে ধান কেনা কবে শুরু হবে তা না জানায় কম দামে বাজারে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ সুযোগ নিচ্ছেন ফড়িয়া-দালালরা। কম দামে ধান কিনতে তারা গ্রাম চষে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে কোনো উপায় না পেয়ে অসহায় কৃষকরা বাধ্য হয়ে তাদের কাছে ধান বিক্রি করছেন।
উপজেলার কাথম গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে ধান ক্রয় হবে বলে শুনেছি। কিন্তু কবে থেকে ক্রয় হবে তা আমাদের জানা নেই। বাধ্য হয়ে ফড়িয়াদের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।
উপজেলা খাদ্য অফিস থেকেও ধান-চাল ক্রয় সংক্রান্ত কোনো তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে না। চুক্তিবদ্ধ মিলারদের তালিকা চাইলে উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মমতাজ বেগম বলেন, ধান-চাল ক্রয় সংক্রান্ত কোনো তথ্য দিতে পারব না। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তথ্য দিতে নিষেধ করেছেন। আপনি তার কাছে ফোন দিয়ে তথ্য নেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুশফিকুর রহমানকে অফিসে না পেয়ে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, কৃষকরা ধান নিয়ে গুদামে আসছে না, তাই কেনা হচ্ছে না। মিলারদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৩৬ টাকা দরে দুই হাজার ৯৮১ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা হবে। তবে কবে নাগাদ কেনা হবে এ বিষয়ে তিনি সঠিক কিছু বলতে পারেননি।
উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন বলেন, চুক্তি অনুযায়ী মিলারদের চাল নেয়ার জন্য সরকারি গুদাম প্রস্তুত রয়েছে। বগুড়া সদরে চাল ক্রয়ের উদ্বোধনের পর আমাদের এখানে উদ্বোধন হবে।
মুস্তাফিজকে কেন পুরো আইপিএল খেলতে দিচ্ছে না বাংলাদেশ
ছাত্রলীগ নেতার পর একই নারীর সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের ভিডিও ভাইরাল
৩টি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান, নিরাপদে আছে ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, এলাকাবাসীর পিটুনিতে নিহত ২
ঈদের আমেজ কাটেনি বাজারে, ফাঁকা ঢাকাতেও দাপট গরু-খাসির
খালেদা জিয়া ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিল : শেখ হাসিনা
গাজা: বিমান হামলায় বেঁচে যাওয়া বালকের প্রাণ গেল সাহায্য নিতে গিয়ে